Republic Day 2022: প্রযুক্তি দুনিয়ার ‘রাশ’ এই ১৬ ভারতীয়ের হাতে! সুন্দর পিচাই-সত্য নাদেলা বাদে বাকিদের চেনেন?

Indian Origin Tech CEOs: গুগল থেকে শুরু করে মাইক্রোসফট-এর মতো বড় টেক জায়ান্টেও এখন ভারতীয় বংশদ্ভূত সিইও। শুধু গুগল বা মাইক্রোসফট কেন, আইবিএম থেকে শুরু করে অ্যাডোব - টেক কোম্পানিগুলির শীর্ষ পদে আসীন ভারতীয়দের সংখ্যাটা বিরাট।

Republic Day 2022: প্রযুক্তি দুনিয়ার 'রাশ' এই ১৬ ভারতীয়ের হাতে! সুন্দর পিচাই-সত্য নাদেলা বাদে বাকিদের চেনেন?
প্রযুক্তি দুনিয়ার রাশ যাঁদের হাতে!
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 26, 2022 | 2:25 PM

প্রযুক্তির দিক থেকে ভারতের শনৈ শনৈ শ্রীবৃদ্ধি হয়ে চলেছে ঠিকই, তবে প্রযুক্তি দুনিয়ার রাশটা চলে গিয়েছে ভারতীয়দের হাতে। এ কথা বুঝতে রকেট সায়েন্স পড়ার দরকার হয় না। সিলিকন ভ্যালি এখন ভারতীয়দের আয়ত্তে। বলা ভাল, ভারতীয় পড়ুয়ারাই সিলিকন ভ্যালির (Silicon Valley) ডজনখানেকেরও সংস্থার মালিক। গুগল থেকে শুরু করে মাইক্রোসফট-এর মতো বড় টেক জায়ান্টেও এখন ভারতীয় বংশদ্ভূত সিইও। শুধু গুগল বা মাইক্রোসফট কেন, আইবিএম থেকে শুরু করে অ্যাডোব – টেক কোম্পানিগুলির (Global Tech Companies) শীর্ষ পদে আসীন ভারতীয়দের সংখ্যাটা বিরাট। এমনকি গত বছরের শেষ দিকে জ্যাক ডরসে ট্যুইটারের সিইও থেকে সরে দাঁড়ানোর পরে তাঁর জুতোয় পা গলান আর এক ভারতীয় – পরাগ আগরওয়াল। পরিসংখ্যান বলছে, বিশ্বের ১৬টি নামজাদা প্রযুক্তি সংস্থার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বা সিইও হলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত (Indian Origin)। ৭৩তম প্রজাতন্ত্র দিবসে জেনে নেওয়া যাক, সেই তালিকায় কারা কারা রয়েছেন, তাঁদের নিয়ে বেশ কিছু তথ্য।

১) সুন্দর পিচাই

হায়দরাবাদের এই পড়ুয়া এখন গুগল-এর পেরেন্ট অর্গানাইজেশন অ্যালফাবেট আইএনসি-র সিইও। ২০১৯ সালে এই দায়িত্ব তাঁর কাঁধে বর্তায়। ২০১৪ সালে তিনি গুগলের প্রধান হয়েছিলেন। আইআইটি খড়গপুরের প্রাক্তন ছাত্র সুন্দর পিচাই পরবর্তীতে এমএস করেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড থেকে। সে দেশেই ওয়ার্টন থেকে তিনি এমবিএ করেছিলেন।

২) সত্য নাদেলা

হায়দরাবাদে জন্ম সত্য নাদেলার। বাবা ছিলেন আইএএস অফিসার এবং মা সংস্কৃতের অধ্যাপক। ২০১৪ সালে মাইক্রোসফট-এর সিইও হন নাদেলা। গত বছরই তাঁকে আবার সংস্থার চেয়ারম্যানও করা হয়। কর্ণাটকের মণিপাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ডিগ্রি নেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে এমএস করেন ১৯৯০ সালে। ১৯৯২ সালে মাইক্রোসফটে নিযুক্ত হন। পরে ১৯৯৬ সালে এমবিএ করেন নাদেলা।

৩) শান্তনু নারায়ণ

অ্যাডোবি ইনকর্পোরেশনের সিইও, চেয়ারম্যান এবং প্রেসিডেন্ট হলেন শান্তনু নারায়ণ। তিনিও হায়দরাবাদ থেকেই আমেরিকায় পাড়ি দিয়েছিলেন উচ্চশিক্ষার জন্য। অ্যাডোবিতে যোগ দিয়েছিলেন ১৯৯৮ সালে, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে। ২০০৫ সালে সিওও হন এবং ২০০৭ সালে তাঁকে সিইও করা হয়। হায়দরাবাদ থেকে বিজ্ঞানের স্নাতক করা শান্তনু এমবিএ করেছিলেন ক্যালিফর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। তার পরে এমএস করেন বউলিং গ্রিন স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে।

