AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Madhyamik Result 2025: প্রাইভেট টিউশন ছাড়াও সাফল্য সম্ভব… বাঁকুড়ার এই স্কুল চেনাল মাধ্যমিকের ‘পঞ্চরত্ন’

রাজ্যজুড়ে সার্বিকভাবে পাশের হার বেড়েছে। এ বারের মেধাতালিকায় রয়েছে ৬৬ জনের নাম। তার মধ্যে নজর কেড়েছে বাঁকুড়ার বিবেকানন্দ শিক্ষা নিকেতন হাইস্কুল। এই স্কুল থেকে মেধাতালিকায় জায়গা করে নিয়েছে এক, দুই নয়, মোট ৫ জন।

Madhyamik Result 2025: প্রাইভেট টিউশন ছাড়াও সাফল্য সম্ভব... বাঁকুড়ার এই স্কুল চেনাল মাধ্যমিকের 'পঞ্চরত্ন'
প্রাইভেট টিউশন ছাড়াও সাফল্য সম্ভব... বাঁকুড়ার এই স্কুল চেনাল মাধ্যমিকের 'পঞ্চরত্ন'Image Credit: নিজস্ব চিত্র
| Updated on: May 03, 2025 | 4:20 PM
Share

কলকাতা: সকলের জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা মাধ্যমিক। এই পরীক্ষার ফলাফল জীবনে ছাপ ফেলে। এ বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হয়েছিল ২২ ফেব্রুয়ারি। ৭০ দিনের মাথায় হল মাধ্যমিকের ফল প্রকাশ (Madhyamik Result)। ২০২৩ ও ২০২৪ সালের চেয়েও কম সময়ে এ বছর মাধ্যমিকের ফল প্রকাশিত হল। রাজ্যজুড়ে সার্বিকভাবে পাশের হার বেড়েছে। এ বারের মেধাতালিকায় রয়েছে ৬৬ জনের নাম। তার মধ্যে নজর কেড়েছে বাঁকুড়ার বিবেকানন্দ শিক্ষা নিকেতন হাইস্কুল। এই স্কুল থেকে মেধাতালিকায় জায়গা করে নিয়েছে এক, দুই নয়, মোট ৫ জন। বিগত কয়েক বছরে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে বাঁকুড়ার এই স্কুলের ফলাফল বেশ নজরে পড়ছে। এটি একটি সরকারি অনুমোদিত প্রাইভেট আনএইডেড স্কুল। মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশের দিন TV9 Bangla-র পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছিল বাঁকুড়ার বিবেকানন্দ শিক্ষা নিকেতন হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক তপনকুমার পতির সঙ্গে। স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের সাফল্যের কথা বলতে গিয়ে তপনকুমার পতির মুখে উঠে এল, বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে তাঁর মনোভাবও।

এক ঝলকে দেখে নিন বাঁকুড়ার বিবেকানন্দ শিক্ষা নিকেতন হাইস্কুল থেকে কোন কোন পড়ুয়া মেধাতালিকায় জায়গা করে নিয়েছে —

  • ষষ্ঠ স্থান দখল করেছে জ্যোতি প্রসাদ চট্টোপাধ্যায় (বাঁকুড়া বিবেকানন্দ শিক্ষা নিকেতন হাইস্কুল, প্রাপ্ত নম্বর ৬৯০)।
  • সপ্তম স্থানে অরিত্র দে (বাঁকুড়া বিবেকানন্দ শিক্ষা নিকেতন হাইস্কুল, প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৯)।
  • অষ্টম স্থান অর্জন করেছে শুভ্র সিনহা মহাপাত্র (বাঁকুড়া বিবেকানন্দ শিক্ষা নিকেতন হাইস্কুল, প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৮)।
  • দশম স্থান অর্জন করেছে বিবেকানন্দ শিক্ষা নিকেতন হাইস্কুলের দু’জন ছাত্র প্রিয়ম পাল ও তুহিন হালদার। এই দু’জনের প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৬।

স্কুলের গর্ব ‘পঞ্চরত্ন’-কে নিয়ে বলতে গিয়ে বাঁকুড়ার বিবেকানন্দ শিক্ষা নিকেতন হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন,  ‘এ বছর ৫ জন মেধাতালিকায় জায়গা করে নিয়েছে ঠিকই। তবে এই স্কুলের একটা ধারাবাহিকতা রয়েছে। এ বছর ফলাফল যাই হোক না কেন, আমার কাছে স্কুলের সামগ্রিক রেজাল্ট খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই যে ২২০ জন পরীক্ষা দিয়েছে, তাদের গড় প্রাপ্ত নম্বর ৮৩ শতাংশ। সেটাই আমার খুশির জায়গা।’

five students from Bankura Vivekananda Siksha Niketan High school got rank in Madhyamik result

