Hooghly: পদত্যাগের নির্দেশ দলের, পাল্টা চেয়ারম্যান বললেন…

TMC inner conflict in Hooghly: উল্টে অমিত রায় বলেন, "সুব্রত বক্সী ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের চেয়ারম্যানের পদের জন্য নিয়োগ করেছেন। যদি কোনও নির্দেশিকা থাকে তাহলে রাজ্য কমিটিকে লিখিতভাবে জানাতে হবে। দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী ও পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের নির্দেশ পেলে তবেই পদত্যাগ করব।"

Hooghly: পদত্যাগের নির্দেশ দলের, পাল্টা চেয়ারম্যান বললেন...
হুগলি চুঁচুড়া পৌরসভার চেয়ারম্যান অমিত রায় Image Credit source: TV9 Bangla

| Edited By: সঞ্জয় পাইকার

Nov 08, 2025 | 8:41 PM

হুগলি: তাঁদের পারফরমেন্স খারাপ। একথা জানিয়ে দুই চেয়ারম্যানকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু, অনড় হুগলির দুই চেয়ারম্যান। হুগলি চুঁচুড়া পৌরসভার চেয়ারম্যান অমিত রায় ও বাঁশবেড়িয়া পৌরসভার চেয়ারম্যান আদিত্য নিয়োগী পদত্যাগের নির্দেশ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বিধায়কদের কেন রেয়াত করা হচ্ছে, সেই প্রশ্ন তোলেন অমিত রায়। তৃণমূলের হুগলি শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অরিন্দম গুঁইন বলছেন, দলের নির্দেশ মানা উচিত দুই চেয়ারম্যানের।

তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, গত লোকসভা নির্বাচনে যেসব এলাকায় ফল খারাপ হয়েছে, সেখানের চেয়ারম্যান বদল করা হবে। পূর্ব বর্ধমানের কয়েকটি পৌরসভার চেয়ারম্যান বদলের পর হুগলির দুটি পৌরসভার চেয়ারম্যানকেও নোটিস ধরানো হয় দলের তরফে। হুগলি চুঁচুড়া পৌরসভার চেয়ারম্যান অমিত রায় ও বাঁশবেড়িয়া পুরসভার চেয়ারম্যান আদিত্য নিয়োগীকে পদত্যাগ করতে বলেন তৃণমূলের হুগলি শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অরিন্দম গুঁইন।

প্রথমে মৌখিকভাবে সেই নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু দুই পৌরসভার চেয়ারম্যান এখনও পর্যন্ত দলের সেই নির্দেশ মেনে তাঁদের পদত্যাগপত্র জমা দেননি। উল্টে অমিত রায় বলেন, “সুব্রত বক্সী ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের চেয়ারম্যানের পদের জন্য নিয়োগ করেছেন। যদি কোনও নির্দেশিকা থাকে তাহলে রাজ্য কমিটিকে লিখিতভাবে জানাতে হবে। দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী ও পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের নির্দেশ পেলে তবেই পদত্যাগ করব। কিন্তু আমায় কেউ মৌখিক বা লিখিত আকারে জানায়নি। হুগলির শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অরিন্দম গুঁইন বলেছিলেন প্রদেশ থেকে আপনার কাছে নির্দেশ আসবে। কিন্তু কোনও নির্দেশিকা আমার কাছে আসেনি। দল যদি চায় পরিবর্তন করতে, তাহলে সেটা একটা প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে করা উচিত। আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোনও অভিযোগ নেই।”

এরপরই তিনি প্রশ্ন তোলেন, “পৌরসভা এলাকায় দেড় হাজার ভোটে হার রয়েছে লোকসভায়। এছাড়াও বিধানসভা এলাকায় একাধিক পঞ্চায়েতে হার রয়েছে। তাহলে তো পঞ্চায়েত প্রধান ও বিধায়ককেও সরে যেতে হয়। এর আগেও হুগলি লোকসভায় হার ছিল চুঁচুড়ার। তখন তো কাউকে সরানো হয়নি।” তাহলে কি আপনার বিরুদ্ধে চক্রান্ত চলছে? প্রশ্ন শুনে অমিত রায় বলেন, “কোথা থেকে কী চক্রান্ত হচ্ছে বলতে পারব না। যদি দল আমাকে নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে পদত্যাগের জন্য জানায়, তাহলে ছেড়ে দিয়ে চলে যাব।” এবিষয়ে চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার কিছু বলতে চাননি। অন্যদিকে, বাঁশবেড়িয়া পৌরসভার চেয়ারম্যান আদিত্য নিয়োগী ক্যামেরার সামনে কিছু না জানালেও বলেন, “এটা দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়। যা বলার দলকে বলব।”

জেলা সভাপতি অরিন্দম গুঁইন বলেন, “অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই জানিয়েছিলেন, নির্বাচনের ফল খারাপ হলে ব্যবস্থা নেবেন। সেই মতো চুঁচুড়া ও বাঁশবেড়িয়া পৌরসভার দুই চেয়ারম্যানকে পদত্যাগ করতে বলা হয়েছে। আজ তাঁদের লিখিত আকারে আমি জানিয়ে দিয়েছি। আশা করি তাঁরা দলের নির্দেশ পালন করবেন। তাঁরা কী বলছেন, সেটা তাঁদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমি দলের নির্দেশ পালন করেছি। যা সবাইকে মানতে হবে।”

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে পৌরসভা নির্বাচনের পর গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায়কে সরিয়ে হুগলি চুঁচুড়া পৌরসভার চেয়ারম্যান করা হয়েছিল অমিত রায়কে। বিধায়ক ঘনিষ্ঠ গৌরীকে সরিয়ে অমিতকে চেয়ারম্যান করা মানতে পারেননি বিধায়ক। বিভিন্ন ইস্যুতে পৌরসভায় তৃণমূলের দ্বন্দ্ব বারবার প্রকাশ্যে এসেছে। কুড়িজন কাউন্সিলর অমিতের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে দলের নেতৃত্বকে চিঠি দিয়েছিলেন। তখন দল সেই চিঠিকে মান্যতা দেয়নি।

গত লোকসভা নির্বাচনে চুঁচুড়া বিধানসভায় সাড়ে আট হাজার ভোটে পিছিয়ে ছিলেন তৃণমূল প্রার্থী। সপ্তগ্রাম বিধানসভার মধ্যে থাকা বাঁশবেড়িয়া পৌরসভায় ১১ হাজার ভোটে পিছিয়ে ছিলেন তৃণমূল প্রার্থী। তার জন্য দুই পৌরসভার চেয়ারম্যানকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছেন না তাঁরা।