Dubrajpur Case: পরণে শুধু প্যান্টটুকুই, দু’টো শরীরে তখনও লেগে রং! উৎসবের দিনে এও ছিল কপালে?
Dubrajpur: কাঁদছেন মা, "এই জল আমার ছেলেকে কেড়ে নিল। আমি আর জল মুখে তুলব না।"
বীরভূম: রং খেলার পর স্থানীয় পুকুরে স্নান করতে গিয়েছিল দুই বন্ধু। সেখান থেকেই উদ্ধার হল তাঁদের দেহ। শুক্রবার দুবরাজপুর পুর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। জলজ্যান্ত দু’টো ছেলে সকাল থেকে হইহই করে রং খেলেছে। দুপুর গড়ানোর আগেই তাঁদের নিথর দেহ উদ্ধারের খবরে হতবাক পাড়ার লোকজন। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দুবরাজপুর থানার পুলিশ। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় শোকের ছায়া এলাকাজুড়ে।
এদিন দুবরাজপুরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে সিংয়ের পুকুরে স্নান করতে নেমেছিলেন দুই যুবক। একজনের নাম রকি দে, অন্যজন নবীন দাস। রকির বাড়ি ওই ওয়ার্ডেই। নবীন পাশের ওয়ার্ড ১৩ নম্বরের বাসিন্দা। রকি, নবীন দু’জনই বন্ধু। রং খেলার পর একইসঙ্গে পুকুরেও যান স্নান করতে। দোলের দুপুর। আরও বহু মানুষের ভিড় ছিল পুকুরে। রকি, নবীনকে কমবেশি এলাকার সকলেই চেনেন। কয়েকজনের সঙ্গে কথাও হয়। এরইমধ্যে হঠাৎ দু’জন চোখের আড়াল হয়ে যান। শুরু হয় খোঁজ। এলাকার লোকজনই সাঁতরে তাঁদের খোঁজার চেষ্টা করেন। খবর দেওয়া হয় থানাতেও। এরপরই পুকুর থেকে দুই যুবকের অসাড় দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
সঙ্গে সঙ্গে দুবরাজপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁদের। কিন্তু ততক্ষণে দেহ থেকে বেরিয়ে গিয়েছে প্রাণ! চিকিৎসকেরা দুই যুবককেই মৃত বলে ঘোষণা করেন। হাসপাতালের বেডে শোওয়ানো দুই দেহে তখনও দোলের রং! দু’জনেরই আদুল গা। চোখ মুখের এতটুকু বিকৃতি হয়নি। দেখে মনে হচ্ছে যেন ঘুমিয়ে রয়েছে। ছেলেদের মৃত্যুসংবাদ পেয়ে হাসপাতালে ছুটে এসেছেন বাড়ির লোকজন। একজনের মা হাসপাতালের সামনের চাতালে পড়ে আছাড়িবিছাড়ি করছেন। চিৎকার করে কাঁদছেন আর বলছেন, “এই জল আমার ছেলেকে কেড়ে নিল। আমি আর জল মুখে তুলব না।” কঠিন সেই দৃশ্য চোখ ঝাপসা করে দিচ্ছে এলাকার আশেপাশের লোকজনের।
খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যান দুবরাজপুরের সিআই মাধবচন্দ্র মণ্ডল, দুবরাজপুর থানার ওসি আফরোজ হোসেন, দুবরাজপুর পুরসভার চেয়ারম্যান পীযুশ পাণ্ডে। পীযুশ পাণ্ডে বলেন, “আমাদের ১৩ ও ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের দু’টি ছেলে রং খেলার পর সিংয়ের পুকুরে স্নান করতে গিয়েছিল। একসঙ্গে অনেকেই স্নান করছিল সেখানে। হঠাৎ করে দেখে দু’জন নেই। এরপরই খোঁজ শুরু হয়। পরে দেখা যায় ছেলে দু’টো জলের নীচে পড়ে রয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু বাঁচানো যায়নি। কতই বা বয়স ওদের। বড় জোর ১৭-১৮ বছর বয়স। একটা আনন্দের দিনে, এমন ঘটনা ভাবতেই পারছি না। দু’টো তরতাজা যুবক এভাবে চলে গেল! ওদের মা, বাবা এসেছেন হাসপাতালে।”
আরও পড়ুন: Unnatural Death: বাড়িতে থাকেন না স্বামী, ‘নিঃসঙ্গ’ যুবতী বউয়ের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক সব অভিযোগ…