মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান, দেহরক্ষী নিয়ে নীল বাতিতে ঘুরতেন! এবার হুগলিতে ধৃত ‘ঠগ’

Hooghly Fake Officer: তাঁর কথাতেও, "বাড়ির সবাই উচ্চ শিক্ষিত। কেউ অধ্যাপক, কেউ ফিন্যান্স দফতরের কমিশনার। তাঁদের বাড়ির সন্তান এমনটা হবে বিশ্বাস করিনি।

মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান, দেহরক্ষী নিয়ে নীল বাতিতে ঘুরতেন! এবার হুগলিতে ধৃত 'ঠগ'
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 13, 2021 | 8:16 AM

হুগলি: তিনি নিজেকে মানবাধিকার রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান পরিচয় দিতেন। সঙ্গে আবার রাখতেন দুই দেহরক্ষীও। গাড়িতে লাগানো নীল বাতিও। এই ভাবে সরকারি চাকরি দেওয়ার নাম করে বহু মানুষের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। হুগলির চুঁচুড়ার হৃষিকেশ পল্লি থেকে গ্রেফতার আরও এক ভুয়ো অফিসার। ধৃতের নাম রঞ্জন সরকার।

হৃষিকেশ পল্লিতে কয়েকবছর ধরে একটি বাড়ির দোতলা ভাড়া নিয়ে চলছিল রঞ্জনের অফিস। প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, সম্প্রতি ভুয়ো আইএএস দেবাঞ্জন দেব ও ভুয়ো সিবিআই কৌসুলি সনাতন রায়চৌধুরী গ্রেফতার হওয়ার পর নীলবাতি নিয়ে ঘোরা একটু কমে গিয়েছিল রঞ্জনের। সম্প্রতি সব চার চাকা ও বাইকে প্রেস স্টিকার লাগিয়েছিলেন তিনি।

রবিবার রাতে রঞ্জনের অফিসে আসেন এক ব্যক্তি। তাঁর স্কুটিতেও প্রেস লেখা ছিলl হুগলি মোড়ে নাকা চেকিংয়ের সময় ওই ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশ। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ রঞ্জনের অফিসের কথা জানতে পারে। সোমবার বিকেলে হৃষিকেশ পল্লির ওই বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ।

একই সঙ্গে হানা দেওয়া হয় চুঁচুড়া পিপুলপাতির কাছে মল্লিকবাটি স্কুলের সামনে রঞ্জনের বাড়িতেও। রঞ্জনের বাড়ি ও অফিস থেকে মোট কেতাদুরস্ত ৬ টি চার চাকা গাড়ি ও ৫টি বাইক পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে। চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি-১ মৌমিতা সেনের নেতৃত্বে পুলিশ রঞ্জনের অফিসে তল্লাসিতে যায়।

দীর্ঘ সময় ধরে অভিযুক্তকে জেরা করেন তদন্তকারীরা। সম্প্রতি রঞ্জন সরকার ইউটিউবে খবরের চ্যানেল চালু করেন। কয়েকজন যুবক অভিযোগ করেন, তাঁদের সরকারি চাকরি করে দেওয়ার নাম করে টাকা নিয়েছেন রঞ্জন। বলাগড়ের যুবক সমরেশ পাল বলেন, “গ্রুপ ডি ও রেলে চাকরি দেবার নাম করে বিভিন্ন লোকের থেকে টাকা তোলেন রঞ্জন। তিন বছর আগে টাকা দিয়েছেন অনেকেই, চাকরি হয়নি কারোর। টাকা ফেরত চাইলে ভয় দেখাতেন। নীল বাতি গাড়ি হুটার বাজিয়ে যেত আর পরিচয় দিতেন মানবাধিকার কমিশনের আধিকারিক হিসাবে।”

প্রতারিত হয়েছেন তাঁর ছোটবেলার এক বন্ধুও। তাঁর কথাতেও, “বাড়ির সবাই উচ্চ শিক্ষিত। কেউ অধ্যাপক, কেউ ফিন্যান্স দফতরের কমিশনার। তাঁদের বাড়ির সন্তান এমনটা হবে বিশ্বাস করিনি। আমার কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকার প্রতারণা করেছে ওঁ।”

ডিসি চন্দননগর ভিদিত রাজ বুন্দেশ বলেন পুলিশের নাকা চেকিংয়ের সময়ে লিড পেয়ে অভিযান চালানো হয়। রঞ্জনের বিরুদ্ধে প্রেস, মানবাধিকার, ভিজিলেন্স কমিশনের ভূল নথি তৈরি করার অভিযোগ রয়েছে। চাকরি করে দেওয়ার নামে বহু মানুষের থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। রঞ্জন সরকারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।

আরও পড়ুন: দেহরক্ষীর মৃত্যুর তদন্ত করছে সিআইডি… শুনেই শুভেন্দু বললেন, ‘জয় জগন্নাথ’!