FIFA World Cup 2022: বয়ফ্রেন্ড ‘আনলাকি’, ঝুঁকি না নিয়ে ‘পুরনো স্বামীর’ সঙ্গে মেসির ফাইনাল দেখবেন এই মহিলা!
শুধু আর্জেন্টিনার জন্য, শুধু মেসির জন্য জীবনের বড় সিদ্ধান্ত নিতে চলেছেন ক্রিস্টিনা ওবেরসলের এবং লুক্রেসিয়া আরালদি। তাঁদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে অনেকদিন হল, কিন্তু রবিবার সন্ধেয় এক সঙ্গে বসে আর্জেন্টিনার খেলা দেখবেন তাঁরা।
বুয়েনস আইরেস: মেসি জ্বরে কাঁপছে আর্জেন্টিনা (Argentina)। মেসি (Lionel Messi) জ্বরে কাঁপছে গোটা বিশ্ব। এই জ্বরের পারদ কতটা, তা বুঝতে হলে ফুটন্ত ভাতের একটি চাল টিপলেই বোঝা যাবে। যেমন ধরুন, পঞ্চান্ন বছর বয়সী জুলিও ট্রেটোর কথা। ফ্লোরসের বাসিন্দা। আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস আইরেসের একটি ছোট্ট জেলা। তিনি ঠিক করেছেন, নীল-সাদা মেসির ১০ নম্বর জার্সিটি উল্টো করে পরে থাকবেন সারাক্ষণ। এটাই জুলিওর ধনুক ভাঙা পণ, যতক্ষণ না তাঁর দেশ জিতছে। এই উল্টো করে জার্সি পরার কারণও জানালেন তিনি। জুলিও বলছেন, ‘সৌদি আরবের সঙ্গে ম্যাচে এই জার্সি যখন পরি, ম্যাচটা গোহারা হারলাম। তারপরই, মেক্সিকোর সঙ্গে ম্যাচে উল্টো করে পরি। জয় পেয়েই সিদ্ধান্ত নিলাম, এ বার থেকে সব ম্যাচে জার্সি উল্টো করেই পরব। আর ফাইনালে (Qatar World Cup Final) তো কথাই নেই।’
এমন কুসংস্কার তো নতুন নয়। খেলার মাঠে এমন অহরহ বিচিত্র কুসংস্কার লক্ষ্য করা যায়। সে খেলোয়াড় হোক বা ক্রীড়াপ্রেমী, কুসংস্কার তাঁদের সাহস জোগায়, আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনে। এই ধরুন, ‘ফুটবলের ঈশ্বর’ দিয়াগো মারাদোনার কথা। আর্জেন্টিনা দলের ম্যানেজমেন্টে প্রবেশ করেই সবুজ রং নিষিদ্ধ করে দিয়েছিলেন তিনি। দলের অন্দরে সবুজ রঙের কোনও কিছু থাকবে না। তিনি মনে করতেন, সবুজ রং আর্জেন্টিনার জন্য অশুভ। শুধু মারাদোনা নয়, অন্যান্য তারকারাও অদ্ভুত সব কুসংস্কারে বিশ্বাস করেন। ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো যেমন মাঠে ঢোকার সময় লাইনে সবার শেষে দাঁড়ান। ওয়েলশের গ্যারেথ বেল মোজায় ফুটো করে রাখেন। জার্মানির ম্যারিও গোমেস চেষ্টা করতে বাথরুমের বাঁ দিকে ইউরিনাল ব্যবহার করতে। আর লিওনেল মেসি যখনই ফ্রি-কিক নেন বলটিকে দু’হাতে পরম যত্নে মাটিতে রাখেন। যখন তারকারা এমন সব অদ্ভুত কুসংস্কারে যাপন করেন, ভক্তরাই বাদ যাবেন কেন?
আরও এক মেসিপ্রেমী বছর আটান্নর গ্র্যাসিলা ক্যাস্ট্রো বলছেন, “আজ খেলা চলাকালীন বাথরুম যাব না। আর অনবরত ফরাসি ফুটবলারদের গালমন্দ করব।” আর্জেন্টেনিয়ান ছাত্র আলমা মাউরিও বলতে দ্বিধা করছেন না, ‘বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার দ্বিতীয় ম্যাচ থেকে এই জার্সি ধুইনি। আজও এই জার্সি পরেই খেলা দেখব।’
১৯৭৮ বিশ্বকাপ বিজেতা আর্জেন্টেনিয়ান ফুটবলার ড্যানিয়েল ভ্যালেন্সিয়া তাঁর এক অদ্ভুত কুংস্কারের কথা জানিয়েছেন। তিনি বলছেন, “ফিফার প্রশাসনিক বোর্ড কাতারে ফাইনাল দেখার আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। দেশের জন্য আমি প্রত্যাখ্যান করেছি। এই সিদ্ধান্তের জন্য অত্যন্ত বিরক্ত হয়েছে আমার ছেলে। তাকে বলেছি, তুমি যখন বাবা হবে, বুঝবে কেন আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।”
আর এক রোম্যান্টিক কুসংস্কারের কথা জানা গিয়েছে আজকের এই ম্যাচ ঘিরে। শুধু আর্জেন্টিনার জন্য, শুধু মেসির জন্য জীবনের বড় সিদ্ধান্ত নিতে চলেছেন ক্রিস্টিনা ওবেরসলের এবং লুক্রেসিয়া আরালদি। তাঁদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে অনেকদিন হল, কিন্তু রবিবার সন্ধেয় এক সঙ্গে বসে আর্জেন্টিনার খেলা দেখবেন তাঁরা। তার কারণটাও আরও মজার। আর্জেন্টিনার প্রথম ম্যাচটি আরালদি দেখিছিলেন বর্তমান বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে। কিন্তু সৌদি আরবের সঙ্গে ১-০-এ হেরে গিয়েছিল মেসির টিম। আর ঝুঁকি নেননি। তারপরের ম্যাচগুলি পুরনো স্বামী ও সন্তানদের সঙ্গে আর্জেন্টিনার খেলা দেখেন। তারপর আর্জেন্টিনাকে রোখে কে? তাই, রবিবারও ‘লাকি স্বামীর’ সঙ্গেই খেলা দেখতে তোড়জোড় করে ফেলেছেন আরালদি। তাঁরা সবাই দেখতে চান, আজ বিশ্বকাপ আসুক ‘লিওনেল দিয়াগো মেসির’ হাতে!