Arambagh News: নামেই গ্রিন সিটি, কাজ কিচ্ছু হয়নি
প্রায় সাড়ে সাত কোটি টাকার গ্রিন সিটি প্রকল্পের উদ্বোধনী ফলক প্রকাশ্যে জ্বলজ্বল করছে। সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ হয়নি । তৃণমূল পরিচালিত বোর্ডের দিকে কোটি কোটি টাকা নয়-ছয় এর অভিযোগের তির বিরোধী দল গুলির।
প্রায় সাড়ে সাত কোটি টাকার গ্রিন সিটি প্রকল্পের উদ্বোধনী ফলক প্রকাশ্যে জ্বলজ্বল করছে। সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ হয়নি । তৃণমূল পরিচালিত বোর্ডের দিকে কোটি কোটি টাকা নয়-ছয় এর অভিযোগের তীর বিরোধী দল গুলির। কাজ না হওয়ায় সরকারি বিদ্যালয় এর ছাদ থেকে সোলার প্যানেল খোলার আবেদন জানিয়ে পৌরসভা কে লিখিত অভিযোগ TV9 বাংলার হাতে। বর্তমান তৃণমূলের পৌর চেয়ারম্যান বিগত তৃণমূল বোর্ডের দিকেই অভিযোগ তুলেছেন।
আরামবাগ পৌরসভার উদ্যোগে স্টেট আরবান ডেভেলপমেন্ট অথরিটির ( SUDA ) সহায়তায় গ্রিন সিটি প্রকল্পে আরামবাগ পৌরসভায় সরকারি বিদ্যালয়গুলিতে সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য সোলার প্যানেল বসানো হয়। ৭ কোটি ২৪ লক্ষ টাকার প্রকল্পের পৌরসভার বিভিন্ন সরকারি বিদ্যালয় সহ রাস্তাঘাটে সৌর লাইট বসানো হয়। আরামবাগ পৌরসভা থেকে ই টেন্ডার করে ঠিকাদারের মাধ্যমে এই কাজের বরাত দেওয়া হয়। সেইমতো আরামবাগ শহরে অবস্থিত বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ছাদে সৌর প্যানেল বসানোর কাজও হয়। কিন্তু উদ্বোধনের ফলক থাকলেও জলেনি লাইট চলেনি পাখা। এমত অবস্থায় বিদ্যালয় গুলি সোলার প্যানেল খুলে নেওয়ার লিখিত আবেদন জানিয়েছে আরামবাগ পৌরসভায়। সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প কার্যকর না হওয়ায় বিরোধী দলগুলি পৌর বোর্ডের দিকে আঙুল তুলেছে।
উল্লেখ্য, আরামবাগ পৌরসভা অবস্থিত ৩৩ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও শিশু শিক্ষা কেন্দ্র, ১১ টি আপার প্রাইমারি ও হায়ার সেকেন্ডারি বিদ্যালয়ের ছাদে সোলার প্যানেল বসে। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭৬৪.৪৬ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন। যা এই সমস্ত বিদ্যালয় ছাড়াও আরামবাগ পৌরসভার স্টিট লাইটে ব্যবহার হবে। ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে আরামবাগ পৌরসভা থেকে গ্রীন সিটি প্রকল্পের সোলার বিদ্যুৎ প্যানেলের জন্য ই টেন্ডার হয়। বিভিন্ন বিদ্যালয়ের কাজও শুরু হয়। অডিট রিপোর্টে দেখা যায় ২৭.০৪.২০১৯ তারিখে গ্রিন সিটির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এবং ওই তারিখেই ফাইনাল পেমেন্ট হয়ে গেছে।
গ্রীন সিটি নিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি বিভিন্ন সময় আর টি আই এর মাধ্যমে পৌরসভায় জানতে চেয়েছে কত টাকা মঞ্জুর হয়েছে, কাজটি কিভাবে সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু পৌরসভা থেকে কোন RTI এর সদুত্তর দিতে পারেনি।
এমত অবস্থায় TV9 বাংলার ক্যামেরা বিভিন্ন বিদ্যালয় গিয়ে সরজমিনে তদন্ত শুরু করতেই উঠে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য। বিদ্যালয়ের ছাদে কোথাও সোলার প্যানেল লাগানো আছে। কিন্তু মেসিন ও ব্যাটারি নেই। কোথাও বা সোলার প্যানেল লাগানোই হয়নি। কোন কোন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও TV9 বাংলার ক্যামেরার সামনে মুখ খুলতে রাজি হচ্ছেন না কোন এক অজানা কারণে। তবে আরামবাগ হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিকাশ চন্দ্র রায় মুখ খুলেছেন। কয়েক মাস আগেই গ্রীন সিটির প্রকল্পের সৌর বিদ্যুতের সোলার প্যানেল খোলার দাবিতে প্রায় ৩০ টি বিদ্যালয় পৌরসভা কে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে। বিদ্যালয় থেকে কেউ কেউ তো সরাসরি অভিযোগ করেছেন সোলার বিদ্যুৎ পাননি কিন্তু বিদ্যালয়ের ছাদে সৌর বিদ্যুতের প্যানেল বসাই ছাদ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সোলার প্যানেল খুলে নেওয়ার দাবীও জানিয়েছেন।
ইতিমধ্যেই বিরোধী দল বিজেপি ও সিপিএম গ্রীন সিটি প্রকল্পের টাকা নয়-ছয় এর অভিযোগ তুলেছেন। বিজেপি তো সরাসরি কোর্টে যাওয়ার হুমকি দিচ্ছে। যদিও এই নিয়ে আরামবাগ পৌরসভার চেয়ারম্যান সমীর ভান্ডারী বিগত পৌর বোর্ডের দিকেই আঙ্গুল তুলছেন, আর বিগত আরামবাগ পৌর বোর্ডের চেয়ারম্যান তথা বর্তমান ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর স্বপন কুমার নন্দী বিরোধীদের অপপ্রচার বলে দায় এড়াচ্ছেন। তিনি বলেন আগেই অডিট হয়েছে। সেই রিপোর্ট পৌরসভায় আছে।