নয়া দিল্লি: বাবুল সুপ্রিয়র পর এ বার কে? বঙ্গ বিজেপির (BJP Bengal) আনাচে-কানাচে, ও রাজ্য রাজনীতির আঙিনায় ঘুরঘুর করে চলেছে এই প্রশ্নটাই। এরই মধ্যে মঙ্গলবার জল্পনা আচমকাই বড় আকার ধারণ করেছে। কারণ, তৃণমূল সাংসদ সুনীল মণ্ডলের পাশাপাশি বিজেপির দুই নেতার নিরাপত্তাও প্রত্যাহার করে নিচ্ছে কেন্দ্র (Home Ministry)। কয়েক ঘণ্টা আগেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের পক্ষ থেকে একটি চিঠি দিয়ে রাজ্য সরকারকে এই বিষয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর নিরাপত্তা প্রত্যাহারের তালিকায় থাকা নেতাদের মধ্যে রয়েছেন প্রাক্তন তারকা ক্রিকেটার তথা ময়নার বিধায়ক অশোক দিন্দাও (Ashoke Dinda)!
পূর্ব বর্ধমানের সাংসদ সুনীল মণ্ডল অঘোষিতভাবেই ঘর ওয়াপসি ঘটিয়েছেন। তিনি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন ঠিকই। কিন্তু ভোটের পর হাওয়ার সঙ্গে নিজেও ঘুরে গিয়েছেন। আজকাল তিনি বলেন, ‘আমি তো তৃণমূলেই ছিলাম।’ যদিও সংবাদ মাধ্যমের ক্যামেরার সামনেই তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। এরপর কেন্দ্রীয় নিরাপত্তাও পান। যা কিনা ভোটের আগে বিজেপিতে যোগ দিলেই পাওয়া যাচ্ছিল। কিন্তু বিজেপির হয়ে সক্রিয় ছিলেন না সুনীল। গত রবিবার বাবুল সুপ্রিয়র প্রথম সাংবাদিক বৈঠক যে হোটেলে হয়, সেখানেই তাঁকে দেখতে পাওয়া যায়। রাজনৈতিক মহল বলছে, ঢাকঢোল বাজিয়ে দল পরিবর্তন করলেও ঘরে ফেরার কাজটা সম্ভবত তিনি নিশ্চুপেই করেছেন। ফলে তাঁর নিরাপত্তা প্রত্যাহারের ঘটনায় অবাক হওয়ার কিছুই নেই।
কিন্তু যাঁর নিরাপত্তা প্রত্যাহার রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল ফেলে দিয়েছে, তিনি মেদিনীপুরের ভূমিপুত্র তথা ময়নার বিধায়ক অশোক দিন্দা। তাঁরও নিরাপত্তা ফিরিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক রাজ্য সরকারকে জানিয়ে দিয়েছে। ফলে একটা প্রশ্ন উঠছে প্রত্যাশিতভাবেই। কেনই বা নিরাপত্তা কেড়ে নেওয়া হল দিন্দার? তাহলে কি তাঁর সঙ্গেও শীর্ষ নেতৃত্বের কোনও মনোমালিন্য হয়েছে? বা দিন্দা দল ছাড়তে পারেন, এমন কোনও ইঙ্গিত কি দিল্লির নেতাদের কাছে পৌঁছে গিয়েছে? প্রশ্নগুলো কোনও ভাবেই ফেলে দেওয়ার মতো নয়।
আরও পড়ুন: Coal Scam Case: দিল্লি হাইকোর্টে ধাক্কা অভিষেকের, ইডি-র সমনে স্থগিতাদেশ দিল না আদালত
সুনীল ও অশোক ছাড়াও আরও এক বিজেপি নেতার নিরাপত্তা প্রত্যাহার করছে কেন্দ্র। তিনি হলেন শান্তিপুরের প্রাক্তন বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্য। চলতি বছরের শুরুতেই তৃণমূল ছেড়ে তিনি বিজেপিতে নাম লিখিয়েছেন। ফলে যে উল্টো স্রোত ইদানীং রাজ্য রাজনীতির খাতে বইছে, তিনিও সেই গতিপথেই বইবেন কিনা, অর্থাৎ পুরনো দলে ফিরে আসবেন কিনা, সেই জল্পনা তীব্রতর হয়েছে। তবে এই তিনটি নামের মধ্যে অশোক দিন্দার নামটাই যে চমকে দেওয়ার যথেষ্ট, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে সাংসদ এবং বিধায়কদের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা ফিরিয়ে নেওয়া হলেও রাজ্য সরকার তাঁদের নিরাপত্তা দেবে বলেই জানা যাচ্ছে।