AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Cocaine Sharks: কোকেনের নেশায় ‘বুঁদ’! সমস্যা একটাই, হাঙরের জন্য কোনও নেশামুক্তি কেন্দ্র নেই…

America News: পরীক্ষার জন্য হার্ড ও ফানারা কোকেইনের পুঁটুলি তৈরি করে সমুদ্রে ভাসিয়ে রাখেন। অদ্ভুতভাবে হাঙরের দল গন্ধ পেয়েই ছুটে আসে! একটি হাঙর একটি ছোট আকারের পুঁটুলি ছিঁড়ে নিয়েই অদৃশ্য হয়ে যায় সাগরে।

Cocaine Sharks: কোকেনের নেশায় 'বুঁদ'! সমস্যা একটাই, হাঙরের জন্য কোনও নেশামুক্তি কেন্দ্র নেই...
| Updated on: Jul 27, 2023 | 6:36 PM
Share

দশকের পর দশক ধরে বাজেয়াপ্ত করা মাদক বা Drugs ফেলে দেওয়া হচ্ছে সমুদ্রের কিনারে। চোরাবাজারি এবং মাদকপাচারকারীদের থেকে প্রাপ্ত মাদক নষ্ট করার একমাত্র জায়গা হিসাবে সমুদ্রকেই বেছে নিয়েছিলেন পুলিশ ও আধিকারিকরা। এ বছর অর্থাৎ ২০২৩-এর জুন মাসে, ক্যারিবিয়ান সাগর ও আটলান্টিক সাগর থেকে সর্বমোট ৬,৪০০ কিলোগ্রাম কোকেন উদ্ধার করে মার্কিন কোস্টগার্ড। এই মাদকের আনুমানিক মূল্য ছিল ১৮.৬ কোটি মার্কিন ডলার! এই বিপুল পরিমাণ মাদক মহাসাগরে মেশার দরুণ যুবসমাজ মুক্ত হচ্ছে মাদকের বিষবাষ্প থেকে, তবে সমুদ্রেও তো রয়েছে এক মহাজগত। তার উপর কোনও বিরূপ প্রভাব পড়ছে না তো?

নেশায় আসক্ত হাঙররাও?

সমুদ্রে মাদকের প্রভাব বিচার করতে সম্প্রতি উঠেপড়ে লেগেছেন জীব বিশেষজ্ঞ টম হার্ড, যিনি পরিচিত Tom ‘The Blowfish’ Hird নামে। ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের সহায়তায় গবেষণা শুরু করেন হার্ড। ‘কোকেন শার্ক’ বলে আদৌ কোনও কিছুর অস্তিত্ব আছে কি? “কোকেনে থাকা জটিল যৌগ, ঔষধি উপাদান এবং নিষিদ্ধ রাসায়নিক সমুদ্রে মেশে। সেক্ষেত্রে সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রে এগুলোর প্রভাব কেমন―তা আমাদের জানা প্রয়োজন,” সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানিয়েছেন টম। আপাতত এই গবেষণায় হার্ডের সঙ্গ দিচ্ছেন ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞানী ট্রেসি ফানারা (Tracy Fanara)।

'Cocaine sharks' are feasting on dumped drugs in Florida

সমুদ্রে ডুব দিতেই এ কেমন দৃশ্য দেখলেন ওঁরা!

মহাসাগরীয় স্রোতের সঙ্গে বছরের নির্দিষ্ট সময়ে জল প্রবাহিত হয় নির্দিষ্ট কিছু দিকেই, ফলে সেদিকেই বয়ে যায় নিষিদ্ধ মাদক। ফ্লোরিডা সৈকতের মৎস্যজীবীদের মতে, সমুদ্রে মাদক ফেললেই ঝাঁকেঝাঁকে ছুটে আসে হাঙরের দল। প্রথমে নাবিকদের কথা বিশ্বাস না করলেও পরবর্তীতে সমুদ্রের অতলে ডুব দেন হার্ড ও ফানারা, আর তারপরই চোখে পড়ে অদ্ভুত দৃশ্য! দেখা মেলে এক হ্যামারহেড হাঙরের, যা Great Hammerhead Shark নামে পরিচিত। সাধারণত এই ধরনের হাঙর মানুষের অস্তিত্ব থেকে দূরে থাকে, তবে এক্ষেত্রে সেই হ্যামারহেড ভেসে আসে হার্ডদের দিকেই! অন্য দিকে, এক স্যান্ডবার হাঙরকে দেখা যায় ভাঙা জাহাজের গায়ে পড়ে থাকতে। যদিও সেখানে ওইভাবে ওঁৎ পেতে থাকার মতো কোনও কারণই ছিল না। পরীক্ষা করার জন্য হার্ড ও ফানারা কোকেইনের পুঁটুলি তৈরি করে সমুদ্রে ভাসিয়ে রাখেন। অদ্ভুতভাবে হাঙরের দল গন্ধ পেয়েই ছুটে আসে! একটি হাঙর একটি ছোট আকারের পুঁটুলি ছিঁড়ে নিয়েই অদৃশ্য হয়ে যায় সাগরে।

