CPIM: অভাবে লাটে উঠেছিল পড়াশোনা! ব্রিগেডের ময়দানে সেই ক্ষেত মজুরের মেয়েই আনলেন ‘বন্যা’,চিনুন তাঁকে…
CPIM Brigade: একুশের ভোটের আগে একসময় মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ও ব্রিগেড কাঁপিয়েছিলেন। ঝাঁঝাল বক্তৃতার সঙ্গে ছিল দাপুটে মেজাজ। সেই মীনাক্ষীর মতোই এবার ছব্বিশের ভোটের আগে হাজার-হাজার মানুষ চিনলেন বন্যাকেও।

হুগলি: ব্রিগেডে তখন হাজার-হাজার লোক। পড়ন্ত বিকেলে সেই সময় লাল শাড়ি পরে মঞ্চে উঠলেন তিনি। কখনও বললেন,’খেলা আমরাও খেলতে পারি…‘, কখনও আবার বললেন, ‘এর শেষ দেখে ছাড়ব…।’ তিনি বন্যা টুডু। বর্তমানে সিপিএম (CPM)-এর খেত মজুর সংগঠনের রাজ্য সহ সম্পাদিকা তিনি। একদম মাটি থেকে উঠে আসা এই মেয়ের ঝাঁঝাল বক্তব্যই আজ নজর কাড়ল সকলের। যতক্ষণ মঞ্চে ছিলেন, ততক্ষণ ‘রক্ত গরম’ করা বক্তৃতায় তুলে ধরলেন ‘সর্বহারাদের’ কথা।
কে এই বন্য়া টুডু?
হুগলির দাদপুরের মেয়ে বন্যা। ২০০০ সালে বাবা-মায়ের হাত ধরেই রাজনীতিতে প্রবেশ তাঁর। সিপিএম এই রাজ্যে ক্ষমতায় থাকাকালীন ২০০৩ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত গুড়াপ পঞ্চায়েতের প্রধান ছিলেন তিনি। তবে, ২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর অভিযোগ ওঠে জোর করে বন্যাকে প্রধান পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
হুগলির দাদপুরে দুস্থ পরিবারে জন্ম বন্যার। মা-বাবা পেশায় ক্ষেতমজুর। আর্থিক অনটনের কারণে মাধ্যমিক দিতে পারেননি। লেখাপড়া শেষ করতে পারেননি তিনি। বর্তমানে সিপিএম-এর ক্ষেত মজুর সংগঠনের রাজ্য সহ সম্পাদিকা।
সিঙুরে কারখানার দাবিতে আন্দোলনের অন্যতম মুখ ছিলেন এই বন্যা টুডু। স্বামী জয়দেব টুডু প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। বামেদের ‘পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী অধিকার মঞ্চের’ অন্যতম নেতা তিনি। রয়েছে দুই সন্তান। বছর চুয়াল্লিশের সেই বন্যাই এবার বামেদের অন্যতম মুখ ছিলেন ব্রিগেডের।
একুশের ভোটের আগে একসময় মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ও ব্রিগেড কাঁপিয়েছিলেন। ঝাঁঝাল বক্তৃতার সঙ্গে ছিল দাপুটে মেজাজ। সেই মীনাক্ষীর মতোই এবার ছব্বিশের ভোটের আগে হাজার-হাজার মানুষ চিনলেন বন্যাকেও। কেন্দ্রের মোদী সরকার থেকে রাজ্যের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার! বন্যা ছাড়লেন না কাউকেই। শুরুতেই কথা বললেন নিজের আঞ্চলিক ভাষায়। তারপর উদাহরণ দিয়ে বললেন, “বুনো হাতি গ্রামে ঢুকলে আগুন জ্বালিয়ে তাড়ান তো? ঠিক সেই ভাবে লড়াই করতে হবে…।” বারবার বললেন, “এ লড়াই খেটে খাওয়া মানুষের লড়াই। আমরা চোর ডাকাত নই। মাথা উঁচু করে বাঁচব।” আর সব শেষে বন্যার হুঙ্কার, “ছাব্বিশের নির্বাচনে উইকেট ফেলব…।”

