Bankura News: ভূগোলে স্নাতক, ঝোলায় বিএড ডিগ্রি, হবু স্কুল শিক্ষিকা-ঘরের বউ এখন ফেরিওয়ালা!

Bankura News: সেই লক্ষে অবিচল বৃষ্টি নিজের পরিবারের নিদারুণ অভাব আর অনটনের সঙ্গে নিত্য লড়াই করে ভূগোলে স্নাতকোত্তর পাস করেন। সেরে ফেলেন বিএড প্রশিক্ষণও।

Bankura News: ভূগোলে স্নাতক, ঝোলায় বিএড ডিগ্রি, হবু স্কুল শিক্ষিকা-ঘরের বউ এখন ফেরিওয়ালা!
বাঁকুড়ায় হবু শিক্ষিকা ফেরিওয়ালা (নিজস্ব চিত্র)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 27, 2022 | 12:54 PM

বাঁকুড়া: ভূগোলে স্নাতকোত্তর সঙ্গে বি এড। সুযোগ পেলে তিনি অনায়াসেই কোনও স্কুলে আজ শিক্ষিকা হতে পারতেন। অন্য কোনও চাকরি পাওয়াটাও খুব একটা কঠিন ছিল না মেধাবী বৃষ্টির কাছে। কিন্তু চাকরির এই বাজারে সুযোগ আর জুটল কই? অগত্যা সংসারের হাল ধরতে বৃষ্টি এখন লোকাল ট্রেনের পরিচিত এক হকার।

বাঁকুড়ার ছোট্ট রেল স্টেশন পিয়ারডোবা। এই স্টেশনেই শীত, গ্রীষ্ম বর্ষা প্রতিদিন সাত সকালে বৃষ্টি আসেন। বৃষ্টি আসেন দু কাঁধে ভারী দুখানা ব্যাগ নিয়ে। দিনভর এ ট্রেন সে ট্রেনে দৌড়ে ফেরেন। লোকাল ট্রেনের মূলত মহিলা কামরায় ওঠানামা করে চলে ব্যবসা । দুপুর গড়িয়ে বিকেল নামলে ফের স্টেশন ছেড়ে ব্যাগ দুখানা কাঁধে ঝুলিয়ে বাড়ির দিকে রওনা দেওয়া। বাঁকুড়ার সাবড়াকোণ গ্রামের গৃহবধূ বৃষ্টি পালের এটাই এখন রোজনামচা। না! জীবনের ভূগোলে এমন পরিণতি হওয়ার কথা ছিল না বৃষ্টির। অভাবের সংসারে ছোট থেকেই মেধাবী বৃষ্টির লক্ষ ছিল শিক্ষিকা হওয়ার।

সেই লক্ষে অবিচল বৃষ্টি নিজের পরিবারের নিদারুণ অভাব আর অনটনের সঙ্গে নিত্য লড়াই করে ভূগোলে স্নাতকোত্তর পাস করেন। সেরে ফেলেন বিএড প্রশিক্ষণও। কিন্তু শিক্ষিকা হওয়ার প্রবেশপথই যে বন্ধ। দীর্ঘদিন ধরে এরাজ্যে বন্ধ শিক্ষক নিয়োগের স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষা। এদিকে বেসরকারি সংস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় স্বামী কাজ হারিয়েছেন। একমাত্র মেয়ে, শাশুড়ি আর প্রায় কর্মহীন স্বামীকে নিয়ে বৃষ্টির সংসার যে আর চলে না।

অগত্যা নিজের জেদ আর সাহসকে সম্বল করে হকারি শুরু করেন বৃষ্টি। মূলত মহিলাদের পোশাকই বৃষ্টির পণ্য। সংসারের যাবতীয় কাজকর্ম ও মেয়ের পড়ার পাঠ চুকিয়ে বৃষ্টি নিত্যদিন দুটি ব্যাগ ভর্তি পণ্য নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। সাবড়াকোণ থেকে বাসে করে পিয়ারডোবা স্টেশন। সেখান থেকে ট্রেনে ট্রেনে চলে হকারি। দিনশেষে আবার একই ভাবে ফিরে যান নিজের বাড়িতে। শিক্ষিকা হয়ে ওঠার স্বপ্ন ভাঙলেও জীবন যুদ্ধে হার না মানা মেয়েটা নিজের কাজের ফাঁকে গর্ব করে বলতে পারে কোনও কাজই ছোট নয়। বৃষ্টির এই লড়াইকে কুর্নিশ তাঁর পরিবারের।

বৃষ্টি বলেন, “আমার মতো এরকম অনেকেই লড়াই চালাচ্ছেন। সকালে উঠে ঘরের সব কাজ করে, বাচ্চাকে পড়িয়ে বের হই। আবার সন্ধ্যা-রাতে ফিরে আসি। আমি নিশ্চিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবই।”

আরও পড়ুন:  বগটুইয়ে তদন্তকারী সিবিআই কর্তাদের নিরাপত্তায় মোতায়েন সিআরপিএফ  জওয়ান