গুগল-এর (Google) বড়সড় ভুল ধরিয়ে দিলেন ভারতীয় এক সাইবার-সিকিওরিটি রিসার্চার। সেই ভুলটি ছিল, এই সার্চ ইঞ্জিন জায়ান্টের মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম অ্যান্ড্রয়েডে। প্রথমে অ্যান্ড্রয়েডের সেই ভুল (Vulnerabilities In Android) ধরালেন আর তার পরে সেই সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট জমা করে অপারেটিং সিস্টেমটিকে বিশ্ববাসীর জন্য আরও নিরাপদ করে তুললেন। মোটা অঙ্কের পুরস্কারও জিতে নিলেন গুগল-এর কাছ থেকে। গুগল-এর তরফ থেকে একটি ব্লগপোস্টে লেখা হয়েছে, বাগসমিরর-এর আমান পাণ্ডে (Aman Pandey) গুগল-এর একাধিক ভুলত্রুটির রিপোর্ট জমা দিয়ে টপ মোস্ট রিসার্চার হয়েছেন। কেবল ২০২১ সালেই গুগল-এর ২৩২টি ভুল ধরেছিলেন আমান।
বাগসমিরর ইনদওরের একটি সংস্থা। এই বাগসমিরর-এর সিইও হলেন আমান। এনআইটি ভোপাল থেকে তিনি গ্র্যাজুয়েট হন। ২০২১ সালেই তিনি এই বাগসমিরর নামক সংস্থাটির প্রতিষ্ঠা করেন। যদিও গুগল-এর এই ভুলচুকগুলি ধরা শুরু করে দিয়েছিলেন ২০১৯ সাল থেকেই। গুগল-এর ভালনারেবিলিটিজ় দলের সদস্য সারা জেকবস জানিয়েছেন যে, ২০১৯ সালেই তাঁর প্রথম রিপোর্টটি জমা দিয়ে দিয়েছিলেন আমান পাণ্ডে। এখনও পর্যন্ত গুগল-এর অ্যান্ড্রয়েড ভালনারেবিলিটিজ় রিওয়ার্ডস প্রোগ্রামে মোট ২৮০টি রিপোর্ট সাবমিট করেছেন পাণ্ডে, যা প্রোগ্রামটিকে সফল হওয়ার জন্য অনেকখানিই সুবিধা করে দিয়েছে।
তবে এই ধরনের ভালনারেবিলিটিজ় যে শুধু মাত্র গুগল-এর মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম অ্যান্ড্রয়েডের জন্য হয়ে থাকে এমনটা নয়। সেই সঙ্গেই আবার গুগল ক্রোম, সার্চ, প্লে এবং অন্যান্য প্রডাক্টের ক্ষেত্রেও তা হয়ে থাকে। যাঁরা সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু ভুল ধরে থাকেন, তাঁদের ৮.৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পুরস্কার হিসেবে দিয়ে থাকে সার্চ ইঞ্জিন জায়ান্ট গুগল। মধ্যপ্রদেশের আমান পাণ্ডেও এই ৮.৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৬৫ কোটি টাটা পুরস্কার জিতে নিলেন।
ভুল ধরা বা অভিযোগ করা যে কোনও সময় খারাপ নয়, তা প্রমাণ করে দেয়। এই ধরনের ভালনারেবিলিটিজ় প্রোগ্রাম। গুগল-এর ভিআরপি বা ভালনারেবিলিটিজ় রিওয়ার্ডস প্রোগ্রাম বহু দিন ধরেই হয়ে আসছে। এই ধরনের প্রোগ্রামকে প্রযুক্তির ভাষায় বলা হয় বাগস বাউন্টি। শুধু গুগল নয়। অ্যাপল বা মাইক্রোসফট-এর মতো সংস্থাও এই ধরনের প্রোগ্রাম করে থাকে। কারণ, প্রতিটি প্ল্যাটফর্মেই নিরাপত্তাজনিত কিছু ভুলচুক থাকেই। আসলে সাইবার হানা যে ভাবে সারা বিশ্বে বেড়ে চলেছে, প্রতিটি সংস্থাই নিজেদের প্ল্যাটফর্মে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা জোরদার করতে একপ্রকার উদগ্রীব হয়ে ওঠে। আর সেখানেই আমান পাণ্ডের মতো সাইবার-সিকিওরিটি রিসার্চাররা ম্যাজিশিয়ানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন।
সারা জেকবস বলছিলেন, অ্যান্ড্রয়েডেই ভুল ধরার জন্য সবথেকে বেশি টাকা পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হয়। এমনকি পুরস্কারের পরিমাণ ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে আরও ৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বেড়েছে। এখনও পর্যন্ত গুগল ভিআরপি ইতিহাসে সবথেকে বেশি পুরস্কারমূল্য দিয়েছে ১৫৭,০০০ মার্কিন ডলার এবং সেটি অ্যান্ড্রয়েডে এক্সপ্লয়েট চেন আবিষ্কারের জন্য দেওয়া হয়েছিল। ২০২১ সালে ১১৫ জন ক্রোম ভিআরপি রিসার্চারকে ৩৩৩ ইউনিক ক্রোম সিকিওরিটি বাগ রিপোর্ট করার জন্য মোট ২.২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। আবার ক্রোমের ব্রাউজ়ার সিকিওরিটি বাগ রিপোর্ট করার জন্য ৩.১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ক্রোম অপারেটিং সিস্টেম বাগের জন্য ২৫০,০০০ মার্কিন ডলার পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল ২০২১ সালেই।
আরও পড়ুন: মাত্র ৫,৯৯৯ টাকায় ভারতে লঞ্চ হল আইটেল এ২৭, ফিচার্স মন্দ নয়
আরও পড়ুন: চুপিসাড়ে আগমন নোকিয়া জি১১ ফোনের! ১০২০০ টাকা খরচে ৯০ হার্ৎজ় ডিসপ্লে ও ট্রিপল রিয়ার ক্যামেরা