Mohun Bagan: ‘অদৃশ্য শক্তি’র দৈববাণীতে মোহন অপেরার সমাপ্তি? নতুন কমিটিতে রাজ্যের আরও এক মন্ত্রী!
Mohun Bagan club election: অদৃশ্য শক্তির নির্দেশেই সেই মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে আসন সমঝোতা চূড়ান্ত হয়। সূত্রের খবর, রবিবার দুই পক্ষ ফের বৈঠকে বসে কমিটির পদাধিকারীদের নাম স্থির করবে। সেই মতোই সোমবার মনোনয়ন জমা দেওয়া হবে।

কলকাতা: মোহন অপেরার যবনিকা পতন। গত দেড় মাসের নাটক নির্বাচন অবধি গড়ালই না। তার আগেই যেন গঙ্গার জলে মিশে গেল যমুনা আর সরস্বতী। মানে করলে দাঁড়ায় শাসক আর বিরোধী শিবির। এক ‘অদৃশ্য শক্তি’র দৈববাণীতে আসন সমঝোতার রাস্তায় দুই পক্ষ। ময়দানে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, নির্বাচন কমিটির চেয়ারম্যান অসীম রায় হয়তো আগে থেকেই এটা টের পেয়েছিলেন। তাই নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু করলেও নির্বাচনের দিনক্ষণ তিনি স্থির করেননি। ১০-১০-২ ফর্মুলায় মিলে যাচ্ছে দেবাশিস দত্ত আর সৃঞ্জয় বসুর শিবির। ২২ জনের কমিটিতে (প্রেসিডেন্ট, ভাইস প্রেসিডেন্ট ছাড়া) উভয় পক্ষ থেকেই ১০ জন করে প্রতিনিধি থাকবেন কমিটিতে। সূত্রের খবর, শনিবার পার্ক স্ট্রিটের এক অভিজাত ক্লাবে দুই পক্ষকে নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন মধ্যস্থাকারীরা। অদৃশ্য শক্তির নির্দেশেই সেই মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে আসন সমঝোতা চূড়ান্ত হয়। সূত্রের খবর, রবিবার দুই পক্ষ ফের বৈঠকে বসে কমিটির পদাধিকারীদের নাম স্থির করবে। সেই মতোই সোমবার মনোনয়ন জমা দেওয়া হবে।
গত কয়েকদিন ধরেই মোহনবাগান নির্বাচনের উত্তাপ চড়েছিল সপ্তমে। দেবাশিস দত্ত আর সৃঞ্জয় বসু দু’জনেই এর আগে কাঁধে কাঁধ মিলে লড়েছেন। তবে মাঝের কয়েকটি বছরে তাঁদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়। এবারের মোহনবাগান নির্বাচনের পালে হাওয়া লাগান সভাপতি টুটু বসু। সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে বড় ছেলে সৃঞ্জয়ের হয়ে ভোট প্রচারে নামেন। দেবাশিস দত্তকে তোপ দাগতেও ছাড়েননি টুটু বসু। এমনকি সৃঞ্জয় বসুও নিজের প্যানেল নিয়ে ক্ষমতায় ফিরতে নির্বাচনী প্রচারে জোর দেন। এতদিন পর্যন্তও আসন সমঝোতার কথা শোনা যেত না তাঁর গলায়। উল্টো দিকে বর্তমান মোহনবাগান সচিব দেবাশিস দত্তও হাওড়া থেকে উত্তর ২৪ পরগণা হয়ে কলকাতা, বিধাননগরের অলিতে গলিতে চষে বেড়িয়েছেন নির্বাচনী প্রচারে। ‘তোমাকে চাই’ আর ‘সাফল্যের সাথে উন্নতির পথে’ দুই ক্যাম্পেনেই সদস্যদের উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। ৬৮১৮ সদস্যদের নিয়ে মোহনবাগান নির্বাচনের উত্তাপ চড়ছিল বেশ। এমনকি রাজ্যের শাসক দলের নেতা, মন্ত্রী, সাংসদরাও জড়িয়ে পড়েছিলেন এই নির্বাচনী উত্তাপে। ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে বুঝে নেওয়ার শরীরী ভাষা দেখা যাচ্ছিল দুই শিবিরের মধ্যে। আচমকাই ‘অদৃশ্য শক্তি’র দৈববাণীতে এখন ‘মিলে সুর মেরা তুমহারা।’
মোহনবাগানের সাধারণ সদস্যরাও এখন কার্যত অবাক। কয়েকদিন আগেও এই পক্ষ ওই পক্ষতে ভাগাভাগি হয়ে গিয়েছিলেন সবাই। এখন দুই পক্ষের ক্যাপ্টেনের গলায় ‘মোহনবাগান সবার ঊর্ধ্বে’ মন্তব্য নিয়ে মিলে যাওয়ার রীতি দেখে তাজ্জব। কোনও কোনও সদস্য তো প্রশ্ন তুলছেন, ‘এতদিন কি তাহলে মোহনবাগানের ভালোর কথা এই কর্তাদের মাথায় আসেনি?’ নির্বাচনে যারা লড়বেন আর যারা ভোট দেবেন তাঁরা যে মোহনবাগানের ভাল চাইবেন এ বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তাহলে এই লোক দেখানো নির্বাচনী প্রচারের কি দরকার পড়ল? অদৃশ্য শক্তি দুই পক্ষকে মিলিয়ে দিলেও, মন থেকে এই দুই পক্ষ মিলে যাবে তো? একসঙ্গে কাজ করতে করতে মাঝপথে কোনও সমস্যা অন্তরায় হয়ে দেখা দেবে নাতো? এমন অনেক প্রশ্ন ছুঁড়ে দিচ্ছেন সদস্যরা। যদিও মোহনবাগানের ফুটবল সংক্রান্ত সমস্ত বিষয় এই নির্বাচনের সঙ্গে জড়িয়ে নেই। তাই ফুটবল টিম পরিচালনায় প্রথম দিন থেকেই সমস্যা হওয়ার কথা ছিল না।
এদিকে সূত্রের খবর, মোহনবাগানের নতুন কমিটি গঠনের পর ক্লাবের সংবিধানে বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হতে পারে। শোনা যাচ্ছে, সভাপতির দায়িত্ব অনেকটা বাড়ছে। সূত্রের খবর, মোহনবাগানের নতুন কমিটিতে সহ সভাপতি হিসেবে আসতে পারেন রাজ্যের আরও এক মন্ত্রী। শোনা যাচ্ছে, হরিপালের বিধায়ক বেচারাম মান্না মোহনবাগানের নতুন সহ সভাপতি হতে পারেন।
