Mihir Goswami: ‘রাজ্যের মন্ত্রী সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিচ্ছেন, নির্বাচন কমিশন যেন ধৃতরাষ্ট্র’, বিস্ফোরক বিজেপি বিধায়ক!
WB By-Poll 2021: রাজ্যের মন্ত্রীর এ হেন মন্তব্যে যে 'সাম্প্রদায়িক উস্কানি' কাজ করছে এমনটাই দাবি বিজেপি বিধায়কের। অন্যদিকে, বঙ্গে উপনির্বাচন না পুরভোট আগে হবে তা নিয়ে বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই শাসক-বিরোধী 'টাগ অব ওয়ার' শুরু হয়েছিল।
কোচবিহার: পুজোর পরেই ফের নির্বাচনমুখী বঙ্গ। আগামী ৩০ অক্টোবর বঙ্গে রয়েছে উপনির্বাচন (West Bengal By-poll 2021)। সেই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রচারে রাজনৈতিক দলগুলি। এদিকে, দিনহাটায় বিজেপি প্রার্থী অশোক মণ্ডলের প্রচারে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ঘটনায়, সরাসরি তৃণমূল নেতা উদয়ন গুহ-সহ রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim) ও নির্বাচন কমিশনকে (Election Commission) তোপ দাগলেন বিজেপি বিধায়ক মিহির গোস্বামী।
মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করে মিহির বলেন, “এখানে এসে রাজ্যের মন্ত্রী সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিচ্ছেন। নির্বাচন কমিশন এসব দেখতে পাচ্ছে না। এখন কমিশন ধৃতরাষ্ট্র হয়ে গিয়েছে। আমাদের প্রার্থী প্রচারে গিয়ে বাধা পেয়েছেন। উদয়ন গুহর নির্দেশে শারীরিকভাবে নির্যাতন করছে তৃণমূল। কিন্তু, পুলিশ কিছু করছে না। নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করেও কোনও লাভ হয়নি। কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। পরপর আমাদের প্রচারে বাধা দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার সকালেও একই ঘটনা। আমরা ফের নির্বাচন কমিশনের কাছে যাব। ফের অভিযোগ জানাব। ”
এখানেই থামেননি বিজেপি বিধায়ক। তিনি আরও বলেন, “রাজ্যে আইনের কোনও শাসন নেই। এখানে শাসক ভোট করায়। তাই ভোটদান কতটা গণতন্ত্র মেনে হবে তা নিয়ে আমার সন্দেহ রয়েছে। রাজ্য জুড়ে সন্ত্রাস চলছে। নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ, নির্বাচন আবহে এই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করুন।”
উল্লেখ্য, রবিবারই দিনহাটায় প্রচারে আসেন রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। প্রচার মঞ্চ থেকে তিনি কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। কটাক্ষ হেনে বলেন, “এখানকার নেতা একজন অনুপ্রবেশকারী। সেই নেতা নিশীথ প্রামাণিক এখন নিজেকে বাঁচাতে মোদীর পায়ে গড়াগড়ি দিচ্ছেন। আর কেন্দ্রের সেই প্রধানমন্ত্রী গোটা দেশ তো বেচে দিয়েইছে, এখন বলছে সীমান্তেও নাকি বিএসএফরা আরও বেশি এলাকা জুড়ে পাহারা দেবে। বিএসএফ তো চোর বটেই এ বার আরও বেশি চুরি করবে। আগে মায়েরা বাচ্চাদের ভয় দেখাতে বলতেন, ‘সো যা বেটা নেহি তো গব্বর আ যায়েগা’ আর এখন মায়েরা বলেন, ‘সো যা বেটা নেহি তো মোদী আ জায়েগা।’ ”
কিছু সময় আগে নাগরিকত্ব ইস্যুকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের নাগরিকত্ব নিয়ে একটি বিতর্ক সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশের এক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়, নিশীথ ভারতের মন্ত্রী হয়ে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করেছেন। নীচে অবশ্য উল্লেখ করা হয়, নিশীথের পূর্বপুরুষ বাংলাদেশের বাসিন্দা। কিন্তু নিশীথের জন্ম, বেড়ে ওঠা সবই ভারতে। তিনি পরিপূর্ণভাবেই ভারতের নাগরিক। তবে, এই একটিমাত্র উক্তির জেরে বিতর্ক কম হয়নি। নিশীথের নাগরিকত্বকে কেন্দ্র করে বিস্তর জলঘোলাও হয়।
রাজ্যের মন্ত্রীর এ হেন মন্তব্যে যে ‘সাম্প্রদায়িক উস্কানি’ কাজ করছে এমনটাই দাবি বিজেপি বিধায়কের। অন্যদিকে, বঙ্গে উপনির্বাচন না পুরভোট আগে হবে তা নিয়ে বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই শাসক-বিরোধী ‘টাগ অব ওয়ার’ শুরু হয়েছিল। অবশেষে, উপনির্বাচনই আগে হবে বলে জানায় কমিশন। শুধু তাই নয়, ভবানীপুরে আগেই উপনির্বাচন যাতে সুষ্ঠুভাবে হয় সেদিকেও ‘বিশেষ নজর’ ছিল কমিশনের। খোদ রাজ্যের মুখ্যসচিব হরেকৃষ্ণ দ্বিবেদীর ‘বিশেষ অনুরোধেই’ যে এই সিদ্ধান্ত তা জানিয়েছিল কমিশন। যদিও, কমিশনের এই সিদ্ধান্তে ‘খুশি’ হতে পারেনি গেরুয়া শিবির।
খোদ বিজেপির সর্ব ভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ নির্বাচন কমিশনকে তোপ দেগে বলেছিলেন, “কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভোটে জিতিয়ে বিধায়ক করে মুখ্যমন্ত্রী পদে রেখে দিতে চাইছে। আইন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। প্রয়োজনে আদালতের দ্বারস্থ হবে বিজেপি। নির্বাচন কমিশন পক্ষপাত-দুষ্ট কিনা, তাও আমরা দেখছি। কমিশন বলছে, এই মুহূর্তে রাজ্যে নির্বাচন করানোর মতো পরিস্থিতি নেই। অথচ কেন্দ্র নির্বাচন কমিশন উপনির্বাচন করার কথা ঘোষণা করে দিল।” ফের বিজেপি বিধায়ক মিহির গোস্বামীর মন্তব্য়ে উপনির্বাচন নিয়ে বিজেপির অসন্তোষের ছবি সামনে এল বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
আরও পড়ুন: Child Death: ‘ছেলেটার মুখও দেখতে পারলাম না…’ ২৪ ঘণ্টা না পেরতেই হাসপাতালেই মৃত্যু সদ্যোজাতর!