Alipurduar: ভেঙে গিয়েছে কাঠের সেতু, দড়ি ধরে নদী পারাপার, মাদারিহাটে থমকে পর্যটন
Flood in Alipurduar: সেতু ভেঙে যাওয়ায় এখন বনদফতরের কর্মী ও পর্যটকরা দড়ি ধরে নদীর উপর দিয়ে পারাপার করছেন। মঙ্গলবার পর্যটন দফতর থেকে ইঞ্জিনিয়ার এসে মাপজোক করেছেন। যাতায়াতের জন্য বিকল্প কী ব্যবস্থা করা যায়, তা খতিয়ে দেখেছেন।

জলদাপাড়া: প্রবল জলোচ্ছ্বাসে জলদাপাড়ার হলং নদীর উপর কাঠের সেতু ভেসে গিয়েছে। তারপর কেটে গিয়েছে চারদিন। পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক হয়নি। দড়ি ধরেই চলছে হলং নদী পারাপার। যেন একটা দ্বীপের মধ্যে রয়েছে মাদারিহাট সরকারি ট্যুরিস্ট লজ, প্রকৃতিবীক্ষণ কেন্দ্র ও বনকর্মীদের কোয়ার্টার্স। গোটা এলাকা কাদায় এবং ডলোমাইটে লেপ্টে আছে। হাঁটু সমান কাদাতে কর্মীরা কাজ করে চলেছেন। কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরবে, জানেন না কেউই। অনির্দিষ্টকালের জন্য অতিরিক্ত বন্যপ্রাণ সহায়কের অফিস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কোনও কর্মী মুখ খুলতে চাইছেন না। টিভি৯ বাংলা কোমর জল পেরিয়ে দড়ি ধরে হলং নদী পেরিয়ে পৌঁছে গিয়েছিল ওই এলাকায়। কী কী ছবি ধরা পড়ল সেখানে?
বন্যা ও ধসে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গ। আলিপুরদুয়ারের জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আগামী ৯ অক্টোবর পর্যন্ত জলদাপাড়ায় বুকিং বন্ধ। কিন্তু, সেখানে যেসব কর্মী রয়েছেন, তাঁদের কী অবস্থা? হলং নদীর জলোচ্ছ্বাসে কাঠের সেতু ভেঙে গিয়েছে। ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থা কার্যত বিচ্ছিন্ন। নদীর ওপারে রয়েছে বন দফতরের কর্মীদের ২০টি কোয়ার্টার্স, AWLW (অ্যাসিস্ট্যান্ট ওয়াইল্ডলাইফ ওয়ার্ডেন) অফিস,মাদারিঘাট ট্যুরিস্ট লজ, টিকিট কাউন্টার, নেচার ইন্টারপ্রিটেশন সেন্টার। সেতু ভেঙে যাওয়ায় এখন বনদফতরের কর্মী ও পর্যটকরা দড়ি ধরে নদীর উপর দিয়ে পারাপার করছেন। মঙ্গলবার পর্যটন দফতর থেকে ইঞ্জিনিয়ার এসে মাপজোক করেছেন। যাতায়াতের জন্য বিকল্প কী ব্যবস্থা করা যায়, তা খতিয়ে দেখেছেন।

হলং নদীর উপর ক্ষতিগ্রস্ত এই কাঠের সেতু দেখতে এসেছিলেন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ মনোজ টিজ্ঞা। দড়ি ধরে ওপারে যাওয়ার চেষ্টা করলেন। কিন্তু জলের তীব্র স্রোতের জন্য তিনি ওপারে যেতে পারলেন না। তিনি বলেন, “খুব শীঘ্র এখানে ব্রিজ হওয়া দরকার। বন দফতর ও পর্যটন দফতরের দড়ি টানাটানি ব্রিজ হচ্ছে না। দুই দফতরের দড়ি টানাটানি না করে এখনই ব্রিজটি করা দরকার। বহু পর্যটক এখানে আসেন। মাদারিহাটের আয়ের উৎসই তো পর্যটন।”

দড়ি ধরে নদীর উপর দিয়ে চলছে পারাপার
৪৩ জন ট্যুরিস্ট লজের কর্মী, বনকর্মীদের পরিবার এবং অফিসের আধিকারিকরা এখন সংকটে। তাঁরা কার্যত দ্বীপে বাস করছেন। অফিসে নেই অতিরিক্ত বন্যপ্রাণী সহায়ক। কবে হলং নদীর উপর বিকল্প ব্যবস্থা হবে, কবে পর্যটকরা আবার মাদারিহাট ট্যুরিস্ট লজ, প্রকৃতিবীক্ষণ কেন্দ্রে ঢুকতে পারবেন, তা এখনও অজানা। সেতু ভেঙে যাওয়ার ফলে পর্যটকরা আসছেন না বলে জানালেন লজগুলির কর্মীরা। সেতু তৈরির কোনও উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না বলে তাঁদের অভিযোগ।
পর্যটন দফতরের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সুব্রত সরকার অবশ্য বলছেন, “আমরা এলাকা পরিদর্শন করেছি। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সব জানাব। এখন একটা অস্থায়ী ব্যবস্থা করা হবে। বন দফতরের সঙ্গেও আমরা কথা বলছি।” যাতায়াতের জন্য অস্থায়ী ব্যবস্থাটি দ্রুত করা হবে বলে তিনি জানান।