'Cocaine sharks' are feasting on dumped drugs in Florida

হাঙর নিয়ে আরও-আরও পরীক্ষা…

এখানেই না থেমে আরও পরীক্ষানিরীক্ষার দিকে এগিয়ে যান দুই গবেষক। ‘ফিশ পাউডার’ভর্তি এমন এক পুঁটুলি বানান দু’জন, যা খেলেই হাঙরদের মস্তিষ্কে ডোপামিনের সুনামি আসতে বাধ্য! এই ধরনের পুঁটুলি সাগরে নামাতেই ফের এক দৃশ্য, তবে এবার হাঙরদের আচরণ আরও অদ্ভুত। রীতিমতো একে-অপরের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তারা টেনে ছিঁড়ে নিয়ে যায় পুঁটুলিগুলো! ট্রেসির মত, “কোকেন খেয়ে তাদের ভাল লাগছিল, তবে এবার আমরা যা দিয়েছি, তা খেলে ওরা আনন্দে পাগল হয়ে যাবে! তবে এক্ষেত্রে পার্থক্য একটাই, ফিশ পাউডার কোকেইনের মতো ক্ষতিকর নয়।” পরীক্ষার পরবর্তী পর্যায়ে হেলিকপ্টার থেকে নকল পুঁটুলি ফেলা হয়, দেখা যায় সেখানে হাজির হয়েছে হাঙর গোষ্ঠীর ভয়াবহতম প্রজাতি―টাইগার শার্ক (Tiger Shark)। টমের সাফ কথা, “হাঙর যে নেশায় আসক্ত, তা বোঝা গিয়েছে। তবে এদের এই রাসায়নিক থেকে দূরে কীভাবে সরানো হবে, তা বুঝতে পারছি না!”

'Cocaine sharks' are feasting on dumped drugs in Florida

মানুষের জন্যই বিলুপ্তির পথে হাঙররা?

হাঙরের আচরণ নিয়ে পরীক্ষা হলেও তার কোষ এবং চামড়ার নমুনা সংগ্ৰহ করে যে দ্রুত নিরীক্ষার প্রয়োজন, তা জানিয়েছেন গবেষকরা। ট্রেসি এ প্রসঙ্গে আশঙ্কাবাণী শুনিয়েছেন, “শুধুমাত্র কোকেনই যে সমস্যার মূল, এমনটা ভাবার কোনও কারণ নেই। নিকাশি ব্যবস্থার মাধ্যমে শহর থেকে বেরিয়ে আসা ওষুধ, ক্যাফেইন, লিডোকেইন, অ্যাম্ফিটামিন এবং অন্যান্য জটিল যৌগের প্রভাবও হাঙরদের জীবনের ক্ষেত্রে মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে।” ডিসকভারি চ্যানেলের সৌজন্যে সর্বপ্রথম কোকেন শার্কদের কথা প্রকাশ্যে আসে। আর তারপর থেকেই বাস্তুতন্ত্রের ভবিষ্যতের কথা ভেবে শঙ্কিত হয়ে পড়েন জীববিজ্ঞানীরা। এমনিতেই প্রতি বছর কয়েক লক্ষ হাঙর চোরাশিকারীদের বর্বরতার শিকার হয়, উপরন্তু রাসায়নিকের আক্রমণে তাদের জীবনযাত্রাও ভীষণভাবে সমস্যায় পড়েছে! এমতাবস্থায় সামুদ্রিক পরিবেশের যে কতটা দুর্দশা হতে পারে, তা ভেবেই শঙ্কিত পরিবেশ-গবেষকরা।