TMC: গ্রুপ সি-র চাকরি বাতিলের তালিকায় নাম; হুগলির তৃণমূল নেত্রীর দাবি, ‘কাউকে মিষ্টি পর্যন্ত দিইনি’

সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ৮৪২ জন গ্রুপ সি কর্মীর চাকরি বাতিল হয়েছে। সেই তালিকায় নাম রয়েছে টুম্পা মেটের।

TMC: গ্রুপ সি-র চাকরি বাতিলের তালিকায় নাম; হুগলির তৃণমূল নেত্রীর দাবি, 'কাউকে মিষ্টি পর্যন্ত দিইনি'
হুগলির তৃণমূল নেত্রী টুম্পা মেটের গ্রুপ সি পদের চাকরি বাতিল।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 10, 2023 | 8:58 PM

হুগলি: চাকরির জন্য টাকা দূর অস্ত, এক প্যাকেট মিষ্টি পর্যন্ত কাউকে দেননি। নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে চাকরি হারিয়ে এমনই প্রতিক্রিয়া দিলেন হুগলি জেলা পরিষদের তৃণমূল সদস্য টুম্পা মেটে (বাকুলি)। তাঁর দাবি, পরীক্ষা দিয়ে পাশ করে চাকরি পেয়েছেন। তা সত্ত্বেও কেন চাকরি বাতিল হল তা বুঝতে পারছেন না। তবে এই ঘটনায় দল পাশে থাকবে বলেও আশাবাদী টুম্পা মেটে।

জানা গিয়েছে, রিষড়া বামুনারীর বাসিন্দা টুম্পা মেটে হুগলি জেলা পরিষদের তৃণমূল সদস্য এবং তাঁর স্বামী মৃত্যুঞ্জয় মেটে রিষড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য। ২০১৮ সালে শ্রীরামপুর নেতাজি বয়েজ স্কুলে গ্রুপ-সি পদে টুম্পা চাকরি পান। পাঁচ বছর তিনি সেখানে করণিক হিসাবে চাকরি করেছেন। সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ৮৪২ জন গ্রুপ সি কর্মীর চাকরি বাতিল হয়েছে। সেই তালিকায় নাম রয়েছে টুম্পা মেটের।

যদিও স্ত্রীর চাকরি বাতিল হওয়ায় হতবাক টুম্পা মেটের স্বামী মৃত্যুঞ্জয় মেটেও। তিনি বলেন, “চাকরির প্রয়োজন আমাদের মত মধ্যবিত্ত পরিবারের আছে। কিন্তু স্ত্রীর চাকরির জন্য কাউকে কোনও টাকা দিইনি। এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পেয়েছিল। ওএমআর শিটে কিছু হয়ে থাকলে সেটা মধ্যশিক্ষা পর্ষদ বলতে পারবে। আমাদের জানা নেই। আমরা দুজনেই যেহেতু তৃণমূল করি, তাই চাকরি চলে যাওয়ায় সামাজিক সম্মান নষ্ট হবে। পাঁচ বছর ওই স্কুলে চাকরি করল তারপর কি করে কি হল আমার মাথায় কিছু ঢুকছে না। টুম্পা পড়াশোনায় খুব ভাল ছিল। আমি নিজে ওকে পড়াতাম। এখন বিরোধীরা অপপ্রচার করবে।”

একইভাবে টাকা দিয়ে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন টুম্পা মেটে। এই ঘটনায় দল পাশে থাকবে বলে আশাবাদী টুম্পা। তাঁর কথায়, “২০১৬ সালে পরীক্ষা দিই। তারপর কয়েকটি পরীক্ষা দিয়ে চাকরিতে যোগ দিই। মিডিয়ার মাধ্যমে দেখছি, এই চাকরিতে অনেক টাকা-পয়সার লেনদেন হয়েছে। আমি কিন্তু কোনও টাকা লেনদেনে যুক্ত নই। কাউকে মিষ্টি পর্যন্ত দিইনি। এটা সিবিআই, ইডি জিজ্ঞাসা করলেও বলব। বিরোধীরা এটা নিয়ে হয়ত আমাকে আমার দলকে কালিমালিপ্ত করতে চাইবে। কিন্তু মানুষের জন্য সততার সঙ্গে কাজ করেছি। তাই দল পাশে থাকবে এটা মনে করি।”

অন্যদিকে, তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যর চাকরি বাতিলের ঘটনায় শাসকদলকে কড়া ভাষায় তোপ দেগেছেন বিজেপি শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মোহন আদক। তিনি বলেন, “যেভাবে গোটা রাজ্যে শিক্ষায় দুর্নীতি হয়েছে তা তৃণমূল অস্বীকার করতে পারবে না। হাইকোর্ট যে রায় দিচ্ছে সেটা যুক্তিসঙ্গত এবং গুরুত্বপূর্ণ। টুম্পা মেটে যতই অস্বীকার করুন, আদালত বিবেচনা করেই এই রায় দিয়েছে। তৃণমূল আর দুর্নীতি সমার্থক।”

বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে ইতিমধ্যে অনেকে চাকরি হারিয়েছেন। এবার এই তালিকায় যুক্ত হলেন খোদ হাইকোর্টের নির্দেশেই গ্রুপ-সি পদের চাকরি খোয়ালেন তিনি। টাকা দিয়েই বেআইনিভাবে টুম্পা মেটে চাকরি পেয়েছেন বলে অভিযোগ। যদিও অভিযোগ অস্বীকার ররে তৃণমূল জেলা পরিষদ সদস্যর দাবি, টাকা তো দূরের কথা, এক প্যাকেট মিষ্টিও কাউকে দেননি। পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন। তবে এই ঘটনায় রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে।