
অভিষেক সেনগুপ্ত
কলকাতা: এই কয়েক দিন আগেও ইংল্যান্ড সফর নিয়ে ভাবনা চিন্তা করছিলেন। ইংল্যান্ড সফরের আগে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার জন্য নাকি ভারতীয় এ দলের হয়েও আগাম সফরে যেতে পারেন। যাতে পরিবেশ পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে অসুবিধা না হয়। সে সব কিছুই হল না। উল্টে ইংল্যান্ড সফরের কয়েক সপ্তাহ আগে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে নিলেন রোহিত শর্মা। চাপের কাছে নতি স্বীকার করলেন কিনা, তা নিয়েও থেকে যাচ্ছে প্রশ্ন। তা না হলে অস্ট্রেলিয়া সফরের পরেই অবসর নেননি কেন? এই প্রশ্নও তুলছে ভারতীয় ক্রিকেট মহল।
ঘটনা হল, গত মঙ্গলবার মুম্বইয়ে আলোচনায় বসেছিলেন অজিত আগরকরের নির্বাচক মণ্ডলী। সেখানেই রোহিতের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা হয়। নির্বাচকরা মোটামুটি এক মত হয়েছিলেন, রোহিতের দিকে না তাকিয়ে নতুন বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য এক নতুন নেতাকে তৈরি করা উচিত। নির্বাচকরা নিজেদের ভাবনা বোর্ডকে জানিয়ে দিয়েছিল। বোর্ডও নির্বাচক মণ্ডলীর এই সিদ্ধান্তকে সিলমোহর দিয়ে দেয়। তারপরই বুধবার বিকেলে অবসর ঘোষণা করে দিলেন রোহিত।
নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে ভরাডুবি হয়েছিল ভারতের। তখন থেকেই রোহিতের ক্যাপ্টেন্সি নিয়ে কথা উঠতে শুরু করে দেয়। অস্ট্রেলিয়া সফরেও টিম চূড়ান্ত ব্যর্থ। প্রথম টেস্টে ব্যক্তিগত কারণে খেলেননি রোহিত। পরের তিনটে টেস্টে খেলতেও ব্যাটে সাফল্য পাননি। রোহিতের লাল বলে ধারাবাহিক ব্যর্থতা নিয়েও প্রশ্ন তুলে দিয়েছিলেন প্রাক্তন ও বিশেষজ্ঞরা। ফর্মের কারণেই সফরের সিডনিতে শেষ টেস্ট খেলেননি। সে দিক থেকে দেখলে মেলবোর্নে বক্সিং ডে টেস্টই কেরিয়ারের শেষ ম্যাচ হয়ে থাকল রোহিতের।
এমনিতে রোহিতের টেস্ট কেরিয়ার খুব একটা ঝলমলে নয়। ৬৭টা টেস্ট খেলে ১২টা সেঞ্চুরি করেছেন। আসলে টি-টোয়েন্টি এবং ওয়ান ডে ফর্ম্যাটে যতটা সফল রোহিত, টেস্টে ততটা নন। বরং ক্যাপ্টেন হওয়ার পর নিয়মিত টেস্ট খেলেছে। রোহিত আগেই টি-টোয়েন্টি থেকে নিয়েছেন অবসর। এ বার টেস্ট থেকেও সরে দাঁড়ালেন। অবশ্য ওয়ান ডে-তে খেলা চালিয়ে যাবেন। কিন্তু তাতেও তাঁকে পারফর্ম করতে হবে। ৩৮ বছরের রোহিতের ফিটনেস নিয়ে বরাবর প্রশ্ন উঠেছে। ওয়ান ডে ফর্ম্যাটেও কতটা সফল হবেন, সেই প্রশ্ন থাকছে। ২৭ সালে রয়েছে ওয়ান ডে বিশ্বকাপ। অর্থাৎ আরও ২ বছর পর রোহিতের বয়স হবে ৪০। ওই বিশ্বকাপে তাঁকে খেলতে দেখা যাবে কিনা, সে প্রশ্ন থাকছে।
নিজের বিবৃতিতে রোহিত বলেছেন, ‘টেস্ট ক্রিকেট থেকে আমি অবসর নিচ্ছি। সাদা পোশাকে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করা সম্মানের ব্যাপার। বছরের পর বছর ধরে পাশে থাকা এবং সমর্থন করার জন্য ধন্যবাদ। আমি দেশের হয়ে ওয়ান ডে ফর্ম্যাটে খেলা চালিয়ে যাব।’