হঠাৎ পরিকল্পনা বদল, সেটাই ‘টার্নিং’ পয়েন্ট হয়ে দাঁড়াল। এর আগেও ভারতের মাটিতে স্মরণীয় অনেক টেস্ট খেলেছে নিউজিল্যান্ড। ২০২১ সালে এজাজ প্যাটেলের পারফেক্ট টেন-এর ম্যাচের কথাই ধরা যাক। এমন অনেক অনেক ম্যাচ। কিন্তু সিরিজ জয়? ভারতের মাটিতে কোনও দিন হয়নি। এ বার সেটাই হল। নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটে ইতিহাস, রোহিত শর্মার নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের ঐতিহাসিক লজ্জা! এর চেয়ে আর কী বলা যায়। সব বিভাগেই ভারতকে টেক্কা দিয়েছে কিউয়িরা। টার্নিং পিচে পয়েন্ট খোয়াল ভারত। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের রাস্তা কঠিন হল। পুনেতে পার্থক্য হয়ে দাঁড়াল সেই ‘১০৩’।
বেঙ্গালুরু টেস্টে ৮ উইকেট, পুনেতে ১১৩ রান। ব্যবধান অনেক। বেঙ্গালুরু টেস্টে হারের পরই ভারতের একাদশে তিন বদল হয়। একটি বদল প্রত্যাশিতই ছিল। শুভমন গিল চোটের কারণে বেঙ্গালুরু টেস্টে খেলতে পারেননি। শুভমনের জন্য জায়গা ছাড়েন লোকেশ রাহুল। ওয়াশিংটন সুন্দরকে একাদশে আনা হয় কুলদীপের পরিবর্তে। সিরাজের জায়গায় আকাশ দীপ। দ্বিতীয় ম্যাচে দু-দলের ফারাক গড়ে দিল প্রথম ইনিংস লিড।
পুনেতে প্রথমে ব্যাট করে নিউজিল্যান্ড। ওয়াশিংটন সুন্দরের সাত ও অশ্বিনের তিন উইকেটে কিউয়িদের ২৫৯ রানেই অলআউট করে ভারত। এরপর ম্যাচ ভারতের হাতেই ছিল। কিন্তু অতিরিক্তি তাড়াহুড়ো, শট সিলেকশন, সব মিলিয়ে অস্বস্তির পরিস্থিতি তৈরি হয়। প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৫৬ রানেই অলআউট ভারত! যা অবাক করার মতোই। যে পিচে নিউজিল্যান্ড ব্যাট করেছে, একই পিচে ভারতও। এত ফারাক যে ভুল শট বাছাইয়েরই কুফল, এর বাইরে আর কী বলা যায়!
ভারতীয় দল যতক্ষণে মরিয়া চেষ্টা করেছে, অনেকটাই দেরী। প্রথম ইনিংসে কোনও টিম ১০৩ রানের লিড দেওয়ার পর ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন। নিউজিল্যান্ডকে দ্বিতীয় ইনিংসে ২৫৫ রানেই অলআউট করে ভারত। এরপর মিরাকল প্রয়োজন ছিল। সেটাই যেন করতে যাচ্ছিল ভারতীয় দল। বিরাট কোহলির উইকেটের পর সেই পরিকল্পনায় ধাক্কা খায়। শেষ দিকে জাডেজা-অশ্বিন জুটি নিউজিল্যান্ডের অপেক্ষা বাড়ায়।
এখান থেকে ম্যাচ জিততে হেডিংলে টেস্টের ‘বেন স্টোকস’ হয়ে উঠতে হত রবীন্দ্র জাডেজাকে। কিন্তু এই ম্যাচে অবিশ্বাস্য পারফর্ম করা মিচেল স্যান্টনার তা হতে দেননি। ২৪৫ রানে রবীন্দ্র জাডেজার উইকেটেই শেষ ভারতের ইনিংস। ২৯ ওভারের স্পেল মিচেল স্যান্টনারের। ম্যাচে ১৩ উইকেট! ক্যাপ্টেন টম ল্যাথামের জন্য গর্বের মুহূর্ত। নিউজিল্যান্ডের কিংবদন্তিরা যা পারেননি, তাঁর নেতৃত্বে করে দেখিয়েছে দল।