Mysterious Planet: রহস্যময় গ্রহ, বৃষ্টিতে জলের বদলে রয়েছে পাথর
Hubble Space Telescope: আমাদের সৌরমণ্ডল এবং আকাশগঙ্গা ছায়াপথের বাইরে থাকা দুটো রহস্যজনক গ্রহ পর্যবেক্ষণে আপাতত মন দিয়েছে নাসার স্পেস টেলিস্কোপ হাব্বল।
আমাদের আকাশগঙ্গা (Milky Way Galaxy) ছায়াপথে রহস্যজনক সব গ্রহের (Mysterious Planets) সন্ধান দেওয়ার ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে হাব্বল স্পেস টেলিস্কোপ (Hubble Space Telescope)। নাসার এই টেলিস্কোপ একটি ফ্লায়িং অবজারভেটরি। আর এবার সেই হাব্বল টেলিস্কোপ এখন দুটি ভিন্ন গ্রহের বায়ুমণ্ডল পর্যবেক্ষণে ব্যস্ত রয়েছে। এই দুই গ্রহ অনেকাংশেই বৃহস্পতির মতো। তবে এই দুই গ্রহ তাদের হোস্ট বা পেরেন্ট স্টার অর্থাৎ মূল নক্ষত্রের এতটাই কাছে রয়েছে যে প্রতিনিয়ত অত্যন্ত তাপমাত্রা সহ্য করতে হচ্ছে। ফলে এই দুই গ্রহের তাপমাত্রাও এতটাই বেশি যে অনায়াসে গলিয়ে দিতে পারে টাইটেনিয়ামের মতো শক্তিশালী ধাতু। এই দুই গ্রহের মধ্যে একটিতে রয়েছে রেনিং ভ্যাপোরাইজড রক। অন্যটির বায়ুমণ্ডলের উপরের স্তরে সরাসরি হোস্ট স্টার থেকে এসে পড়ছে তীব্র অতিবেগুনি রশ্মি বা আলট্রা ভায়োলেট রেডিয়েশন। এই দুই গ্রহ পর্যবেক্ষণ করে বিজ্ঞানীরা যে রহস্যময় জগতের সন্ধান পেয়েছেন তার ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশিত হয়েছে দুটো আলাদা গবেষণাপত্রে। এর মাধ্যমে আমাদের ছায়াপথের বহু দূরবর্তী অংশে ঘটে চলা বৈচিত্র, জটিলতা এবং বহিরাগত রসায়ন সম্পর্কে ধারণা করতে পারছেন।
হাব্বল স্পেস টেলিস্কোপের সাহায্যে আমাদের সৌরজগতের বাইরের গ্রহ WASP-178b- কে পর্যবেক্ষণ করেছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। পৃথিবী থেকে প্রায় ১৩০০ আলোকবর্ষ দূরে রয়েছে এই গ্রহ। এখানে বায়ুমণ্ডল অর্থাৎ অ্যাটমোস্ফিয়ার সিলিকন মনোক্সাইড গ্যাসে পরিপূর্ণ। ‘নেচার’ জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন যে, এই গ্রহে দিনের বেলা অ্যাটমোস্ফিয়ার মেঘ ছাড়াই থাকে। কিন্তু রাতের বেলা এই গ্রহের বায়ুমণ্ডলে কিছু পরিবর্তন ঘটে। বলা ভাল কার্যত উত্তাল হয়ে ওঠে বায়ুমণ্ডল। দেখা যায় মেঘ। সুপার হ্যারিকেনের গতিতে (ঘণ্টায় ২০০০ মাইল) গ্রহের চারপাশে ঘুরতে থাকে মেঘ ও বায়ুমণ্ডলের অন্যান্য বস্তু।
চাঁদের একটি দিক যেমন সবসময় পৃথিবীর সঙ্গে মুখোমুখি থাকে। আর চাঁদের টানের (অভিকর্ষ বল) পৃথিবীর নির্দিষ্ট অংশে জোয়ার-ভাটার সৃষ্টি হয়, তেমনই এই গ্রহের ক্ষেত্রেও একটি দিক তার হোস্ট স্টারের সামনেই থাকে। তবে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন যে অন্ধকারাচ্ছন্ন দিকটিতে সিলিকন মনোক্সাইড ঠাণ্ডা হয়ে জমে গিয়ে পাথরে ঘনীভূত হতে পারে। এইসব শিলা মেঘ থেকে বৃষ্টির ফলে সৃষ্টি হয়। শুনে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি যে এই আজব গ্রহে মেঘ থেকে বৃষ্টি হলে জল নয় বদলে পাথর পাওয়া যায়। কিন্তু এই গ্রহ তার পেরেন্ট স্টারের মাধ্যমে আলোকিত হওয়ার শুরুর পর্যায় বা আলো কমের আসার সন্ধিক্ষণেও এতটাই উত্তপ্ত থাকে যে শিলা বাষ্পীভূত হওয়া সম্ভব।
অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল লেটারে প্রকাশিত অন্য একটি গবেষণাপত্রে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, তাঁরা আর একটি সুপার হট জুপিটার KELT-20b গ্রহ খুঁজে পেয়েছেন যা পৃথিবী থেকে ৪০০ আলোকবর্ষ দূরে রয়েছে। হাব্বল টেলিস্কোপের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করে বিজ্ঞানীরা দেখেছেন যে এই গ্রহের পেরেন্ট স্টার থেকে অতিবেগুনি রশ্মির বিস্ফোরণ হচ্ছে। আর তার প্রভাবে এই গ্রহের অ্যাটমোস্ফিয়ারের চারপাশে একটি থার্মাল লেয়ার তৈরি হয়েছে। অনেকটা পৃথিবীর স্ট্র্যাটোস্ফিফারের মতো।
আরও পড়ুন- Comet: সৌরমণ্ডলের বাইরে থেকে ধূমকেতু আসছে পৃথিবীর কাছে, একবার ফিরে গেলে আর আসবে না