Tokyo Paralympics : প্যারালিম্পিকে সোনার স্বপ্নে আচ্ছন্ন হিসারের একতা

২০১৮ সালে প্যারা এশিয়ান গেমসে সোনা জিতেছিলেন। টিউনেশিয়া গ্রাঁ প্রি-তে ওই বছরই ক্লাব থ্রোতে জিতেছিলেন সোনা। ডিসকাস থ্রো থেকে এসেছিল ব্রোঞ্জ। জাতীয় প্যারা চ্যাম্পিয়নশিপে আবার দুটো ইভেন্ট থেকেই সোনা। পদকের নিরিখে ভাবলে, টোকিওতে সফল হওয়ার দারুণ সম্ভাবনা রয়েছে। একতা নিজেও সোনার স্বপ্নই দেখছেন।

Tokyo Paralympics : প্যারালিম্পিকে সোনার স্বপ্নে আচ্ছন্ন হিসারের একতা
একতা ভান
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 18, 2021 | 8:51 AM

কলকাতা: দুর্ঘটনায় মেরুদণ্ড ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল মারাত্মক। তারপর আর হাঁটতে পারেননি তিনি। শরীরের নীচের অংশে পক্ষাঘাত হয়। চিরকালীন সঙ্গী হয়ে হুইল চেয়ার। উপরের অংশও খুব একটা সাবলীল ছিল না। ২০০৩ সালের ওই গাড়ি দুর্ঘটনাই জীবনের অন্ধকারময় সময় যেমন, আলোতেও ফেরা। নিজেকে শারীরিক ভাবে সক্ষম রাখতে মাঠে যাওয়া শুরু করেন ২০১৪ সাল থেকে। কে জানত, সেখান থেকেই একদিন স্বপ্ন দেখানো শুরু করবেন। যে সে স্বপ্ন নয়, একেবারে অলিম্পিক পদকের! একতা ভান এখন দেশের অন্যতম পরিচিত প্যারা অ্যাথলিট।

হিসারের মেয়ে ২০১৬ সাল থেকেই আন্তর্জাতিক আঙিনায় একের পর এক সাফল্য পেয়ে আসছেন। ক্লাব বা ডিসকাস থ্রোতে এই মুহূর্তে বিশ্বের পাঁচ নম্বর প্লেয়ার। টোকিও প্যারালিম্পিকের ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড থেকে পদক আনার একতার দিকেই তাকিয়ে আছে দেশ। কী ভাবে একতার উঠে আসা? ২০১৪ সাল নাগাদ খেলার প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন একতা। কিন্তু কোন খেলাকে বেছে নেবেন, জানতেন না। প্যারা গেমসে তখন টুকটাক অংশ নিতে শুরু করেছিলেন। তখনই অমিত সোরাহার ফোন পান একতা। তিনিও একতার মতোই কোয়াড্রিপ্লেজিক অ্যাথলিট। অর্থাত্‍ যাঁর শরীরের চারটে হাত-পা কার্যত বিকল। একতা বলেছেন, ‘অমিত স্যারই আমাকে বলেছিলেন, একবার চেষ্টা করো দেখো। হয়তো সফল হতে পারো। স্যারের কথাগুলো ছুঁয়ে গিয়েছিল। ওঁর কাছেই কোচিং নেওয়া শুরু করি। ২০১‍৬ সালে বার্লিনে পদক পাওয়ার পর আর পিছনে তাকাতে হয়নি।’

২০১৮ সালে প্যারা এশিয়ান গেমসে সোনা জিতেছিলেন। টিউনেশিয়া গ্রাঁ প্রি-তে ওই বছরই ক্লাব থ্রোতে জিতেছিলেন সোনা। ডিসকাস থ্রো থেকে এসেছিল ব্রোঞ্জ। জাতীয় প্যারা চ্যাম্পিয়নশিপে আবার দুটো ইভেন্ট থেকেই সোনা। পদকের নিরিখে ভাবলে, টোকিওতে সফল হওয়ার দারুণ সম্ভাবনা রয়েছে। একতা নিজেও সোনার স্বপ্নই দেখছেন। গত দেড় বছরে কিন্তু সবচেয়ে কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে গিয়েছেন একতা। করোনার কারণে কোনও টুর্নামেন্টে অংশ নিতে পারেননি। এমনকি, নিয়মিত জিমও করার সুযোগ ছিল না।

কোয়াড্রিপ্লেজিক হওয়ার কারণে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা বেশি মাত্রায় ছিল। একতা বলছেন, ‘নিজের বাড়িতেই জিম বসিয়েছিলাম। যাতে নিজেকে ফিট রাখতে পারি। শারীরিক ও মানসিক, দুই ভাবেই। নিজের থ্রো ইভেন্টগুলো প্র্যাক্টিস করার জন্য মাঠে যেতে না পারলেও টোকিও প্যারালিম্পিক হবে কিনা, সে দিকে নজর রেখেছিলাম।

যখন বুঝতে পেরেছিলাম হবে, সব রকম ভাবে চেষ্টা করেছি, নিজেকে ফিট রাখার।’ লকডাউনে শুধু শারীরিক ভাবেই নয়, মানসিক ভাবেও নিজেকে ফিট রাখার চেষ্টা করেছেন একতা। আর তা করতে গিয়ে কবিতা লেখা শুরু করেছেন। ছবিও আঁকেন। এই একতা নিজে সফল হওয়ার পাশাপাশি স্বপ্ন দেখেন সমাজও পাল্টাবে তাঁদের হাত ধরে। প্রতিবন্ধী হিসেবে নয়, আগে তাঁদের দেখা হোক মানুষ হিসেবে। এই দাবি আরও একবার তুলবেন টোকিও প্যারালিম্পিকের মঞ্চে।