৪) অরবিন্দ কৃষ্ণা

২০২০ সালে আইবিএম-এর সিইও হন অরবিন্দ কৃষ্ণা। অন্ধ্রপ্রেদেশে তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন। আইআইটি কানপুর থেকে স্নাতক পাশ করার পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দেন পিএইচডি করতে। ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেন। তারপরে ১৯৯০ সালে আইবিএমে চাকুরিজীবন শুরু করেন। দীর্ঘ তিন দশকের চাকরি জীবনে আইবিএমে একাধিক সিনিয়র পদে কাজ করেছেন অরবিন্দ কৃষ্ণা।

৫) রেভাতি অদ্বৈতী

ফ্লেক্স লিমিটেড, যা আসলে বিশ্বের তৃতীয় বৃহৎ চুক্তিভিত্তিক ইলেকট্রনিক্স নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান। সেই সংস্থার সিইও রেভাতি। ২০১৯ সালে তাঁকে এই দায়িত্ব সঁপে দেওয়া হয়। বিড়লা ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্স থেকে স্নাতক পাশ করার পরে আমেরিকায় পাড়ি দেন। সেখানে গিয়ে তিনি থান্ডারবার্ড স্কুল অফ গ্লোবাল ম্যানেজমেন্ট থেকে এমবিএ পাশ করেন।

৬) নিকেশ অরোরা

পালো আলতো নেটওয়ার্কস, একটি মার্কিন সাইবার সিকিওরিটি সংস্থা। ২০১৮ সালে এই সংস্থার সিইও হিসেবে যোগ দেন নিকেশ অরোরা। গুগল ও সফটব্যাঙ্কের হয়ে দীর্ঘ দিন কাজ করেছেন তিনি। বেনারস হিন্দি ইউনিভার্সিটির ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে স্নাতক পাশ করেন নিকেশ। পরে আমেরিকায় গিয়ে নর্থইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ এবং বোস্টন কলেজ থেকে বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর পাশ করেন।

৭) জয়শ্রী উল্লাল

২০০৮ সাল থেকে আমেরিকান কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং সংস্থা অ্যারিস্টা নেটওয়ার্কসের প্রেসিডেন্ট ও সিইও-র দায়িত্বভার সামলাচ্ছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত জয়শ্রী। তাঁর নেতৃত্বেই ২০১৪ সালে অ্যারিস্টা নেটওয়ার্কস নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকাভুক্ত হয়। সান ফ্রান্সিসকো স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক পাশ করে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন সান্তা ক্লারা ইউনিভার্সিটি থেকে।

৮) পরাগ আগরওয়াল

ট্য়ুইটারের সিইও এখন পরাগ আগরওয়াল। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে জ্যাক ডরসে ট্যুইটারের সিইও পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর পরে সেই জায়গায় আসেন পরাগ। ২০১১ সালে তিনি ট্য়ুইটারের সিটিও পদের দায়িত্ব পান। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি বম্বে থেকে স্নাতক পাশ করেছিলেন পরাগ। ট্যুইটারের আগে মাইক্রোসফট, এটিঅ্যান্ডটি এবং ইয়াহু-র হয়ে কাজ করেছিলেন তিনি। সামলেছেন একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।

৯) অঞ্জলি সুদ

আমেরিকান ভিডিয়ো প্ল্যাটফর্ম ভিমেও-র সিইও অঞ্জলি সুদ। ২০১৭ সালে এই ভিডিয়ো হোস্টিং, শেয়ারিং ও সার্ভিসেস প্ল্যাটফর্মের সিইও-র দায়িত্ব পান ভারতীয় বংশোদ্ভূত অঞ্জলি। ভিমেওতে কাজ করার আগে অ্যামাজন এবং টাইম ওয়ার্নারে দীর্ঘ দিন কাজ করেছিলেন এই মহিলা। হার্ভার্ড বিজনেস স্কুল থেকে এমবিএ পাশ করেছিলেন তিনি।

