AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Bankura: DVC জল ছাড়ার আগেই কেন বন্যা পরিস্থিতি? সর্ষের মধ্যেই কি ভূত?

Bankura: পরিবেশবিদদের দাবি, পশ্চিমের জেলার সমস্ত নদী থেকে অবৈজ্ঞানিক ও অনিয়ন্ত্রিতভাবে বালি উত্তোলন করা হয় । বহু ক্ষেত্রে বেআইনিভাবে নদীগর্ভগুলি থেকে বালি তুলে পাচার করা হয়। ফলে নদী গর্ভের স্বাভাবিক স্রোত বদলে গিয়েছে বহু ক্ষেত্রে। বালি উত্তোলনের ফলে কিছুক্ষেত্রে নদীর নাব্যতা বাড়লেও বহু ক্ষেত্রে স্রোতের অভিমুখ বদলে যাওয়ায় নদীগুলিতে ভাঙন ও বন্যার মতো পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।

Bankura: DVC জল ছাড়ার আগেই কেন বন্যা পরিস্থিতি? সর্ষের মধ্যেই কি ভূত?
বন্যা পরিস্থিতি বাঁকুড়ায়Image Credit: TV9 Bangla
| Edited By: | Updated on: Jun 20, 2025 | 3:54 PM
Share

বাঁকুড়া: প্রতি বছর বর্ষাকালে প্লাবিত হয় একাধিক জেলা। বিভিন্ন জেলায় বন্যা পরিস্থিতির জন্য ডিভিসির সঙ্গে চাপানউতোর বাধে রাজ্যের। এবছর ডিভিসি জল ছাড়া শুরুর আগেই রাজ্যের একাধিক জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বর্ষার শুরুতেই কেন বন্যা পরিস্থিতি বাঁকুড়া-সহ পশ্চিমের জেলাগুলিতে? ভারী বৃষ্টি কি এর কারণ? নাকি অপরিকল্পিতভাবে কজওয়ে নির্মাণ ও অনিয়ন্ত্রিত ও অবৈজ্ঞানিক উপায়ে বালি উত্তোলনই দায়ী? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?

জুনের মাঝামাঝি বর্ষা আসে দক্ষিণবঙ্গে। এবছরও নিয়ম মেনে বর্ষা এসেছে। তবে বর্ষার শুরুতেই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বাঁকুড়া-সহ পশ্চিমের জেলাগুলিতে। দুকূল ছাপিয়ে বইছে দ্বারকেশ্বর, গন্ধেশ্বরী, কংসাবতী, শিলাবতী, জয়পন্ডা, দামোদর-সহ বিভিন্ন নদী। বর্ষার শুরুতেই কেন এমন হাল? বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, এ রাজ্যে বর্ষার শুরুতেই মেঘভাঙা বৃষ্টির ঘটনা একেবারে বিরল নয়। চলতি বছর গত মঙ্গলবার থেকে সেই মেঘ ভাঙা বৃষ্টিতে বাঁকুড়া জেলায় বৃষ্টি হয়েছে মোট ২৮২ মিলিমিটার। অতি কম সময়ে এই ভারী বৃষ্টির জল সরাসরি নেমে আসে নদীগুলিতে। তার ফলে নদীগুলিতে জলস্তরের উচ্চতা বৃদ্ধি পায়। কিছুক্ষেত্রে জল নদীর পাড় ছাপিয়ে ঢুকে পড়ে জলমগ্ন করে পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলিকে।

তবে প্রাকৃতিক এই কারণ ছাড়াও এই বন্যা পরিস্থিতির জন্য বিশেষজ্ঞরা দায়ী করছেন প্রশাসনের পরিকল্পনাহীনতাকেও। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, পশ্চিমের নদীগুলির উপর পরিকল্পনাহীন ভাবে বহু জায়গায় তৈরি করা হয়েছে নীচু সেতু বা কজওয়ে। নদীর অতীতে জল পরিবহণ ক্ষমতা যাচাই না করে নদীবক্ষে হাতে গোনা কিছু হিউম পাইপ দিয়ে তৈরি করা হয় এই কজওয়েগুলি। শুখা মরসুমে বিভিন্নভাবে জমে থাকা আবর্জনার স্তূপ বর্ষার প্রথম বৃষ্টিতে জলের তোড়ে ভেসে এসে বন্ধ করে দেয় হিউম পাইপগুলির মুখ। ফলে জল শুধু কজওয়েগুলির উপর দিয়ে বইতে শুরু করে তাই নয়, জলের স্বাভাবিক গতিপথ রুদ্ধ হয়ে গিয়ে নদীর জলস্তর বাড়তে শুরু করে। অনেকক্ষেত্রে সেই জল পাড় ছাপিয়ে ঢুকে পড়ে নদী তীরবর্তী গ্রামগুলিতে। তৈরি হয় বন্যা পরিস্থিতি।

বর্ষার শুরুতে এই বন্যার তৃতীয় কারণ হিসাবে পরিবেশবিদদের দাবি, পশ্চিমের জেলার সমস্ত নদী থেকে অবৈজ্ঞানিক ও অনিয়ন্ত্রিতভাবে বালি উত্তোলন করা হয় । বহু ক্ষেত্রে বেআইনিভাবে নদীগর্ভগুলি থেকে বালি তুলে পাচার করা হয়। ফলে নদী গর্ভের স্বাভাবিক স্রোত বদলে গিয়েছে বহু ক্ষেত্রে। বালি উত্তোলনের ফলে কিছুক্ষেত্রে নদীর নাব্যতা বাড়লেও বহু ক্ষেত্রে স্রোতের অভিমুখ বদলে যাওয়ায় নদীগুলিতে ভাঙন ও বন্যার মতো পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।

বাঁকুড়া খ্রিস্টান কলেজের ভূগোলের অধ্যাপক সুব্রত পান বলেন, “শুধু যে জলাধার থেকে জল ছাড়ার ফলে বন্যা হয়, তা নয়। এছাড়াও একাধিক কারণে বন্যা হয়। নদী থেকে অবৈজ্ঞানিকভাবে বালি তোলার ফলেও বন্যা হয়। অপরিকল্পিতভাবে কজওয়ে নির্মাণও একটা কারণ।” একই কথা বললেন পরিবেশবিদ জয়দেব চন্দ্রও। তাঁদের বক্তব্য, ডিভিসি অপরিমিতভাবে জল ছাড়লে বন্যা হয়। তবে বন্যার সেটাই একমাত্র কারণ নয়। প্রশাসনিক উদাসীনতাকেও দায়ী করেন তাঁরা।

পরিবেশবিদরা আরও বলছেন, নদীর সঙ্গে সংযুক্ত একাধিক খাল এখন বুজিয়ে ফেলা হয়েছে। কিংবা সেখানে আবর্জনা জমে গিয়ে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যে আর নদীর জল সেই খাল দিয়ে পাশ হচ্ছে না। তার ফলেও বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।