হোটেলে যুবতীর রক্তাক্ত নগ্ন দেহ, চিরকূটে লেখা ‘তোকে আমি মারতে চাইনি, বাধ্য হলাম’

পুলিসের প্রাথমিক অনুমান, ওই যুবক যুবতী হোটেলের ঘরে মদ্য়পান করেন। সে সময় কোনও কিছু নিয়ে নিজেদের মধ্যে বচসা হয়। এর জেরেই মদের বোতল দিয়ে ওই যুবতীকে আঘাত করেন অমিত। যুবতীর মুখে, শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ক্ষতচিহ্ন রয়েছে।

হোটেলে যুবতীর রক্তাক্ত নগ্ন দেহ, চিরকূটে লেখা 'তোকে আমি মারতে চাইনি, বাধ্য হলাম'
এই হোটেল থেকেই মৃতদেহটি উদ্ধার করে পুলিস।
Follow Us:
| Updated on: Dec 23, 2020 | 4:49 PM

কলকাতা: হোটেল থেকে উদ্ধার যুবতীর নগ্ন রক্তাক্ত দেহ। নিউ টাউনের ডিডি ব্লকের ঘটনা। বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই এই খুন বলে পুলিসের প্রাথমিক অনুমান। মঙ্গলবার দুপুরে এক যুবকের সঙ্গে হোটেলে ওঠেন মেদিনীপুরের ওই যুবতী। রাতে সেই হোটেলের ঘর থেকেই উদ্ধার হয় তাঁর নিথর দেহ। হোটেলের কর্মীরা ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে ঘরের দরজা খুলে দেখেন, খাটের উপর শোওয়ানো রয়েছে মেয়েটির রক্ত মাখা নগ্ন দেহ। সাদা চাদরে মোড়ানো। টেকনো সিটি থানার পুলিস গিয়ে দেহটি উদ্ধার করে। চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছিল ওয়াইনের বোতলের ভাঙা অংশ। মদ খেয়ে বচসার পরই এই খুন বলে পুলিসের প্রাথমিক অনুমান। যুবতীর সারা শরীরে একাধিক ক্ষতচিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। একইসঙ্গে ঘর থেকে একটি কাগজ পাওয়া গিয়েছে। তাতে লেখা, ‘তোকে আমি মারতে চাইনি। কিন্তু মারতে বাধ্য হলাম।’

আরও পড়ুন: নোয়াপাড়া-দক্ষিণেশ্বর মেট্রোর ট্রায়াল রান শুরু

পুলিস সূত্রে খবর, মঙ্গলবার দুপুরে অমিত ঘোষ নামে এক যুবক ওই মহিলাকে নিয়ে ডিডি ব্লকের ওই হোটেলটিতে আসেন। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেন দু’জনই। নিজেদের স্বামী, স্ত্রী বলে পরিচয়ও দেন। সন্ধে সাড়ে সাতটায় হোটেলের ঘর ছেড়ে দেওয়ার কথা ছিল তাঁদের। কিন্তু সে সময় পার করে গেলেও কেউ দরজা খোলেননি। এরপরই অমিতকে ফোন করা হয় হোটেলের রিসেপশন থেকে। বারবার রিং হয়ে গেলেও তা ধরেননি। এরপরই হোটেল কর্মীরা ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে ঘরের দরজা খুলতেই চোখ কপালে ওঠে। খাটের উপর শোওয়ানো সাদা ধবধবে চাদরে মোড়ানো মৃতদেহ। সঙ্গে সঙ্গে থানায় খবর দেওয়া হয়।

বিছানায় এভাবেই পড়ে ছিল দেহটি।

হোটেল কর্মীদের কথায়, অমিত ঘোষ সন্ধের মুখে হোটেল থেকে বেরোন। কিন্তু তাঁকে কেউ ফিরতে দেখেননি। পুলিসের প্রাথমিক অনুমান, ওই যুবক যুবতী হোটেলের ঘরে মদ্য়পান করেন। সে সময় কোনও কিছু নিয়ে নিজেদের মধ্যে বচসা হয়। এর জেরেই মদের বোতল দিয়ে ওই যুবতীকে আঘাত করেন অমিত। যুবতীর মুখে, শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। হোটেলের রেজিস্টার বুক দেখে দু’জনের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে পুলিস। এরপরই থানায় আসে মৃতের স্বামী ও পরিবার।

অভিযুক্ত যুবক অমিত ঘোষ।

সেখান থেকেই নতুন মোড় নেয় এই খুনের ঘটনা। নিহত যুবতীর দাদা পুলিসকে জানিয়েছেন, চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিউ টাউনের হোটেলে তাঁর বোনকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিলেন অমিত। মঙ্গলবার বোন সে কথা বলেই বাড়ি থেকে বের হন। একটি বেসরকারি সংস্থায় রিসেপশনিস্টের চাকরি পাবেন বলে দাদাকে জানিয়েছিলেন তিনি। জানা যায়, অমিত কলকাতার একটি হোটেলে কাজ করেন। বাড়ি ঝাড়গ্রামের রগড়ায়। ফেসবুকে বিবাহিত ওই যুবতীর সঙ্গে আলাপ। মৃতের স্বামী জানান, দাদার বিয়ে উপলক্ষে কয়েকদিন আগেই সাঁত্রাগাছিতে বাপের বাড়ি গিয়েছিলেন স্ত্রী। পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিস।

মঙ্গলবার নিউ টাউনের ওই হোটেলে ওঠেন তাঁরা। স্বামী, স্ত্রী পরিচয় দেন। অভিযোগ, হোটেলের ঘরে দু’জন মদ্য়পান করছিলেন। সেই সময় কিছু নিয়ে বচসা বাধে। এরপরই ওয়াইনের বোতল ভেঙে খুন করা হয় ওই যুবতীকে। অভিযুক্ত যুবক পলাতক। তবে হোটেলের ঘরটি থেকে বেশ কিছু জিনিস উদ্ধার হয়েছে। আরজি কর হাসপাতালে মৃতদেহটি ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। সিসিটিভির ফুটেজ দেখে তদন্ত এগোচ্ছে। অভিযুক্ত পলাতক।