১০) সঞ্জয় মেহরোত্রা

মার্কিন সেমিকন্ডাক্টর কোম্পানি মাইক্রোন টেকনোলজি ইনকর্পোরেশনের সিইও সঞ্জয়। মেমোরি চিপ প্রস্তুতকারক সংস্থা স্যানডিস্কের সহ-প্রতিষ্ঠাতা তিনি। স্য়ানডিস্ক প্রতিষ্ঠা করার আগে ভারতীয় বংশোদ্ভূত সঞ্জয় ইন্টিগ্রেটেড ডিভাইস টেকনোলজি এবং ইন্টেলে কর্মরত ছিলেন। ওয়াস্টার্ন ডিজিটালের বোর্ড সদস্যও ছিলেন বেশ কিছু বছর। সঞ্জয় মেহরোত্রা স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাশ করেছিলেন ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া বার্কলে থেকে।

১১) জর্জ কুরিয়ান

ভারতীয় বংশোদ্ভূত জর্জ কুরিয়ান ২০১৫ সালে মার্কিন ক্লাউড ডেটা সার্ভিসেস ও ডেটা ব্যবস্থাপনা সংস্থা নেটঅ্যাপের সিইও এবং প্রেসিডেন্ট হন। তার আগে সিসকো সিস্টেমস, আকামাই টেকনোলজিস এবং ম্যাকেঞ্জি অ্যান্ড কোম্পানিতে দীর্ঘদিন কাজ করার অভিজ্ঞতা ছিল কুরিয়ানের। আইআইটি মাদ্রাজে ভর্তি হয়েও সেখানে পড়া হয়নি তাঁরা। প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাশ করেন। তারপরে এমবিএ করেন স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে।

১২) অনিল ভুশ্রি

মার্কিন অন-ডিমান্ড ফিন্যান্সিয়াল ব্যবস্থাপনা এবং হিউম্যান ক্যাপিটাল ব্যবস্থাপনা সফটওয়্যার ওয়ার্কডে-এর সিইও হলেন অনিল ভুশ্রি। ২০০৫ সালে এই সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন পিপলসফটের প্রতিষ্ঠাতা ডেভ ডুফিল্ডকে সঙ্গে নিয়ে। ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করেছিলেন অনিল।

১৩) স্টিভ সাংঘি

১৯৮৯ সালে মাইক্রোচিপ টেকনোলজি কর্পোরেশনের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন স্টিভ সাংঘি। তার ঠিক দুই বছরের মধ্যে ১৯৯১ সালে সংস্থার সিইও হয়ে যান। পঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাশ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দেন। সেখানে ম্যাসাচুসেটস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইলেকট্রিকাল ও কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতকোত্তর পাশ করেন।

১৪) আমান ভুটানি

২০১৯ সালে গোড্যাডি-র সিইও হন আমান ভুটানি। তার আগে তিনি এক্সপেডিয়ায় একাধিক পদে কাজ করেছিলেন। কাজ করেন এসভিপি ওয়ার্ল্ড ওয়াইডেও। স্নাতক পাশ করেছিলেন দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। তার পরে এমবিএ করেছিলেন ল্যাঙ্কাস্টার ইউনিভার্সিটি থেকে।

১৫) অনিরুদ্ধ দেবগণ

২০১৮ সালে সফ্টওয়্যার কোম্পানি ক্যাডেন্স ডিজাইন সিস্টেমের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পান অনিরুদ্ধ। তার আগে ম্যাগমা ডিজাইন অটোমেশন এবং আইবিএমে দীর্ঘদিন কাজ করেছিলেন। আইআইটি দিল্লি থেকে স্নাতক পাশ করেছিলেন। পিএইচডি করেছিলেন আমেরিকার কার্নেগি মেলন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।

১৬) শিবা শিরবাম

কম্পিউটার হার্ডডিস্ক প্রস্তুতকারী সংস্থা ওয়েস্টার্ন ডিজিটালের প্রেসিডেন্টের নাম শিবা শিবরাম। এর আগে তিনি স্যানডিস্ক এবং ইনটেলের মতো সংস্থায় কাজ করেছিলেন। ত্রিচির ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে স্নাতক পাশ করে রেনসেলার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি সম্পন্ন করেন।

তথ্যসূত্র: গ্যাজেটস নাও

আরও পড়ুন: মহাকাশচারীদের জন্য টেকসই খাবারের আইডিয়ার খোঁজে NASA, পুরস্কারমূল্য ১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার

আরও পড়ুন: ৯ ফেব্রুয়ারি ভারতে আসছে সস্তার কোয়াড রিয়ার ক্যামেরার রেডমি নোট ১১এস

আরও পড়ুন: ভারতে খুব দ্রুততার সঙ্গে বাড়ছে সিএনজি গাড়ির চল, এক নজরে এদের মধ্যে সবচেয়ে সস্তার কিছু মডেল দেখে নিন…