
বীরভূম: দীর্ঘ দেড় বছর কেটেছে তিহাড় জেলে। আর সেই ‘অন্ধকূপ’ থেকে মুক্তির পর প্রথম নির্বাচন অনুব্রত মণ্ডলের। যার জন্য প্রস্তুতি যে একেবারে তুঙ্গে তাতে কোনও সন্দেহই নেই। এমনকি, কেষ্টর সেই আত্মবিশ্বাস ধরা পড়ল তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চেও। সোমবার বীরভূমের দুবরাজপুর ব্লকের অন্তর্গত যশপুর গ্রামে আয়োজিত হয়েছিল বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠান। উপস্থিত ছিলেন অনুব্রত মণ্ডল, সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, বিকাশ রায় চৌধুরী-সহ একাধিক নেতা।
বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানে ভাষণ পর্বে কেষ্ট বললেন, ‘গত লোকসভা নির্বাচনে দুবরাজপুরের ১০টি এলাকা থেকে আমরা ২৬ হাজার লিড পেয়েছিলাম। কিন্তু এই বছর আপনাদের কাছে একটা অনুরোধ, আমরা যেন ৩৫ থেকে ৩৬ হাজার ভোট পাই। এই ব্যালট বাক্সের মাধ্যমে আমরা বিজেপিকে শিক্ষা দেব। ছাব্বিশের নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে আবার মুখ্যমন্ত্রী করব।’
গত নির্বাচনে অর্থাৎ ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে এই দুবরাজপুর কেন্দ্রে এগিয়ে ছিল বিজেপি। তবে এবার তা আর হবে না, বলেই দাবি কেষ্টর। তাঁর কথায়, ‘গত নির্বাচনে নানা কারণে ১৩ দিন সময় পাওয়া গিয়েছিল। আর সেই ১৩ দিনের প্রচারেই তৃণমূল ২৬ হাজার ভোট পেয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার যেটা মনে হয়, দুবরাজপুরের এই ১০টি অঞ্চল থেকে এবার বিপুল ভোটে জিতবে তৃণমূল। মা-বোনেরা আমাদের পাশে রয়েছেন।’
দুবরাজপুরের এই সম্মিলনীতে উপস্থিত ছিলেন বরাহনগরের তৃণমূল বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সেই মঞ্চ ভাষণ দিতে উঠে পরপর বিজেপির দিকে আক্রমণ শানালেন তিনি। বললেন, ‘আপনাদের মাথায় ওত কটা চুল নেই, যতগুলো প্রকল্প মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের রয়েছে।’ এরপরেই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে ‘মীরজাফর’ বলে কটাক্ষ করতে শোনা যায় তাঁকে। সায়ন্তিকা বলেন, ‘মুসলিম পরিবারে কোনও পুত্র সন্তান জন্মালে তার নাম যেমন মীরজাফর রাখা হয় না, হিন্দু পরিবারে পুত্র সন্তান জন্মালে তার নাম শুভেন্দু রাখা হয় না।’
প্রতি বছরের ন্যায় এই বছরও সময় মেপেই জেলায়-জেলায় শুরু হয়ে গিয়েছে তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠান। অবশ্য রাজনৈতিক মহল বলছে, চলতি বছরের বিজয়া সম্মিলনী একটু আলাদা। কারণ, ছাব্বিশের ভোট পূর্ববর্তী প্রচারের জন্য এটাই একটা ‘মেগা-মঞ্চ’। যেখান থেকে বাজানো হবে ভোটের বাদ্য়ি। কারা বাজাবেন? তা অবশ্য আগেই ঠিক করে দিয়েছিলেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়। এমনকি, কালীপুজো অবধি সম্মিলনীর ডেডলাইনও বেঁধে দিয়েছিলেন তিনি।