প্রিপেড রিচার্জের খরচ বাড়াতেই দেশে সাবস্ক্রাইবার হারাতে থাকল রিলায়েন্স জিও (Reliance Jio)। টেলিকম রেগুলেটরি অথোরিটি অফ ইন্ডিয়ার (TRAI) সাম্প্রতিকতম রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে ১২.৯ মিলিয়ন সাবস্ক্রাইবার হারিয়েছে রিলায়েন্স জিও। ঠিক সেখানেই আবার বিএসএনএল (BSNL) এবং ভারতী এয়ারটেল ১.১ মিলিয়ন এবং ০.৪৭ মিলিয়ন করে নিজেদের সাবস্ক্রাইবার বাড়িয়েছে। এদিকে লোকসান হয়েছে ভোডাফোন আইডিয়ারও। ডিসেম্বর ২০২১-এ ১.৬ মিলিয়ন ইউজার ভোডাফোন আইডিয়ার সঙ্গ ত্যাগ করেছেন বলে ট্রাই-এর রিপোর্ট থেকে আরও জানা গিয়েছে। আর এখান থেকেই একটা বিষয় পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে যে, জিও, এয়ারটেল এবং ভোডাফোন আইডিয়ার ট্যারিফ প্ল্যানের খরচ বাড়ার ফলে আখেরে লাভ হয়েছে সরকারি টেলিকম সংস্থা ভারত সঞ্চার নিগম লিমিটেডের। মার্কেট শেয়ারের দিক থেকে দেখতে গেলে, রিলায়েন্স জিও-র ৩৬ শতাংশ, তার ঠিক পরেউ ভারতী এয়ারটেল ৩০.৮১ শতাংশ, ভোডাফোন আইডিয়া ২৩ শতাংশ এবং বিএসএনএল ও এমটিএনএল যথাক্রমে ৯.৯০ শতাংশ ও ০.২৮ শতাংশ।
সংবাদমাধ্যম টেলিকম টক-এর একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, রিলায়েন্স জিও-র যে সব গ্রাহকরা সারা বছর নিষ্ক্রিয় থাকেন, অর্থাৎ সিম রয়েছে অথচ রিচার্জ করেন না, তাঁদের সরাতে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে পারে মুকেশ আম্বানির টেলিকম সংস্থাটি। আবার প্রিপেড রিচার্জ প্ল্যানের খরচ বাড়ার ফলে যে, স্বল্প আয়ের জিও ও অন্যান্য বেসরকারি টেলকোর ইউজাররা বিএসএনএল-এর সদস্য হয়েছেন, সে কথাটাও অস্বীকার করার উপায় নেই।
যদিও সাবস্ক্রাইবার কমে যাওয়ার এই পরিসংখ্যান রিলায়েন্স জিও-র জন্য খুব একটা সমস্যার সৃষ্টি করবে না। কারণ, রিলায়েন্স জিও-র ভিএলআর শতাংশ বা সক্রিয় সাবস্ক্রাইবারের শতকরা হিসেব অন্তত পক্ষে ভোডাফোন আইডিয়ার থেকে ভাল। এয়ারটেল সেই তালিকায় সবার প্রথমে রয়েছে যাদের অ্যাক্টিভ ইউজার বেস ৯৮.০১ শতাংশ। তার ঠিক পরেই রয়েছে রিলায়েন্স জিও, যাদের ইউজার বেস ৮৭.৬৪ শতাংশ। ভোডাফোন আইডিয়া রয়েছে তিন নম্বর স্থানে, তাদের অ্যাক্টিভ ইউজার ৮৬.৪২ শতাংশ। সবশেষে সরকারি বিএসএনএল-এর স্থান, সাবস্ক্রাইবার বেস ৫০.৩২ শতাংশ।
রিলায়েন্স জিও এই অনুশীলন থেকে অবশ্যই উপকৃত হবে, কারণ তার ইউজার প্রতি গড় আয় এই প্রিপেড খরচ বাড়ার ফলে আরও ভাল হতে চলেছে৷ দেশে এখনও পর্যন্ত সবথেকে বেশি ইউজার রয়েছে রিলায়েন্স জিও-র ঝুলিতেই। এই মুহূর্তে রিলায়েন্স জিও-র যেখানে ৩৬৪.৩৪ মিলিয়ন অ্যাক্টিভ ইউজার রয়েছে, ঠিক সেখানেই এয়ারটেলের ঝুলিতে রয়েছে ৩৪৮.৬৯ মিলিয়ন। অর্থাৎ সামগ্রিক ইউজার বেসের দিক থেকে রিলায়েন্স জিও-র ঠিক পরেই রয়েছে এয়ারটেল।
২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে ৮.৫৪ মিলিয়ন মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলিটি (এমএনপি) রিকোয়েস্ট নথিভুক্ত হয়েছে, যার মধ্যে ৪.৯১ মিলিয়ন এসেছে জ়োন-১ থেকে এবং বাকি ৩.৬৩ মিলিয়ন রিকোয়েস্ট জমা পড়েছে জ়োন-২ থেকে। মোবাইব নম্বর পোর্টেবিলিটি বা এমএনপি-র ক্ষেত্রে জ়োন-১ হল সর্বাধিক রিকোয়েস্ট এসেছে মহারাষ্ট্র থেকে এবং জ়োন-২ হল সর্বাধিক রিকোয়েস্ট এসেছে উত্তরপ্রদেশ থেকে।
আরও পড়ুন: ভুল ধরে অ্যান্ড্রয়েড সুরক্ষিত করে গুগল-এর কাছ থেকে ৬৫ কোটি টাকা পুরস্কার জিতলেন ভারতীয় এই টেকি
আরও পড়ুন: মাত্র ৫,৯৯৯ টাকায় ভারতে লঞ্চ হল আইটেল এ২৭, ফিচার্স মন্দ নয়