Bhaichung Bhutia: সৌরভই অনুপ্রেরণা বাইচুংয়ের, ‘ফুটবলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব’
AIFF: গোলকিপার বনাম স্ট্রাইকারের লড়াই হিসেবে দেখছে ভারতীয় ফুটবল। বাইচুং অবশ্য বরাবরের মতোই মাঠে নামার আগে, শেষ বাঁশি বাজার আগে ম্যাচ হারতে নারাজ। তবে ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট পদে কেন দাঁড়ালেন বাইচুং, তা নিয়ে নিজের মনোভাব পরিষ্কার করে দিয়েছেন।

সঙ্ঘমিত্রা চক্রবর্ত্তী
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (Sourav Ganguly) ঠিক যে ভাবে ভারতীয় ক্রিকেটকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সামনে থেকে, ঠিক সেই ভূমিকাতেই নিজেকে দেখতে চান বাইচুং ভুটিয়াও (Bhaichung Bhutia)। বলা যেতে পারে, সৌরভই অনুপ্রেরণা তাঁর। আর তাই ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচনের আগে তাঁর মুখে বন্ধু সৌরভেরই কথা। এক সময়ের সতীর্থ কল্যাণ চৌবের (Kalyan Chaubey) সঙ্গেই লড়াই পাহাড়ি বিছের। এও বলা হচ্ছে, রাজনৈতিক প্রভাবের কারণেই কল্যাণের সর্বভারতীয় ফুবটল ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট হওয়া নাকি প্রায় ‘কনফার্ম’। গোলকিপার বনাম স্ট্রাইকারের লড়াই হিসেবে দেখছে ভারতীয় ফুটবল। বাইচুং অবশ্য বরাবরের মতোই মাঠে নামার আগে, শেষ বাঁশি বাজার আগে ম্যাচ হারতে নারাজ। তবে ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট পদে কেন দাঁড়ালেন বাইচুং, তা নিয়ে নিজের মনোভাব পরিষ্কার করে দিয়েছেন।
শুক্রবার দুপুরে ফেসবুক প্রেস মিটে বাইচুং বলে দিলেন, ‘আজ আমি যে জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি, তা শুধুমাত্র ফুটবলের জন্য। ফুটবলকে আরও বেশি কিছু ফিরিয়ে দিতে চাই। ১৬ বছর ভারতের হয়ে খেলেছি। তার মধ্যে ১২ বছর ক্যাপ্টেন ছিলাম দেশের। আমার মনে হয়, ফেডারেশনের প্রেসিডেন্টের দায়িত্বটা যথাযথ ভাবে সামলাতে পারব। আমাদের উচিত, সঠিক মানুষ সঠিক ম্যানেজমেন্ট বাছা, যাতে ভারতীয় ফুটবলের উন্নতি হয়।’
তিনি প্রেসিডেন্ট হলে যে বিসিসিআইয়ের মডেলকেই ফলো করবেন, তাও পরিষ্কার করে দিলেন ভারতীয় টিমের প্রাক্তন অধিনায়ক। বাইচুং বললেন, ‘সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর, ভারতীয় ক্রিকেটের উন্নতিটা কিন্তু ভীষণ ভাবে দেখতে পাচ্ছি। এই মুহূর্তে ভারতীয় ফুটবল কী পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে রয়েছে, সেটা সকলেই জানে। আমি ফুটবলের আরও উন্নতি করতে পারি। আমার একটা পজিটিভ দিক হল, কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত নই। যে কোনও প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসায়ীর কাছে হাজির হতে পারব।’

প্রেস কনফারেন্সে ভারতীয় কিংবদন্তি ফুটবলার বাইচুং ভুটিয়া
ভারতীয় ফুটবলের উন্নতির জন্য দরকার একটা স্পষ্ট রোডম্যাপ। যদি প্রেসিডেন্ট হন, কেমন ব্লুপ্রিন্ট বানাবেন? তার একটা আভাসও দিয়ে রাখলেন ভারতের সর্বকালের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার। তাঁর কথায়, ‘আমার রাজ্য সিকিমেই যদি দেখি, সেখানে ফুটবল খেলার পর্যাপ্ত মাঠ নেই। সেটা হলে চলবে না। রাজ্য টিম, ক্লাব টিম, তারপর ভারতের হয়ে নতুন প্রজন্ম যাতে খেলতে পারে, সেই ধাপগুলোর দিকে নজর রাখতে হবে। রাজ্য সংস্থাকে ফুটবল লিগ চালু করতে হবে। রাজ্য অ্যাসোসিয়েশনের বড় চ্যালেঞ্জ আর্থিক সঙ্গতি। প্রতি রাজ্যকে একটা অনুদান যাতে দেওয়া যায়, সে দিকে নজর রাখব। প্রতি রাজ্যে ফুটবল সেন্টার গড়তে হবে। সেই সেন্টারগুলোয় গ্রাসরুট ফুটবল টুর্নামেন্ট, ট্রেনিং, ভালো মানের কোচ— সব রাখতে হবে।’ এতেই শেষ নয়, দেশী কোচ তৈরির দিকেও নজর দিতে হবে। বাইচুং বলেন, ‘আমাদের কোচ তৈরির দায়িত্বটাও নিতে হবে। যারা বিভিন্ন রাজ্যে গিয়ে প্রশিক্ষণ দেবে। একটা দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা দরকার। তা না হলে কিন্তু সার্বিক উন্নতি সম্ভব নয়।’
কল্যাণকে ‘বন্ধু’ বললেও নিজেকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে সেরা দাবিদার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চাইছেন বাইচুং। ‘কাল যদি সুনীল অবসর নিলে করে, তখন ও-ও কিন্তু ফেডারেশনের কর্তা হিসেবে উঠে আসতে পারে। এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে ভারতীয় ফুটবলকে। সেই কারণেই প্রাক্তন ফুটবলারদের ভোটাধিকার দরকার। ফেডারেশন রাজনীতি প্রভাব ভালো মতো রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। কিন্তু ফুটবল প্রশাসনে প্লেয়ারদের ঢোকা বন্ধ করে দেওয়াটা মেনে নেওয়া যায় না। প্লেয়ারের হাতে বড় দায়িত্ব তুলে দেওয়া যেতেই পারে। কল্যান আমার ভালো বন্ধু। কেরিয়ারে বেশ কয়েকবার ওর বিরুদ্ধে খেলেছি। তবে আমার মনে হয়, ভারতীয় ফুটবলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজটা আমি ভালো ভাবে করতে পারব।’
