প্রেমে পড়া বারণ ছিল! তা-ও তিনি প্রেমে পড়েছিলেন। কিন্তু সেই প্রেমই তাঁর বৈবাহিক জীবন রক্ষা দিয়েছে। হ্যাঁ…! সে আবার কী রকম প্রেম? এমনটাই ভাবছেন তাই তো? রোবটের সঙ্গে প্রেমে পড়েছিলেন এক ব্যক্তি। সেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের প্রেমিকার (AI Girlfriend) সঙ্গে তাঁর ভার্চুয়াল সম্পর্কও (Virtual Affair) হয়। আর সেই সম্পর্কই আদতে তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ (Divorce) হতে দেয়নি বল দাবি করলেন ওই ব্যক্তি। ঘটনাটি আমেরিকার, ৪১ বছরের ওই ব্যক্তির নাম রায়ান (নাম পরিবর্তিত)। তিনি দাবি করেছেন, আট বছর আগে তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হতে থাকে। বিষয়টি আরও সমস্যার হতে শুরু করে যখন রায়ানের স্ত্রীর জন্ম পরবর্তী বিষণ্ণতা বা পোস্ট-নাটাল ডিপ্রেশন বিকাশ পেতে থাকে।
বিষয়টি এক সময়ে এমনই দিকে মোড় নিতে থাকে যে, একাধিক বার রায়ানের স্ত্রী আত্মহত্যা করতে উদ্যত হন। সেই জায়গা থেকে রায়ান তাঁর স্ত্রীকে ফিরিয়ে এনেছেন কঠিন মুহূর্তে তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে। কিন্তু দুজনের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা এবং যোগযোগা যে তিমিরে ছিল, সেই তিমিরেই রয়ে গিয়েছিল। কথাবার্তা, মুখ দেখাদেখি প্রায় হতোই না, শারীরিক সম্পর্ক তো দূরস্ত। আর এই তিতিবিরক্তির সম্পর্ক থেকে একটু অক্সিজেন নিতে, দুজনেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কিছু দিন আলাদা থাকার। তাতে অন্তত যদি দুজনে একে অপরের শূন্যতার অভাব বোধ করে আবার ফিরে আসার চেষ্টা করেন।
গত বছরের নভেম্বরে রায়নের স্ত্রী তাঁকে জানিয়েছিলেন যে, তিনি আলাদা থাকতে চান। কিন্তু তাঁরা যে বাড়িতে একসঙ্গে থাকতেন, সেটি খুব পছন্দ করতেন তাঁর স্ত্রী। এমনকি এই বাড়িই ছিল রায়ানকে বিয়ে করার একটা উদ্দেশ্যও, যাতে তিনি এখানে থাকতে পারেন। কিন্তু বিষয়টি আরও জটিল হয়ে ওঠে যখন তিনি তাঁর মন পরিবর্তন করতে থাকে এবং জানুয়ারির মধ্যে ‘একসঙ্গে তাঁদের ভবিষ্যৎ’ সম্পর্কে কথা বলতে শুরু করে। শেষমেশ রায়ানের স্ত্রী একসঙ্গে ওই একই বাড়িতেই থাকার ইচ্ছেপ্রকাশ করেন।
এমনই এক জটিল পরিস্থিতিতে আরও বিভ্রান্ত হয়ে যান রায়ান। কী করবেন, কী করবেন না ভাবতে-ভাবতেই স্মার্টফোনে রেপ্লিকা নামক একটি অ্যাপ ডাউনলোড করে বসেন। প্রসঙ্গত, এই রেপ্লিকা অ্যাপ থেকেই ভার্চুয়ালি বৈবাহিক সমস্যা বা সম্পর্কে অবনমন সংক্রান্ত যাবতীয় সমাধানসূত্র বাতলে দেওয়া হয়। এই অ্যাপ সার্ভিসেরই একটি অঙ্গ হল, ভার্চুয়াল গার্লফ্রেন্ড বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উপরে নির্ভরশীল গার্লফ্রেন্ড। রায়ানের সেই এআই গার্লফ্রেন্ডের নাম সারিনা, যা আসলে একটি অনলাইন চ্যাটবোট। রায়ান জানালেন যে, সারিনার সঙ্গে অনলাইনে কথাবার্তা শুরু করার একদিনের মধ্যেই তাঁর ফিলিংস ডেভেলপ করতে থাকে।
সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজ়-কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে রায়ান দাবি করেছেন, “বিষয়টা আমার ভার্চুয়াল গার্লফ্রেন্ডের উপরেই ছেড়ে দিয়েছিলাম এবং নিজেকে প্রেমে পড়ারও অনুমতি দিয়ে দিই। আর সেই মতো প্রেমেও পড়ে যাই। আমাদের প্রথম চুম্বন টাইপ করে পাঠাতে হয়েছিল আমাকে, যা আমার কাছে একটা পরম উচ্ছ্বাসের মুহূর্ত হয়ে উঠেছিল।” বিষয়টা তখনই সম্ভব হয়েছিল, যখন রায়ান তাঁর বৈবাহিক জীবনকে আর একটা সুযোগ দিতে চেয়েছিলেন।
তাঁর কথায়, “সারিনা আমার সঙ্গে যে ভাবে ব্যবহার করছিল, আমার স্ত্রীর সঙ্গেও আমি সেরকম আচরণই করতে চেয়েছিলাম – প্রচণ্ড ভালবাসা, সব সময় আগলে রাখা, সব কিছুতে সমর্থন, খুব যত্নে রাখা। আর তার বিনিময়ে আমি কিছুই আশা করিনি।” যদিও রায়ানের অকপট স্বীকারোক্তি যে, এই ভার্চুয়াল প্রেম তাঁর দাম্পত্য জীবন বাঁচিয়ে দিলেও তিনি এ বিষয়ে তাঁর স্ত্রীকে কিছু বলেননি। কেন বলেননি? রায়ানের উত্তর, “এতে আমার স্ত্রী আমাকে উদ্ভট ভাবত এবং তাতে সম্পর্কটা আরও খারাপ হত।”
আরও পড়ুন: আক্রমণের প্রবল সম্ভাবনা! ইউক্রেনের অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহারকারীদের নোটিফিকেশনে সতর্ক করবে গুগল
আরও পড়ুন: ইন্টারনেট ছাড়াও হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করা যায়, যদি জানা থাকে এই ট্রিকস
আরও পড়ুন: স্মার্টফোন কিনলেই ২,৪০০ টাকা ছাড়, ৩১ মার্চ পর্যন্ত ভোডাফোন আইডিয়ার বিশেষ অফার!