AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Chandrayaan-3 Moon Landing: চন্দ্রযানেও ছোঁয়া বাঙালির, সাফল্যের আশায় প্রহর গুনছে তিন কৃষক পরিবার

Chandrayaan-3 Moon Landing: গোটা দেশ প্রার্থনা করছে সাফল্য কামনায়। কিন্তু জানেন এই কঠোর পরিশ্রম যাঁরা করছেন সেই সকল বিজ্ঞানীদের মধ্যে রয়েছেন বাংলার ছেলেরাও। দেশ তো বটেই পাশাপাশি ছেলের সাফল্য কামনায় প্রহর গুনছেন পরিবারের লোকজনও।

Chandrayaan-3 Moon Landing: চন্দ্রযানেও ছোঁয়া বাঙালির, সাফল্যের আশায় প্রহর গুনছে তিন কৃষক পরিবার
একদম বাঁ দিকে চন্দ্রকান্ত কুমার, তারপর বিজয় কুমার দাই, শেষে নীলাদ্রি মৈত্র Image Credit: Tv9 Bangla
| Edited By: | Updated on: Aug 23, 2023 | 1:54 PM
Share

দীপঙ্কর দাস, সনৎ মাঝি, হিমাদ্রী মণ্ডল

হুগলি, বীরভূম, উত্তর ২৪ পরগনা: কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। তারপরই আসতে চলেছে মাহেন্দ্রক্ষণ সন্ধে ৬টা ৪ মিনিট। গোটা দেশ তাকিয়ে রয়েছে চন্দ্রযান-৩ এর অবতরণের অপেক্ষায়। সব ঠিকঠাক থাকলে, চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফ্ট ল্যন্ডিং হবে চন্দ্রযান-৩ এর। গোটা দেশ প্রার্থনা করছে সাফল্য কামনায়। কিন্তু জানেন এই কঠোর পরিশ্রম যাঁরা করছেন সেই সকল বিজ্ঞানীদের মধ্যে রয়েছেন বাংলার ছেলেরাও। দেশ তো বটেই পাশাপাশি ছেলের সাফল্য কামনায় প্রহর গুনছেন পরিবারের লোকজনও।

ইসরোর বিজ্ঞানী নীলাদ্রি মৈত্র। বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার মছলন্দপুরে। নীলাদ্রিবাবুর মা-বাবা এখন অপেক্ষা করছেন কখন ৬টা বাজবে। চন্দ্রযান অভিযানে বাঙালি এই বিজ্ঞানীর ভূমিকা রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে নীলাদ্রিবাবুর বাবা-মা রয়েছেন তাঁরই সঙ্গে। তবে তাঁর পুরনো বাড়িতে রয়েছেন কাকা-কাকিমা।

নীলাদ্রি মৈত্রর পরিবার জানাচ্ছে ছোট থেকেই বইয়ে মুখ গুঁজে করে রাখতেন। বাবা-কাকারা চাষবাস করেই জীবিকা নির্বাহ করতেন। একদিন নাকি নীলাদ্রি কাকার কাছে আবদার করেছিলেন সাইকেল চড়াতে হবে। কিন্তু পিছনের চাকায় তাঁর পায়ের গোড়ালি ঢুকে গিয়েছিল। সেই স্মৃতিতে আজও বিদ্ধ হন কাকা। পরিবার জানতে পেরেছে পুজোয় নীলাদ্রি মছলন্দপুরে ফিরবেন। তাই এখানকার মানুষ এখন অপেক্ষা করছেন বাড়ি ফিরে আসার। নীলাদ্রিবাবুর কাকা বলেন, “আমরা খুবই গর্বিত। ভাল লাগছে ঘরের ছেলে বিজ্ঞানী। আমরা খুবই গর্বিত।”

তবে শুধু নীলাদ্রি মৈত্র নন, রয়েছেন বীরভূমের প্রত্যন্ত গ্রামের বাসিন্দা বিজয় কুমার দাই। এখন প্রত্যন্ত গ্রামের সেই ছেলেটাই অংশ নিয়েছেন চন্দ্রযানের উৎক্ষেপনে।

তফশিলি দরিদ্র কৃষক পরিবারে জন্ম নিয়েছিলেন বিজয়। দারিদ্রতাকে জয় করে তাঁর বিশ্বজোড়া খ্যাতির কর্মকাণ্ডে গর্বিত বিজয়ের বাবা-মা ও তাঁর গ্রামের মানুষজন। চন্দ্রযান ২ সফল না হলেও চন্দ্রযান ৩ সফলভাবে চাঁদের মাটিতে অবতরণ করবে বলে আশা বিজয় কুমার দাই এর বাবা ও মায়ের।

২০০০ সালে বীরভূমের মল্লারপুর থানার দক্ষিণগ্রাম জগততারিণী বিদ্যায়তন থেকে ৮৯ শতাংশ নম্বর নিয়ে মাধ্যমিক পাশ করেন বিজয় কুমার দাই। উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন বেলুড় রামকৃষ্ণ মঠ থেকে। তারপর কল্যানী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার ডিগ্রি লাভ করেন। তারপরেই চাকরি পেয়ে যান ইসরোতে। সেখানেই চন্দ্রযান ২ এবং চন্দ্রযান ৩ উৎক্ষেপণে অংশগ্রহণ করেন তিনি। বিজয় কুমার দাই-এর এই সাফল্যে খুশি দক্ষিণগ্রামের মানুষজন। খুশি শিক্ষকরাও। বিজয়বাবুর বাবা নারায়ণ চন্দ্র দাই বলেন, “দুমাস আগে এসেছিল। আমার বাড়িতে সাতদিন ছিল। খুব ব্যস্ত থাকে বলে ফোন করি না।”

আরও দুই বঙ্গ সন্তান চাকরি করছেন ইসরোতে। চন্দ্রযান ৩-এর সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত না হলেও তাঁরা ইসরোর জয়েন্ট সেক্রেটারি পদে কর্মরত। একজন হলেন চন্দ্রকান্ত কুমার ও তাঁর ভাই শশিকান্ত কুমার।পরিবার বলেছে, চন্দ্রযান-২ এর যোগাযোগের অ্যান্টেনার ডিজাইনের দায়িত্ব ছিলেন চন্দ্রকান্ত। এবার সরাসরিভাবে তাঁর যোগাযোগ নেই কিন্তু পরোক্ষভাবে যুক্ত রয়ছেন চন্দ্রকান্ত।

চন্দ্রকান্ত কুমার ও শশিকান্ত কুমারের বাবা মধুসূদন কুমার এখনও কৃষিকাজ করেন। বছর আটষট্টির কাছাকাছি। গত জানুয়ারীতে গ্রামের বাড়িতে পরিবার নিয়ে এসেছিলেন চন্দ্রকান্ত। প্রায় প্রতিদিনই ছেলেদের সঙ্গে কথা হলেও গবেষণা নিয়ে কোনও কথা হয় না বলে জানান মধুসূদন বাবু। মধুসূদনবাবু বলেন, “ও যে ওখানে রয়েছে এতেই আমি গর্বিত। সারা ভারত ওর জন্য গর্বিত। আর বাবা হিসাবে গর্বিত হবই।”