বিশাল মহাকাশের অনেকটাই এখনও মনুষ্যজাতির অজানা। আর এই অজানাকে আমজনতার দরবারে পৌঁছে দেওয়ার জন্য নিরন্তর পরিশ্রম করে চলেছে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের অন্যতম পছন্দের স্পেস টেলিস্কোপ হাব্বল। মার্কিন স্পেস এজেন্সি নাসার হাব্বক স্পেস টেলিস্কোপ হামেশাই মহাকাশের এমন সব ছবি প্রকাশ করে, যা দেখলে শুরু বিস্মিত হতে হয়। তেমনই একটি ছবি ‘রানিং ম্যান নেবুলা’। ইনস্টাগ্রামে হাব্বল টেলিস্কোপের অফিশিয়াল পেজে এই অদ্ভুত সুন্দর দেখতে নীলাভ আভার নীহারিকার ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। একঝলক দেখলে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকতে হয়। যেন ঘোর লেগে যাবে আপনার।
সম্প্রতি হাব্বল টেলিস্কোপ গবেষণা শুরু করেছিল এই নিয়ে যে, ইয়ং স্টার বা নব্য নক্ষত্ররা কীভাবে তাদের আশপাশের পরিবেশকে প্রভাবিত করে? আর এই গবেষণা করতে গিয়েই এক অদ্ভুত জিনিস আবিষ্কার করেছে নাসার স্পেস টেলিস্কোপ। যে ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে, তা দেখলে প্রাথমিক ভাবে মনে হবে যেন একরাশ ধোঁয়া সম্মিলিত হয়েছে। একটু কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলে মনে হবে যেন দৌড়ে যাচ্ছে একজন মানুষ। জানা গিয়েছে, রানিং ম্যান নেবুলা- এই বিশেষ নীহারিকার ক্ষেত্রে বিভিন্ন লুমিনাস গ্যাসের সংঘর্ষের ফলে একটি শক ওয়েভ তৈরি হয়েছে।
এই প্রসঙ্গেই প্রকাশ্যে এসেছে Herbig-Haro অবজেক্টের নাম। এর আর এক নাম HH 45। এক্ষেত্রে গ্যাসীয় উপাদান এবং ধুলোকণার মেঘ লক্ষ্য করা যায়। Herbig-Haro আসলে এমন একটি নীহারিকা, যা নব্য নক্ষত্র থেকে আগত গ্যাসীয় উপাদান ধূলিকণার সঙ্গে সংঘর্ষের ফলে তৈরি হয়। নব্য নক্ষত্রদের আশপাশে থাকা ধূলিকণার সঙ্গেই সংঘর্ষ হয় এইসব নক্ষত্র থেকে আগত গ্যাসের। আর তীব্র গতিতে সংঘর্ষের ফলে তৈরি হয় শক ওয়েভ। এই Herbig-Haro অবজেক্ট সচরাচর লক্ষ্য করা যায়। NGC 1977- এই নেবুলার মধ্যে থাকে Herbig-Haro অবজেক্ট। এর অন্য নাম রানিং ম্যান নেবুলা। এটি আসলে গ্রেট ওরিয়ন নেবুলাতে তিনটি নীহারিকার জটিল গঠন। পৃথিবী থেকে ৫০০০ আলোকবর্ষ দূরে রয়েছে এই নীহারিকা।
এই রানিং ম্যান নেবুলা আসলে একটি রিফ্লেকশন নেবুলা। অর্থাৎ এই নীহারিকা কোনও আলো নির্গমন করে না। কিন্তু কাছাকাছি নক্ষত্র থেকে আলো প্রতিফলিত করে। নাসার মতে, একে বলা হয় like a streetlight illuminating fog। ইনস্টাগ্রামে নাসার হাব্বল টেলিস্কোপের তরফে শেয়ার করা ছবিতে দু’জোড়া আয়নযুক্ত গ্যাসীয় অবয়ব দেখা গিয়েছে। নীল এবং বেগুনি রঙয়ের আভায় দেখা গিয়েছে এই গ্যাসীর উপাদানের ছবি। নীল রঙের গ্যাস হল আয়নযুক্ত অক্সিজেন। আর বেগুনি রঙে গ্যাস হল আয়নযুক্ত ম্যাগনেসিয়াম।
আরও পড়ুন- Leonard Comet: চলতি বছরের সবচেয়ে উজ্জ্বল ধূমকেতু লিওনার্ড পৃথিবীর পাশ দিয়ে যাবে আগামী ১২ ডিসেম্বর