AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Buxa: গাছের উপর ঝুলন্ত সেতু, পারাপার করবে বাঁদর! অভিনব উদ্যোগ বন দফতরের

Alipurduar: বাঁশ, দড়ি এবং বিশেষ ধরনের তার দিয়ে বানানো হয়েছে বাঁদরের জন্য এই সেতু। রাস্তা দিয়ে পারাপারের বদলে বাঁদর এখন থেকে ওই ঝুলন্ত ব্রিজ দিয়েই পারাপার করছে বলে বন দফতর জানিয়েছে।

Buxa: গাছের উপর ঝুলন্ত সেতু, পারাপার করবে বাঁদর! অভিনব উদ্যোগ বন দফতরের
বাঁদরের জন্য সেতু নির্মাণ! নিজস্ব চিত্র।
| Edited By: | Updated on: Dec 18, 2021 | 10:06 PM
Share

আলিপুরদুয়ার: রাজাভাতখাওয়া– জয়ন্তীর রাস্তা। সেখানে গাছের উপরে তৈরি হয়েছে এক ঝুলন্ত ব্রিজ! কেন? বাঁদর বাঁচাতে হবে। তাই এমন অভিনব উদ্যোগ বন দফতরের। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পে ট্র‍্যাপ ক্যামেরায় বাঘের ছবি পাওয়া যাওয়ায় পরই রাজ্যজুড়ে হইচই শুরু হয়েছে। বাঘ বাঁচাতে একাধিক উদ্যোগের পাশাপাশি এবার নব সংযোজন হল বাঁদর। বাঁদর বাঁচাতেও সমান উদ্যোগী হল বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প কর্তৃপক্ষ। জয়ন্তী রাস্তায় বেপরোয়া গাড়ির হাত থেকে বাঁদর বাঁচাতে রাজাভাতখাওয়া থেকে জয়ন্তী পর্যন্ত ঝুলন্ত এক সেতু বানাল বন দপ্তর। পরীক্ষামূলক ওই ব্রিজ কার্যকারী ভূমিকাও নিচ্ছেও বলে বন দফতর জানিয়েছে।

রাস্তার এক পাশের উঁচু গাছ থেকে আরেক পাশের উঁচু গাছের উপর এই ঝুলন্ত ব্রিজ বানানো হয়েছে। বাঁশ, দড়ি এবং বিশেষ ধরনের তার দিয়ে বানানো হয়েছে বাঁদরের জন্য এই সেতু। রাস্তা দিয়ে পারাপারের বদলে বাঁদর এখন থেকে ওই ঝুলন্ত ব্রিজ দিয়েই পারাপার করছে বলে বন দফতর জানিয়েছে। এদিকে বাঁদর বাঁচাতে বন দফতরের এই অভিনব উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে বিভিন্ন পশুপ্রেমী সংস্থা থেকে সাধারণ মানুষজন।

বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ক্ষেত্র অধিকর্তা (এফডি) বুদ্ধরাজ শেওয়া বলেন, “জয়ন্তী রুটে বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চলাচল করে। এর ফলে রাস্তার ধারে থাকা বহু বাঁদরের মৃত্যু হয়।তাই বাঁদর বাঁচাতে আমরা পরীক্ষামূলক ভাবে কিছু ঝুলন্ত ব্রিজ বানিয়েছি। আমাদের পরিকল্পনা সফল হলে আগামী দিনে রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় গাছের উপর এই ঝুলন্ত ব্রিজ বানানো হবে। এছাড়াও দ্রুতগামী গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেও বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে”।

বন দফতরের এই উদ্যোগে খুশি আলিপুরদুয়ারের পশুপ্রেমীরা। পশুদের নিয়ে কাজ করা আলিপুরদুয়ার বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সংস্থার সম্পাদক কৌশিক দে বলেন, “আমরাও দেখেছি বক্সার জঙ্গলে বিভিন্ন সময় গাড়ির বলি হয় বাঁদর সহ অন্য বন্য প্রাণী। আবার বাঁদর বাঁচাতে গাড়ি দুর্ঘটনার খবরও পাওয়া গেছে। এই অবস্থায় বাঁদর বাঁচাতে রাস্তার উপর ঝুলন্ত ব্রিজ খুব কার্যকারী পদক্ষেপ। বন দফতরের এমন উদ্যোগে আমরা খুশি”।

পশুপ্রেমী বাবুন দাস বলেন, “বিদেশের কিছু জায়গায় দেখেছি ছোটো ছোটো বন্য প্রাণী বাঁচাতে রাস্তার উপর দিয়ে গাছের মধ্যে ঝুলন্ত ব্রিজ বানানো হয়। বক্সাতেও এমন ঝুলন্ত ব্রিজ খুব কার্যকারী পদক্ষেপ। তবে দমনপুর থেকে রাজাভাতখাওয়া এবং সেখান থেকে জয়ন্তী পর্যন্ত গাছের উপর এমন ঝুলন্ত ব্রিজ বানালে আরও কার্যকরী হবে”।

বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প সূত্রে জানা গিয়েছে, দমনপুর থেকে রাজাভাতখাওয়া এবং জয়ন্তী পর্যন্ত পূর্ত দফতরের পাকা রাস্তা রয়েছে। এই রাস্তার দু’পাশেই বক্সার গভীর জঙ্গল। এই রাস্তা দিয়ে সারাদিন রাত প্রচুর গাড়ি চলাচল করে। অভিযোগ,এই রাস্তাতেই অনেক সময় বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চলাচল করে। স্থানীয় বন কর্মীরা জানিয়েছেন, বিশেষ করে রাজাভাতখাওয়া থেকে জয়ন্তীর রাস্তায় দ্রুতগামী প্রচুর ছোট গাড়ি চালচল করে। গাড়ির চালকরা বেশিরভাগই  মদ্যপ অবস্থায় থাকেন। বিনা বাধায় জঙ্গলের এই পথে বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চলাচল করে। ফলে মাঝেমধ্যেই গাড়ির সঙ্গে বন্য প্রাণীদের সংঘর্ষ হয়। বিশেষ করে জঙ্গল থেকে রাস্তার দু’ধারে প্রচুর বাঁদর বসে থাকে। মদ্যপ গাড়ি চালকদের নিয়ন্ত্রণ না থাকায় অনেক সময় গাড়ির নীচে চলে আসে বাঁদর। এইভাবে প্রায় দিনই বক্সার জঙ্গলের একাধিক জায়গায় রোজ বাঁদরের মৃত্যু ঘটে। এও জানা গিয়েছে, অনেকে আবার বাঁদর বাঁচাতে গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে দূর্ঘটনার কবলেও পড়েন।

রাজাভাতখাওয়ার স্থানীয় বাসিন্দা অ্যালবার্ট সাংমা বলেন, “বক্সার জঙ্গলে চলাচলকারি গাড়িগুলো থেকে অনেকেই বাঁদরের জন্য খাবার ছুঁড়ে  দেন। ওই খাবারের লোভে বাঁদর রাস্তার উপরে চলে আসে। দ্রুত গতিতে আসা গাড়ি অনেক সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাঁদরদের ধাক্কা মারে। ফলে গাড়ির  ধাক্কায় বাঁদরের মৃত্যু হয়। এই ভাবে মাঝেমধ্যেই অনেক বাঁদর মারা যাচ্ছে জঙ্গলের রাস্তায়।

আরও পড়ুন: Sonagachi: যখন তখন রেড, খদ্দেরকে তুলে নিয়ে যাওয়া থেকে শৌচালয় সমস্যা, কী চাইছে সোনাগাছি?