ARG vs FRA FIFA WC FINAL Match Preview: মরুদেশে কার হাতে ‘ক্যাকটাস’, কার ট্রফির ‘ফুল’!
ARGENTINA vs FRANCE FIFA world Cup FINAL 2022: কাতারে দুই 'এম' এর গোলসংখ্য়া পাঁচটি। গ্র্য়ান্ড ফিনালেতে দ্বৈরথ, শিল্প, শিল্পীদের দেখা যাবে। কার হাতে ক্য়াকটাস, কার হাতেই বা সোনালি ফুল, অপেক্ষায় ফুটবলপ্রেমীরা। কিন্তু দিনের শেষে একটাই ধ্রুব সত্য়, পরিসংখ্য়ান কিংবা কাগজ কলমে নয়। হার-জিত নিশ্চিত হবে মাঠের পারফরম্য়ান্সে।
লুসেইল : যেখানে শুরু, ঠিক সেখানেই ফেরা। কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার পরিস্থিতি তাই। এই লুসেইল স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করেছিল আর্জেন্টিনা। প্রত্যাশার পারদ চড়ছিল টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই। একটাই নাম, লিওনেল মেসি। ফুটবল সম্রাট, ফুটবলের রাজপুত্র, এমন বিশেষণ যোগ হয়েছে পেলে, মারাদোনার সঙ্গে। মেসির জন্য ঠিক কী যোগ হবে! সর্বকালের ‘অন্যতম’ সেরা হয়েই কি থেকে যেতে হবে? প্রত্যাশার পারদ নামতে খুব বেশি সময় লাগেনি কাতারে। মরুদেশে যেমন হয়। দিনে প্রচণ্ড গরম, রাতে একই রকম ঠান্ডা পরিবেশ! লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছিল। টানা ৩৬ ম্যাচ অপরাজিত থেকে বিশ্বকাপের মঞ্চে প্রবেশ আর্জেন্টিনার। আর তারপরই…। কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে মুখোমুখি আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্স। ম্যাচ প্রিভিউ TV9Bangla-য়।
লা মাসিয়া, বার্সেলোনা এখন পিএসজি। লিও মেসির ক্ষেত্রে বছর দুয়েক আগেও একটা মন্তব্য় যেন ধ্রুব সত্যের মতো ব্যবহার হত। ক্লাবের জার্সিতে সেরা, দেশের জার্সিতে নয়। টানা দু-বার কোপা আমেরিকা হেরে কান্নায় ভেঙে পড়া এবং অবসর নেওয়া যেন সেই মন্তব্য়ে সিলমোহর বসিয়েছিল। চ্য়াম্পিয়নরা ঘুরে দাঁড়াতে জানেন। তাঁদের ঘুরে দাঁড়াতে হয়। নিজের জন্যই শুধু নয়, অগণিত ভক্তের কথা ভেবে। অবসর ভেঙে মেসি শুধু মাঠেই ফেরেননি, প্রথম আন্তর্জাতিক ট্রফিও জিতেছেন। ২০২১ কোপা আমেরিকা কাপ জয়, তাও আবার ব্রাজিলকে হারিয়ে! বিশ্বকাপের স্বপ্ন যেন তখন থেকেই দানা বাঁধছিল আরও বেশি করে। কিন্তু কাতারে প্রথম ম্যাচেই সৌদি আরবের কাছে হার! সমস্ত আশায় জল ঢেলেছিল। একটা করে ধাপ পেরিয়ে, প্রত্যাশার চাপ বাড়িয়ে আর্জেন্টিনা ফাইনাল অবধি পৌঁছেছে। এ বার তৃতীয় বারের জন্য ট্রফি জেতাই লক্ষ্য।
ভুললে চলবে না, ফাইনালে আর্জেন্টিনার সামনে গত বারের চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স। পল পোগবা, এনগোলে কান্তেরা বিশ্বকাপ স্কোয়াড ঘোষণার অনেক আগেই ছিঁটকে গিয়েছিলেন। দলের সঙ্গে কাতারে এসেও ম্যাচ না খেলেই ফিরতে হয় ব্যালন ডি’অর জয়ী করিম বেঞ্জেমা, পিএসজির ডিফেন্ডার প্রিসনেলকে। ফরাসি শিবিরে নিঃসন্দেহে বড় ধাক্কা ছিল। সতর্কবার্তাও। চ্য়াম্পিয়নরা অবশ্য় মাঠে নেমে প্রমাণ করেছেন, বেঞ্জেমা-পোগবা-কান্তেদের ছাড়াও তারা একইরকম শক্তিশালী। পোগবা-কান্তের ভূমিকায় একাই যেন সব দায়িত্ব সামলে নিচ্ছে অরেলিয়েঁ শৌমেনি। সবচেয়ে বড় সারপ্রাইজ হয়তো অলিভিয়ের জিরো। রাশিয়া বিশ্বকাপে তাঁর ভূমিকা বোধগম্য় হয়নি। দলের স্ট্রাইকার। অথচ রাশিয়া বিশ্বকাপে একটিও গোল করেননি, এমনকি গোলমুখী শটও ছিল না। এ বারের দলে জিরো জায়গা পাবেন সেটাই যেন অবাক করার মতো ছিল। বেঞ্জেমা থাকলে হয়তো রিজার্ভবেঞ্চেই জায়গা হত। জিরো এবার গোল করছেন, করাচ্ছেনও। তেমনই ভুললে চলবে না আতোঁয়া গ্রিজম্য়ানের কথা। তাঁর অবদান বোঝা কঠিন। কিন্তু এই ফরাসি দলের চালিকাশক্তি গ্রিজম্য়ানই। আর তারকা! কিলিয়ান এমবাপে।
ক্লাব ফুটবলে লিওনেল মেসি এবং কিলিয়ান এমবাপে সতীর্থ। দেশের হয়ে আজ প্রতিপক্ষ। তরুণ এমবাপের দৌড় থামানো বিরাট চ্য়ালেঞ্জ আর্জেন্টিনার সামনে। ‘এভারগ্রিন’ মেসিকেও কি আটকানো খুব সহজ! একে বারেই নয়। কাতারে দুই ‘এম’ এর গোলসংখ্য়া পাঁচটি। গ্র্য়ান্ড ফিনালেতে দ্বৈরথ, শিল্প, শিল্পীদের দেখা যাবে। কার হাতে ক্য়াকটাস, কার হাতেই বা সোনালি ফুল, অপেক্ষায় ফুটবলপ্রেমীরা। কিন্তু দিনের শেষে একটাই ধ্রুব সত্য়, পরিসংখ্য়ান কিংবা কাগজ কলমে নয়। হার-জিত নিশ্চিত হবে মাঠের পারফরম্য়ান্সে।