চাঁদের (Moon) দূরবর্তী অংশে আছড়ে পড়ার কথা ছিল মহাকাশের প্রায় তিন টন আবর্জনা (Space Junk) বহনকারী রকেটের (Discarded Rocket) ধ্বংসাবশেষের। শুক্রবার চাঁদের সঙ্গে ধাক্কা লাগার কথা ছিল এই রকেটের ধ্বংসাবশেষের। কিন্তু জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত এ প্রসঙ্গে কোনও কিছু জানা যায়নি। শুক্রবার ঘণ্টায় ৮৮০০ কিলোমিটারের বেশি গতিবেগে চাঁদের বুকে আছড়ে পড়ার কথা ছিল মহাকাশের আবর্জনা বহনকারী ওই রকেটের ধ্বংসাবশেষের। এর ফলে চন্দ্রপৃষ্ঠে ছোট একটা গর্ত সৃষ্টি হওয়ার আন্দাজও করেছিলেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। এছাড়াও বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল ওই রকেটের ধ্বংসাবশেষ আছড়ে পড়লে কুণ্ডলীকৃত ধোঁয়ার সৃষ্টি হয়।
তবে এখনও পর্যন্ত চন্দ্রপৃষ্ঠে এ জাতীয় কোনও চিহ্ন দেখা যায়নি। তবে আগামী দিনে হয়তো মহাকাশের আবর্জনা বহনকারী ওই রকেটের ধ্বংসাবশেষ চাঁদের বুকে আছড়ে পড়ার খবর পাওয়া যাবে, এমনটাই বলছেন বিজ্ঞানীরা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য পৃথিবী থেকে ২০১৫ সালের মার্চ মাসে প্রথম এই রকেটের অংশ দেখা গিয়েছিল। তখন থেকেই নিয়মিত নজরদারি চালানো হচ্ছিল এই রকেটের ধ্বংসাবশেষের উপর।
প্রথমে ধারণা করা হয়েছিল যে মহাকাশের আবর্জনা বহনকারী এই রকেটের ধ্বংসাবশেষ হয়তো ধনকুবের ইলন মাস্কের সংস্থা স্পেসএক্সের তৈরি করা রকেট। কিন্তু পরে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের একটা বড় অংশ দাবি করেছিলেন যে এই রকেট চিনের। কিন্তু এই দাবি অস্বীকার করেছে চিন। তারা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছে চাঁদের বুকে ভেঙে পড়তে চলা রকেট তাদের দেশের নয়। মহাকাশের আবর্জনা এবং ক্রমশ তার বৃদ্ধি দিনদিন পৃথিবীর নিরাপত্তার জন্য চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি বা ইএসএ- এর অনুমান মহাকাশের এখন অন্তত ৩৬,৫০০ টুকরো স্পেস জাঙ্ক রয়েছে যেগুলি ১০ সেন্টিমিটারের বেশি বড়। যাই হোক, বর্তমানে এর থেকে কোনও ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা নেই।
যেহেতু চাঁদের দূরবর্তী অংশে এই রকেটের ধ্বংসাবশেষ আছড়ে পড়ার কথা ছিল, তাই ঠিক কোথায় এটি ভেঙে পড়ছে তা জানার একমাত্র উপায় হল ছবি নাসার Lunar Reconnaissance Orbiter এবং ভারতে চন্দযান- ২ অরবিটার ওই রকেট আছড়ে পড়ার ফলে যে গর্ত সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা ছিল, তা চিহ্নিত করতে পারবে বলে অনুমান করেছিলেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। তবে মহাকাশের আবর্জনা বহনকারী এই রকেটের ধ্বংসাবশেষ যে আসলে কোন দেশের বা কোন সংস্থার তা এখনও নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। অন্যদিকে আবার সেটি ভেঙে পড়ার হদিশও পাওয়া যায়নি। তাই এর প্রভাব চাঁদের বুকে ঠিক কী কী হতে পারে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন বিশ্বের জ্যোতির্বিজ্ঞানী মহল।
আরও পড়ুন: চলতি মাসে সকালের আকাশে একসঙ্গে থাকবে শনি, মঙ্গল ও শুক্র
আরও পড়ুন: সূর্যের বাইরের অংশ পর্যবেক্ষণে মঙ্গলযান ব্যবহার করেছেন একদল ভারতীয় বৈজ্ঞানিক