Khushboo Khan: ঝুপড়ি ঘরে কষ্টের বাস; হকি গোলকিপারের দুরাবস্থার খবরে গলল মন ব্যক্তির, কিনলেন ফ্ল্যাট
২০২২ সালে সংবাদপত্রে ছাপা এক খবরে চোখ আটকে গিয়েছিল মুম্বইয়ের বাসিন্দা প্রবীণ শিবা গুলওয়াড়ির। দেশের হয়ে খেলা হকি টিমের গোলকিপারের দুরাবস্থা চোখে জল এনে দিয়েছিল তাঁর।
ভোপাল: বারো মাস ঝড়, জল মাথায় নিয়ে বাস। বর্ষাকালে ঝুপড়ির ছাদ থেকে অনবরত পড়ে জল। ঝড় উঠলেই কাঁপত বুক। এই বোধহয় উড়ে গেল ছাদ। শীতের সময় তো কথাই নেই। ভাঙা ঘরে ঠান্ডা আটকানোর জন্য পথ খুঁজে পাওয়া যায় না। এভাবেই বড় হয়েছেন মেয়েদের জুনিয়র হকি দলের গোলকিপার খুশবু খান। জাতীয় দলের নীল জার্সি গায়ে চড়লেও সেভাবে বাড়ির হাল ফেরাতে পারেননি খুশবু (khushboo khan)। সরকারি সাহায্যের প্রতিশ্রুতি মিললেও, পাননি ঘর। জুনিয়র হকি টিমের গোলকিপারের বাড়ির দুরাবস্থার খবর ছাপা হয়েছিল টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে। ২০২২ সালে সংবাদপত্রে ছাপা সেই খবরে চোখ আটকে গিয়েছিল মুম্বইয়ের বাসিন্দা প্রবীণ শিবা গুলওয়াড়ির। দেশের হয়ে খেলা হকি টিমের (Hockey India) গোলকিপারের এই দুরাবস্থা চোখে জল এনে দিয়েছিল তাঁর। তাতেই বদলে গেল খুশবুর ঠিকানা। আগামী মাসেই দিলদরিয়া শিবা খুশবুর হাতে ৩৬ লাখ টাকার ফ্ল্যাটের চাবি তুলে দেবেন! বিস্তারিত TV9 Bangla-র এই প্রতিবেদনে।
২০ বছরের খুশবু গত ছয়বছর ধরে জুনিয়র হকি দলের সদস্য। সাফল্য, খ্যাতি মিললেও আর্থিক দিক থেকে স্বচ্ছলতা আসেনি। ভোপালের বাসিন্দা খুশবু প্রতিশ্রুতি পেয়েও স্থানীয় প্রশাসনের সাহায্য পাননি। ২০২২ সালের ২২ মে সংবাদপত্রে খুশবুর পরিবারের কাহিনি পড়ে থমকে গিয়েছিলেন শিবা গুলওয়াড়ি ও তাঁর মতো অনেকেই। সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছিলেন অনেকেই। তাঁদের মধ্যে মুম্বইয়ের প্রবীণ শিবা গুলওয়াড়ি ৩৬ লাখ টাকার ৩ বেডরুমের একটি আস্ত ফ্ল্যাট কিনে ফেলেছেন। ওই সহৃদয় ব্যক্তি বলেছেন, “খুশবু জির কাহিনি পড়ে বুঝলাম, বিভিন্ন দেশে গিয়ে ভারতীয় হকি দলের প্রতিনিধিত্ব করলেও তাঁর পরিবার খুব কষ্টে রয়েছে। ঈশ্বরের আশীর্বাদে আগামী মাসেই ফ্ল্যাট পেয়ে যাবেন ওঁরা।” জাতীয় শিবিরের জন্য বেঙ্গালুরুতে রয়েছেন খুশবু। আপ্লুত হকি দলের গোলকিপার বলেছেন, “আমি ও আমার পরিবার শিবা স্যারের প্রতি চিরকাল কৃতজ্ঞ থাকব।” তিনি আরও বলেন, “গত কয়েকবছর ধরে সরকারি আধিকারিকরা পাকা ঘর দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও তার বাস্তবায়ন হয়নি। আমাকে যে বিকল্প দেওয়া হয়েছিল তা বাসযোগ্য ছিল না।”
২০১৭ সালের পর জুনিয়র হকি দলের হয়ে বেলজিয়াম, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, চিলি, দক্ষিণ আফ্রিকা, বেলারুশ এবং আয়ারল্যান্ড সফরে গিয়েছেন খুশবু। ২০২১ সালে জুনিয়র হকি বিশ্বকাপে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এত কিছুতেও পরিবারের কষ্ট লাঘব হয়নি। খুশবুরা চার ভাই বোন। বাবা সাব্বির খান অটো চালান। খুশবু এ বার সিনিয়র দলের হয়ে খেলতে চান। সাব্বির বলেছেন, “মেয়েকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পারফর্ম করতে দেখে বিস্মিত হয়ে যাই। ও বিমানে যাতায়াত করে, পাঁচ তারা হোটেলে থাকে। কিন্তু বাড়ি এলেই সেই ঝুপড়িতে থাকতে হয়। সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েও কথা রাখেনি। অবশেষে শিবা স্যারের সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন।”