মৃত্যুর মুখ থেকে উদ্ধার করেছেন একটি বাচ্চাকে, ময়ূর শেলকেই আসল ‘সুপার হিরো’, বলছেন নেটিজ়েনরা
মধ্য মুম্বইয়ের ভানগনি রেল স্টেশনে গত ১৭ এপ্রিল ঘটেছিল এই ঘটনা।
ময়ূর শেলকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় এখন তিনি হিরো। হবে নাই বা কেন। সত্যিই তো সুপারম্যানের মতো কাজ করেছেন তিনি। পরনে শুধু ছিল সাধারণ পোশাক। আর আকাশপথে উড়ে আসেননি তিনি। তবে দেবদূতের থেকে কোনও অংশে কম নন ময়ূর। তাঁর বিচক্ষণতায় মুগ্ধ গোটা নেট দুনিয়া। আনন্দ মহিন্দ্রা, গৌতম আদানির মতো শিল্পপতি, অভিনেতা আর মাধবন, রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল- সহ আরও অনেক বিখ্যাত ব্যক্তিত্বই ময়ূরের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। আর নেটিজ়েনরা বলেছেন, ‘সত্যিকারের হিরো তো ময়ূরের মতোই হন’।
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছিল। সেখানে দেখা গিয়েছিল রেল স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম ধরে হেঁটে আসছেন এক মা ও তাঁর সন্তান। মায়ের হাত ধরে কার্যত লাফাতে লাফাতে আসছিল ওই বাচ্চাটি। আচমকাই হাত ফস্কে সোজা রেললাইনে পড়ে যায় সে। এদিকে ততক্ষণে ট্রেনের হর্ন শোনা গিয়েছে। দেখা যায়, বাচ্চাটি যে লাইনে পড়ে গিয়েছে সেখানেই আসছে ট্রেন। বাচ্চাটি ততক্ষণে লাইন থেকে উঠে প্ল্যাটফর্মে ওঠার চেষ্টা করছে। কিন্তু ছোট বাচ্চা কী আর অত উঁচু প্ল্যাটফর্মে ভর দিয়ে লাফ মেরে উঠতে পারে। এদিকে ভয়ে-আতঙ্কে তখন আর্তনাদ করছেন বাচ্চাটির মা। তাহলে কি এবার চোখের সামনে সন্তানের মৃত্যুও দেখতে হবে তাঁকে?
Very proud of Mayur Shelke, Railwayman from the Vangani Railway Station in Mumbai who has done an exceptionally courageous act, risked his own life & saved a child's life. pic.twitter.com/0lsHkt4v7M
— Piyush Goyal (@PiyushGoyal) April 19, 2021
ভাবনার মাঝেই ছেদ পড়ে। দেবদূতের মতো উদয় হন এক রেলকর্মী। তীব্র গতিতে ছুটে এসে বাচ্চাটিকে লাইন থেকে প্ল্যাটফর্মে তুলে দেন। তারপর নিজেও উঠে পড়েন প্ল্যাটফর্মে। এই সবটাই ঘটেছে কয়েক সেকেন্ডে। একচুল এদিক-ওদিক হলে মৃত্যু অনিবার্য ছিল দু’জনের ক্ষেত্রেই। তবে এ যাত্রায় কোনও অঘটন ঘটতে দেননি সুপারম্যান ময়ূর শেলকে। উপস্থিত বুদ্ধি, বিচক্ষণতার জেরে বাচ্চাটিকে উদ্ধার করেছেন তিনি। যদিও কার্যত নিজের প্রাণের বাজি ধরেছিলেন ময়ূর। তবে এ যাত্রায় অক্ষত রয়েছেন তিনিও।
আরও পড়ুন- জীবন্ত করোনা রোগীকে তোলা হচ্ছে শববাহী গাড়িতে!
এই ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ার পর শিউরে উঠেছে গোটা নেট দুনিয়া। পাশাপাশি ময়ূরের প্রশংসায় পঞ্চমুখ সকলেই। নেটাগরিকরা বলছেন, ‘ময়ূর না থাকলে কী হত ভেবেই হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে যাচ্ছে।’ ইতিমধ্যেই রেলমন্ত্রকের তরফে পয়েন্টম্যান ময়ূরের জন্য ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। তবে রাতারাতি ‘হিরো’ হয়ে যাওয়া ময়ূর সুপারম্যানের মতো কাজ করলেও আগের মতো আমআদমিই রয়েছেন। হয়তো আগামী দিনে অন্য কাউকে মৃত্যুর মুখ থেকে রক্ষা করার জন্য অপেক্ষা করছেন।