রোজ কত কী ঘটে যাহা তাহা! তাই বলে মাছ যে কোনও দিন ড্রাইভ করবে, ভেবেছিলেন? আপনি না ভাবলে কী হবে, ভাবেনি মাছও, তবে ভেবেছিলেন বিজ্ঞানীরা। আর যেমন ভাবা তেমন কাজ! সত্যিই তাই। এক ফোঁটাও বাড়িয়ে বলছি না। ইজ়রায়েলের বিজ্ঞানীরা এমনই একটি গোল্ডফিশকে প্রশিক্ষণ দিয়ে শেষমেশ একটি ‘মাছ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত গাড়ি’ (Fish Operated Vehicle Or FOV) চালিয়ে দেখিয়েছেন।
ইজ়রায়েলের নেগেভের বেন-গুরিও বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল গবেষক এই এক্সপেরিমেন্টটি করে দেখেন। রিসার্চের মূল লক্ষ্য ছিল, মাছেদের নেভিগেট করার ক্ষমতা সর্বজনীন নাকি তা শুধু মাত্র তাদের নিজেদের পরিবেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। মূলত, বিজ্ঞানীরা জানতে চেয়েছিলেন যে, জলের নীচে প্রাণীটির নৌচলাচল করার ক্ষমতা সর্বত্র কাজ করে কি না।
ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার ও নিউরোসায়েন্টিস্টরা এই ক্রিয়েটিভ চিন্তাভাবনা নিয়ে হাজির হন! প্রাথমিক ভাবে তাঁরা দেখতে চেয়েছিলেন মাছ কেবল মাত্রই জলের তলে নিঃশ্বাস নিতে পারে কি না। আর সেই মোতাবেক ক্যামেরার সাহায্যে চালক মাছের গতিবিধি ট্র্যাক করে চারটি মোটরচালিত চাকার সাহায্যে FOV চালানো হয়।
গবেষকরা জানিয়েছেন, এটি একটি কম্পিউটার এবং লাইট ডিটেকশন প্রযুক্তি। একটি ট্যাঙ্কের ভিতরে রাখা হয়েছিল গাড়িটি। গাড়িটির অনতিদূরেই ছিল মাছটি। আর ট্যাঙ্কের নীচে পেয়ার করা ছিল চারটি চাকা।
Hey @TheEllenShow, we wanted to say that BGU can help Dory. Our interdisciplinary researchers’ team (@OhadBenShahar, @ronen_segev) discovered that a goldfish’s navigational ability supersedes its watery environs, even if they were interrupted in the middle. See it in the video. pic.twitter.com/knEPrEWeov
— Ben-Gurion University of the Negev (@bengurionu) January 5, 2022
এই পরীক্ষাটি সফল করার জন্য, বিজ্ঞানীরা ওই মাছকে প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন যাতে খাবারের জন্য সেটি বিভিন্ন লক্ষ্যের দিকে চার চাকা গাড়িটিকে নিয়ে যেতে পারে। এর পরে, মাছের এই গাড়ি চালানোর কাজটিকে আরও কঠিন করে তোলার জন্য পরীক্ষায় অসুবিধার মাত্রা বাড়িয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। উদাহরণস্বরূপ, ওই মাছ নিয়ন্ত্রিত গাড়ি বা FOV-র সূচনা বিন্দু পরিবর্তন করা।
পরীক্ষায় সফল হওয়ার পরে রিপোর্টে বিজ্ঞানীরা লিখেছেন, “গোল্ডফিশ প্রকৃতপক্ষে যানবাহন চালাতে, নতুন পরিবেশ অন্বেষণ করতে এবং সূচনা বিন্দু নির্বিশেষে লক্ষ্যে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছিল। সূচনা বিন্দু বা স্টার্টিং পয়েন্ট বদলেও, এমনকি অবস্থানের ভুল সংশোধন করার সময়ও সফল ভাবে গাড়িটি চালাতে পেরেছিল মাছটি।”
পিএইচডি ছাত্র শাচার গিভন বলেছেন, “এই পরীক্ষা আসলে চোখে আঙুল দিয়ে দেখায় যে, যে পরিবেশে তারা বিবর্তিত হয়েছে তার থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন পরিবেশে গোল্ডফিশের মধ্যেও একটি জটিল কাজ শেখার জ্ঞানীয় ক্ষমতা রয়েছে। আমাদের কাছে ভীষণ চ্যালেঞ্জিং টেস্ট ছিল। পরীক্ষায় মাছটি ক্রমান্বয়ে আরও দক্ষ হয়ে ওঠে এবং শেষ বারে FOV-এর নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখে উচ্চ স্তরের সাফল্য প্রদর্শন করে।”
মোট ছয়টি গোল্ডফিশের উপরে এই একই পরীক্ষা চালানো হয়েছিল। প্রত্যেক বারই তারা সফল ভাবে উত্তীর্ণও হয়েছিল বলে আরও জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
আরও পড়ুন: গিরগিটির মতো রং বদলাবে বিএমডব্লিউ-র এই গাড়ি! বোতাম টিপলেই কালার স্কিম চালু…
আরও পড়ুন: প্রাণঘাতী নয়, সুইডেনে হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীর ‘প্রাণ বাঁচাল’ ড্রোন!
আরও পড়ুন: নাকের ছাপ দেখে হারিয়ে যাওয়া কুকুরছানা চিনবে স্যামসাংয়ের এই অ্যাপ