পাখির চোখ উত্তরবঙ্গ, টিকিট পেলেন না মন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা, একুশের ভোটে নেই শঙ্করও
দক্ষিণ দিনাজপুরে নতুন দুই প্রার্থী ঘোষণা করল তৃণমূল (TMC), কেন বাদ গেলেন ১৬'র ভোটে লড়াই করা দুই প্রার্থী?
বালুরঘাট: শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করে বাংলার ২৯৪ আসনের মধ্যে ২৯১ আসনে প্রার্থিতালিকা ঘোষণা করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। প্রার্থিতালিকায় যেমন নতুন এবং তারকা প্রার্থী দিয়ে চমক দিয়েছে তৃণমূল, তেমনি বহু বিদায়ী বিধায়ক এবং যাঁদের গতবারে প্রার্থী করা হয়েছিল এবারের ভোটে লড়ার টিকিট দেওয়া হয়নি। যেমন দক্ষিণ দিনাজপুর। এই জেলার ছয়টি আসনের মধ্যে চারজনকে গতবারের মতো একুশের ভোটেও প্রার্থী করা হয়েছে। তবে বালুরঘাট ও তপন বিধানসভার ক্ষেত্রে নতুন প্রার্থী নিয়ে এসেছে তারা। কোন কোন প্রার্থীর বদল হল?
তপনের দু’বারের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা (Bachhu Hansda) ‘কে সরিয়ে এবার টিকিট দেওয়া হল বালুরঘাট পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কল্পনা কিস্কুকে। সম্প্রতি টেট কেলেঙ্কারিতে নাম জড়ায় বাচ্চু হাঁসদার। ২০১৬ সালে তপন বিধানসভা আসন থেকে জয়লাভ করে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নের রাষ্ট্রমন্ত্রী হন তিনি। রাজ্য তথা দক্ষিণ দিনাজপুরে জুড়ে যখন ভোটকে সামনে রেখে দলবদল করছেন নেতামন্ত্রিরা, তখন বাচ্চুবাবুর বিজেপি যোগদান নিয়েও জল্পনা ছড়ায়। যদিও সে সময় তিনি জানিয়েছিলেন তৃণমূলকে তিনি ভালবাসেন। টিকিট না পেলেও দলের হয়ে কাজ করে যাবেন। এদিন তৃণমূল সুপ্রিমো প্রার্থিতালিকা ঘোষণার পর দেখা গেল সত্যিই নাম নেই বিদায়ী মন্ত্রীর। ২০১১ সালে তৃণমূলের প্রার্থী হয়ে জয়লাভ করেছিলেন বাচ্চুবাবু। একইভাবে ২০১৬ সালেও তিনি জয়ী হন। মন্ত্রী হয়ে বাচ্চুবাবু তপনের মতো পিছিয়ে পড়া ব্লকের জন্য একাধিক উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন বলে দাবি করে এসেছেন। তবে এদিন তাঁর নাম প্রার্থিতালিকায় না থাকা নিয়ে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি বাচ্চু হাঁসদা। ফোনে তাঁর সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে বালুরঘাট আসনের গতবারের প্রার্থী তথা প্রাক্তন পূর্তমন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তী (Shankar Chakrabarty)’কে সরিয়ে এবার টিকিট দেওয়া হল বালুরঘাটের বর্ষীয়ান আইনজীবী শেখর দাসগুপ্তকে। শেখরবাবুর এবার প্রার্থী হচ্ছেন জানার পরেই বালুরঘাট জেলা আদালতের সহকর্মীরা তাঁকে ফুলের তোড়া দিয়ে অভ্যর্থনা জানান। পাশাপাশি অন্যান্য প্রার্থীকেও অভ্যর্থনা জানান হয় দলের তরফে। এবিষয়ে বালুরঘাট আসনের প্রার্থী শেখর দাসগুপ্ত জানান যেভাবে দল ও জেলানেতৃত্ব তাঁকে নির্দেশ দেবেন সেভাবেই প্রচার ও অন্যান্য কাজ করবেন।
শঙ্করবাবুর এলাকার মানুষের সঙ্গে সেভাবে যোগাযোগ রাখেন না বলে তাঁর দলের অনেকেই বারবার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। জনভিত্তি তেমন নেই বলেই তাঁকে এবার প্রার্থী করা হল না বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এ নিয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানতে ফোন করা হলে মন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদার মতো শঙ্কর চক্রবর্তীও ফোন ধরেননি।
আরও পড়ুন: নন্দীগ্রামে প্রার্থী মমতাই, দেখে নিন তৃণমূলের পূর্ণাঙ্গ তালিকা
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে উত্তরবঙ্গ জুড়ে ভরাডুবি হয় তৃণমূল কংগ্রেসের। দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট কেন্দ্রটি তৃণমূলের থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে বিজেপি। লোকসভা ভোটের নিরিখে জেলার ৬টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ৩টিতে বিজেপি ও ৩টিতে এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল। এই প্রেক্ষিতে বিধানসভা ভোটে জেলার দুই আসনে নতুন দুই প্রার্থীকে টিকিট দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।