
গাইতে গাইতে গায়েন, বাজাতে বাজাতে বায়েন… এটি মূলত “Practice makes perfect” এর সঙ্গে সম্পর্কিত। অন্যভাবে যদি বলা হয়, এই প্রবাদটি বোঝায় যে কোনও কাজ বা শিল্পে পারদর্শী হতে হলে, ক্রমাগত অনুশীলনের মাধ্যমে উন্নতি অর্জন করতে হয়। এত কথার কারণ কী! নেপথ্যে ২৬ বছরের এক তরুণ বোলার। নাম তাঁর যশ ঠাকুর (Yash Thakur)। কলকাতার সঙ্গে রয়েছে বিশেষ যোগ। কারণ, যশের জন্ম তিলোত্তমায়। তারাতলায় থাকতেন। যশের বাবা সেনাবাহিনীতে কাজ করতেন। তাই জায়গা বদলে অভ্যস্থ হতে হয়েছিল যশকে। পরবর্তীতে কলকাতা থেকে বিদর্ভে যান। সেখানেই রাজ্য ক্রিকেটে খেলেন। ডান হাতি এই বোলার গত ২ বছর ধরে নজর কাড়ছেন ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে। যদিও আইপিএলে তাঁর ঠাঁই হয়নি কেকেআরে। ক্রিকেটকে কেরিয়ার বানানোর কথা শুরুতে ভাবেননি যশ। গানের দুনিয়ায় পা রাখতে চেয়েছিলেন। পরবর্তীতে তাঁকে টেনে নেয় ২২ গজ।
এক সময় হতে চেয়েছিলেন গায়ক। সঙ্গীতের দুনিয়ায় ব্যর্থতাই জোটে কলকাতার ছেলের কপালে। কিন্তু ক্রিকেট তাঁকে খালি হাতে ফেরায়নি। যশ ঠাকুর ঘরোয়া ক্রিকেটে বিদর্ভের হয়ে খেলেন। ২০১৭ সালে লিস্ট-এ-তে বিদর্ভের হয়ে প্রথম ম্যাচ খেলেছিলেন যশ। পরের বছর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক। এখনও অবধি যশ ২৬টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ ও ৪৫টি লিস্ট-এ ম্যাচ খেলেছেন। আর আইপিএলে তাঁর অভিষেক লখনউ সুপার জায়ান্টসের জার্সিতে। ২০২৩-২০২৪ এই দুটো মরসুম লখনউ শিবিরে কাটিয়েছেন যশ। খেলেছেন মোট ১৯টা ম্যাচ। তাতে নিয়েছিলেন ২৪টি উইকেট।
গত বছরের শেষে জেড্ডায় হওয়া আইপিএলের মেগা নিলামে ১.৬ কোটি টাকায় কেনে প্রীতির পঞ্জাব। এখনও অবধি ১৮তম আইপিএলে পঞ্জাব কিংসের জার্সিতে একটি ম্যাচেই খেলার সুযোগ পেয়েছেন যশ। আর সেখানেই ‘দুষ্প্রাপ্য’ উইকেট। কারণ দুই কিংসের ব্যাটেলে লাস্ট ওভারে যে কোনও দিকে ম্যাচ যেতে পারত। সেখানে শেষ ওভারের প্রথম বলেই ধোনির উইকেট তুলে নেন যশ। আর তাতেই ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে যায়। গত আইপিএলে একাধিক ম্যাচে ধোনির নামের পাশে নট আউট লেখা বেশিরভাগ সময় জ্বলজ্বল করছিল। আর এ বার পঞ্জাব-চেন্নাই ম্যাচে যশ ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে নেমে কিংবদন্তি ধোনির উইকেট যেভাবে তুলে নিয়েছেন, তা নিয়ে দীর্ঘদিন আলোচনা চলবে। তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এ বার একটাই জিনিস দেখার, যশ কি এ মরসুমে পঞ্জাব জার্সিতে ইমপ্যাক্টফুল হতে পারবেন?