Iran Woman: দাড়ি-গোঁফ লাগিয়ে দেখতেন ফুটবল ম্যাচ, পরের ঘটনায় ভীত ইরানের মহিলা ফুটবল সমর্থক
Football Supporter: সব ছবি নিজের ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডল থেকে শেয়ার করেছিলেন তিনি। তার পরই যে রাষ্ট্রীয় অত্যাচারের শিকার তাঁকে হতে হয়েছে, সে কথা ব্রিটেনের এক সংবাদমাধ্য়মকে জানিয়েছেন তিনি।

তেহরান: মহিলাদের ফুটবল থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে চায় ইরান। ইতিমধ্যেই সে দেশে নিষিদ্ধ হয়েছে মহিলাদের ফুটবল। শুধু খেলা হয়, স্টেডিয়ামে গিয়ে মেয়েদের খেলা দেখাতেও বিস্তর আপত্তি রয়েছে ইরানের ইসলামপন্থী সরকারের। কিন্তু ইরানের বাসিন্দা জাহরা খোশনাভাজ ফুটবলের ভক্ত। উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচ দেখতে স্টেডিয়ামে ছুটে গিয়েছিলেন তিনি। যাতে চেনা না যায়, সে জন্য নকল দাড়ি-গোঁফ লাগিয়ে স্টেডিয়ামে খেলা দেখেছেন। তাঁর সঙ্গে অন্য মহিলা দর্শকরাও একই পন্থা অবলম্বন করেছিলেন। সেই সব ছবি নিজের ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডল থেকে শেয়ার করেছিলেন তিনি। তার পরই যে রাষ্ট্রীয় অত্যাচারের শিকার তাঁকে হতে হয়েছে, সে কথা ব্রিটেনের এক সংবাদমাধ্য়মকে জানিয়েছেন তিনি। কী ঘটেছে জাহরার সঙ্গে, তুলে ধরল TV9 Bangla।
কাতার বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে ইরান খেলবে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে। ৩১ বছরের ওই জাহরার মনে ভয় ঢুকিয়ে দিয়েছে ইরানের প্রশাসন। ঘরে বন্দি থেকেই হয়তো ওই ম্যাচে চোখ রাখবেন তিনি। মেয়ে হয়ে স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে যাওয়ার দুঃসাহস ‘ঘুচিয়ে’ দিয়েছে ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড। এ নিয়ে তিনি বলেছেন, “আমি বড় খেলা দেখতে বেশি উপভোগ করি। সেই সব ম্যাচের গুরুত্ব থাকে অনেক বেশি। কিন্তু অন্য মহিলাদের সঙ্গে আমাকে ইনস্টাগ্রাম ছবিতে দেখে ডেকে পাঠিয়েছিল পুলিশ। আমাকে বলা হয়েছিল, জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। আমি গিয়েছিলাম। খেলা দেখতে গিয়ে আমরা তো কোনও অপরাধ করিনি। কিন্তু প্রশাসন আমাদের সঙ্গে যা ব্যবহার করছিল, মনে হয়েছিল আমরা বোধহয় খুন করেছি।”
পুলিশের সঙ্গে দীর্ঘ কথাবার্তার পর জাহরাদের জেলে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। জরিমানাও করা হয়েছিল। এর পর তেহরানের দক্ষিণে কারচক জেল তিন মাস ছিলেন জাহরা। এই সব কথা টেলিফোনে বলার সময় বোঝা যাচ্ছিল কতটা ভীত হয়ে পড়েছেন জাহরা। ইরানে জেলের মধ্যে মহিলাদের সঙ্গে কী ধরনের ব্যবহার করা হয়, তা নিয়েও যথেষ্ট ক্ষোভ রয়েছে মানবাধিকার মহলে।
গত মাসেই হিজাব না পরার কারণে মাসা আমিনি নামের ২২ বছরের এক যুবতীকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশি হেফাজতে মৃত্য়ু হয় মাশার। ওই মহিলার উপর অত্যাচার করা হয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখছে মানবাধিকার কমিশন। এই ঘটনা সামনে আসার পর থেকেই দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়েছে ইরান। মহিলা থেকে সাধারণ নাগরিকরাও রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। সেই বিক্ষোভ দমনে গুলিও চালায় পুলিশ। যার জেরে বেশ কয়েক জনের মৃত্যু হয়েছে। ইরানের উত্তাল পরিস্থিতি এবং মহিলা বিদ্বেষ মনোভাবই এখন জাহরাদের কোণঠাসা করে ফেলেছে।
