কোচবিহার: ফের বিতর্কের কেন্দ্রে উদয়ন গুহ (Udayan Guha)। এ বার সরাসরি TV9 বাংলার প্রতিনিধিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় হুমকি দিলেন দিনহাটার তৃণমূল (TMC) নেতা উদয়ন গুহর ভাইপো জয় গুহ। স্পষ্ট লিখলেন, ‘ভয়ঙ্কর খেলা হবে, ওয়েট, গৌরী লঙ্কেশের মতো অবস্থা হবে।’ সোশ্য়াল মিডিয়ায় এভাবে সরাসরি সাংবাদিককে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা।
সাংবাদিক অমৃতা দে চন্দের অভিযোগ, সোশ্যাল মিডিয়ায় (Facebook) আচমকাই একটি পোস্ট দেন তৃণমূল নেতা তথা দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহর ভাইপো জয় গুহ। তাতে তিনি লেখেন, “দিনহাটার কোনও এক মহিলা সাংবাদিক দেশের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর প্রেমে পড়েছে। সূত্র তাই বলছে। ” এই পোস্টটি শেয়ার করার পরেই অমৃতা কমেন্টবক্সে লেখেন, “যেহেতু দিনহাটায় আমিই একমাত্র মহিলা সাংবাদিক তাই এই কথাটি কি আমায় নিয়ে বলা?” সেই মুহূর্তে পোস্টে মহিলা সাংবাদিকের নাম না প্রকাশ করলেও অমৃতার সঙ্গে কার্যত বাক-যুদ্ধে জড়ান অভিযুক্ত জয়। সেই থেকে বিরোধ। কমেন্ট বক্সেই একসময় অমৃতার উদ্দেশে জয় মন্তব্য করেন, “ভয়ঙ্কর খেলা হবে wait করো হয়তো খবর করার জন্য সময়টুকু পাবে না !! গৌরী লস্করের কথা মনে আছে তো?”
এরপরেও থামেনি বাক-যুদ্ধ। অমৃতা স্পষ্টই তৃণমূল নেতার উদ্দেশে লেখেন, “ভুল পথ অবলম্বন করেছ নেতা হওয়ার। শোনো পরিষ্কার বলছি …আমি আমার কাজ করি…”নিশীথের খবর করি” …ভবিষ্যতেও করবো… এতে তোমার খারাপ লাগলেও আমার কিচ্ছু যায় আসে না…..আমি আমার অফিসের কাজ করি কারো কেনা গোলাম নই আমি…তাই এসব বিভ্রান্তি মূলক পোস্ট করে নিজেকে হাইলাইট করে নেতা হওয়ার চিন্তা মাথা থেকে বের করো। ..আমার থেকে অনেক বড় তুমি…এর পর আর সময় নেই নিজেকে establish করার। আর এরপর লজ্জা থাকলে এসব কথা কোনো সাংবাদিকের নামেই লিখবে না। এটা আমার ওয়ার্নিং ভাবতে পারো।”
এমনকী সোশ্যাল মিডিয়াতেই অভিযুক্ত নেতাকে সরাসরি ওই মহিলা সাংবাদিকের নাম প্রকাশ্যে আনতেও বলেন অমৃতা। যদিও, অভিযুক্ত জয় সেই নাম সামনে না এনে লেখেন, “আমি ওই মহিলাকে আরও একবার সুযোগা দিতে চাই।” প্রকাশ্য়ে কোনও সাংবাদিকের উদ্দেশে এভাবে সোশ্য়াল মিডিয়ায় প্রচ্ছন্ন হুমকি দেওয়ার ঘটনায় কার্যত সংবাদমাধ্য়মের তোপের মুখে পড়েছেন জয়। তবে, এ প্রসঙ্গে উদয়ন গুহকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। অভিযুক্ত জয় গুহরও কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। ঘটনায় দিনহাটা থানার সাইবার ক্রাইম শাখায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন অমৃতা।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর, বন্দুকবাজদের হামলায় বেঙ্গালুরুতে নিজের বাড়ির সামনেই তিন-তিনটি বুলেট বিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় ‘সাহসী সংবাদিক’ বলে পরিচিত গৌরী লঙ্কেশের। গৌরী লঙ্কেশ হত্যার ন’মাস পর কর্নাটকের বিশেষ তদন্তকারী দল যে চার্জশিট পেশ করে, তাতে ধৃত নবীন কুমারের ১২ পাতার জবানবন্দি লিপিবদ্ধ ছিল। ধৃত নবীন কুমার জানায়, ‘‘হিন্দু বিরোধী হওয়ায় গৌরীকে প্রাণ দিতে হয়েছে।’’
আরও পড়ুন: Suvendu Adhikari: ‘লন্ডন থেকে ভবানীপুরে টেমস এনেছেন মাননীয়া’, জলযন্ত্রণায় মমতাকে তোপ শুভেন্দুর!
আরও পড়ুন: Congress: সত্যি হল অধীরের আশঙ্কা! ‘হাত’ ছাড়লেন মইনুল