বিবেকানন্দ শিক্ষা নিকেতন হাইস্কুলের ৫ কৃতী ছাত্র। (নিজস্ব চিত্র)

সময় যত এগোচ্ছে, পড়াশুনার ক্ষেত্রেও বদলের আঁচ পড়ছে। সেই আঁচ বিবেকানন্দ শিক্ষা নিকেতন হাইস্কুলেও পড়েছে। এই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কথায়, ‘স্কুলের পরিকাঠামোগত উন্নয়ন তো প্রতিনিয়ত হচ্ছে। শিক্ষক-শিক্ষিতা থেকে শুরু করে স্টাফের সংখ্যা বেড়েছে। একটা পূর্ণাঙ্গ রেভোলিউশন যদি বলি, সেই প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে আমরা যাই। আর সেই পরিবর্তন ইউনিট টেস্ট থেকে শুরু করে হাফ ইয়ারলি পরীক্ষা ও ফাইনাল পরীক্ষার মাধ্যমে করা হয়।’

তপনকুমার পতির কথায়, বিবেকানন্দ শিক্ষা নিকেতন হাইস্কুল সরকারি অনুমোদিত প্রাইভেট আনএইডেড স্কুল, কোনও রকম অর্থানুকুল্য সরকারের থেকে পাওয়া যায় না। তিনি বলেন, ‘আমাদের স্কুল সরকারি সাহায্য প্রাপ্ত স্কুল নয়। অর্থনৈতিক দিকটা পুরোপুরি ম্যানেজমেন্ট সামলাতে হয়।’

সম্প্রতি প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা চাকরিহারা হয়েছেন। বিবেকানন্দ শিক্ষা নিকেতন হাইস্কুলে কি তার প্রভাব পড়েছে? প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘এই স্কুলে যেহেতু সরকার বা বোর্ড নিয়োগ করে না, তাই কোনও চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকা নেই। বরং উল্টো ঘটনা ঘটেছে। এই স্কুল থেকে অন্য সরকারি স্কুলে গিয়েছেন, তেমন ৩জন শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরি গিয়েছে। সেটা খুব দুঃখের খবর। এটা আমি বলছি যে তাঁরা সত্যিই খুব ভালো শিক্ষক-শিক্ষিকা।’

যেহেতু সরকার বা বোর্ড ওই স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগ করে না, তা হলে কিসের ভিত্তিতে নিয়োগ হয়? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘খবরের কাগজে বিজ্ঞাপনের নিরিখে শিক্ষক-শিক্ষিকার নিয়োগ হয়। প্রথমে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। এরপর প্রয়োজন মতো বিষয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকার জন্য লিখিত পরীক্ষা হয়। সেখান থেকে কয়েকটা ধাপ পেরিয়ে ইন্টারভিউ নেওয়া হয়।’

প্রাইভেট টিউশনের বাড়বাড়ন্তের যুগে যে শুধু স্কুলের পড়াশুনার উপর ভর করেও ভালো ফল করা যায়, সেই প্রমাণ দেখিয়েছে বাঁকুড়ার বিবেকানন্দ শিক্ষা নিকেতন হাইস্কুলের তুহিন হালদার। সে এ বার মাধ্যমিক পরীক্ষায় দশম স্থান অর্জন করেছে। এই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কথায়, ‘স্কুলের যে ৫ জনের নাম মেধাতালিকায় এসেছে, তাদের ১ জন হস্টেলে থাকত। প্রাইভেট টিউশনের নাম করে বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করার চেষ্টা চলছে। আমার স্কুলের তুহিন কোথাও টিউশন পড়েনি। মাধ্যমিক পরীক্ষার আগের ২ মাসও স্কুলে পড়াশুনা করেছে তুহিন। ওর এই সাফল্য অনেক কিছু বলছে। তুহিন যেন আমাকে আরও সাপোর্ট করল যে, টিউশন ছাড়াও ভালো রেজাল্ট করা যায়। অরিত্র, জ্যোতিদের ৮০% উপস্থিতি দেখেছি ক্লাসে। স্কুল এডুকেশন খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমার স্কুলের অনেকে ক্লাস টেন অবধি কোনও টিউশন পড়েনি। এমন অনেকের কথাই মনে পড়ছে।’