নয়াদিল্লি: বিশ্বকাপ ফাইনালের শেষ ওভারটা এখনও চোখে ভাসে ভারতীয় ক্রিকেট প্রেমীদের। ক্রিজে পাকিস্তান ক্যাপ্টেন মিসবা উল হক। তিনি দারুণ ফর্মে রয়েছেন। ৪৩ রান করে ক্রিজে। শেষ ওভারে কে বল করবেন? অবাক করে দিয়ে ভারতীয় টিমের ক্যাপ্টেন মহেন্দ্র সিং ধোনি বল তুলে দিয়েছিলেন এক তরুণের হাতে। ক্যাপ্টেনের সিদ্ধান্ত যে ভুল ছিল না, তা প্রমাণ করে দিয়েছিলেন ওই বোলার। মিসবাকে ফিরিয়ে প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ (T20 World Cup) জেতান দেশকে। সেই বোলারের নাম কী ছিল জানেন? যোগিন্দর শর্মা (Joginder Sharma)। হঠাৎ উঠে আসার মতো হঠাৎ হারিয়েও গিয়েছিলেন তিনি। ভারতীয় ক্রিকেট আর মনে রাখেনি তাঁকে। সেই যোগিন্দর অবসর নিয়ে নিলেন। ৪০ বছরের কোঠায় দাঁড়িয়ে থাকা ক্রিকেটার অবসর নেবেন, এটাই তো স্বাভাবিক। কিন্তু এই যোগিন্দর অন্য কারণে চর্চায় ঢুকে পড়েছেন। তা কী? তুলে ধরল TV9Bangla।
২০০৭ সালের ওই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে অবশ্য ওয়ান ডে ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল হরিয়ানার ছেলের। কিন্তু জাতীয় টিমে ঢুকেছিলেন যত দ্রুত, বেরিয়েও যেতে হয় তত দ্রুত। ২০০৭ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও ব্যতিক্রম ছিল না। তবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ফাইনালে দুরন্ত পারফর্ম করেছিলেন তিনি। বল হাতে ২টো উইকেট নিয়েছিলেন। সে বার ধোনির টিমে যোগিন্দরের মতো রোহিত শর্মাও ছিলেন নতুন মুখ। রোহিত ওই বিশ্বকাপ থেকেই ধীরে ধীরে সাফল্যের শিখরে উঠতে শুরু করেছিলেন। আর যোগিন্দর, শেষ ওভারে ভারতকে বিশ্বকাপ জেতানোর পরও আর টিমে সুযোগ পাননি। সেই তিনিই সরে গেলেন নীরবে। টুইট করে জানিয়েছেন, ২০০২ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত যতটুকু ক্রিকেট খেলেছেন, চুটিয়ে উপভোগ করেছেন।
Announced retirement from cricket Thanks to each and everyone for your love and support 🙏❤️👍👍 pic.twitter.com/A2G9JJd515
— Joginder Sharma 🇮🇳 (@MJoginderSharma) February 3, 2023
প্রথম সারির তারকা ক্রিকেটাররা প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে যাননি। সচিন তেন্ডুলকরদের বিশ্রাম দেওয়া হয়। ধোনি নতুন টিম নিয়ে গিয়েছিলেন। নেতা হিসেবেও তখন সে ভাবে উত্থান হয়নি মাহির। দক্ষিণ আফ্রিকার ওই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকেই ক্যাপ্টেন কুলের আলোচনায় ঢুকে পড়া। শেষ ওভারে যোগিন্দরের মতো তরুণকে কেন বোলিং করতে পাঠিয়েছিলেন, তা নিয়ে আজও প্রশ্ন করা হয় ধোনিকে। কিন্তু এই প্রশ্ন ওঠে না, যিনি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপ জেতালেন বল হাতে, তাঁকে কেন আর ভারতীয় টিমে দেখা গেল না। যোগিন্দর কি অবিচারের শিকার হয়েছিলেন?
এই যোগিন্দর এখন হরিয়ানা পুলিশের ডিএসপি। সরকারি দায়িত্ব সামলানো, নিয়মকানুনের রক্ষা করাই আপাতত তাঁর জীবনের ব্রত। ক্রিকেটকে তিনিও পাশে সরিয়ে রাখতে চাইছেন। যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও সে ভাবে দেশের হয়ে ক্রিকেট খেলার সুযোগ না পাওয়া যোগিন্দরের হাতেই এ বার থাকবে হরিয়ানার আইনশৃঙ্খলার ভার।