BLO commits suicide: মালবাজারে BLO-র ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার, কাজের চাপকে দায়ী করল পরিবার, সরব মুখ্যমন্ত্রী
BLO commits suicide in Malbazar: শান্তি মুনির স্বামী সুখু এক্কা বলেন, "আমার স্ত্রী প্রতিদিন ভোরে উঠে পড়তেন। রান্না করতেন। আমরা একটু দেরি করে উঠি। এদিন ভোরে স্ত্রী উঠে চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর আমি উঠি। গিয়ে দেখি, কোনও রান্না হয়নি। স্ত্রীকে দেখতি পাইনি। তারপর একটু দূরে স্ত্রীকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পাই।"

মালবাজার: এসআইআর আতঙ্কে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এবার এক বুথ লেভেল অফিসারের (বিএলও) ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারকে ঘিরে শোরগোল পড়ল জলপাইগুড়ির মালবাজারে। মৃত বিএলও-র নাম শান্তি মুনি ওরাওঁ (৪৮)। বুধবার সকালে বাড়ির পাশে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পরিবারের অভিযোগ, বিএলও-র কাজে অতিরিক্ত চাপের জন্যই আত্মহত্যা করেছেন শান্তি। খবর পেয়ে মৃত বিএলও-র বাড়িতে যান রাজ্যের মন্ত্রী বুলুচিক বড়াইক। ২ মাসে এসআইআর প্রক্রিয়া শেষ করতে বিএলও-দের উপর অমানবিক চাপ দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
মালবাজারের রাঙামাটি গ্রাম পঞ্চায়েতে বাড়ি শান্তি মুনি ওরাওঁর। তিনি আইসিডিএস কর্মী ছিলেন। রাঙামাটি গ্রাম পঞ্চায়েতে ১০১ নম্বর বুথে বিএলও-র দায়িত্ব পালন করছিলেন। এদিন সকালে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। শান্তি মুনির স্বামী সুখু এক্কা বলেন, “আমার স্ত্রী প্রতিদিন ভোরে উঠে পড়তেন। রান্না করতেন। আমরা একটু দেরি করে উঠি। এদিন ভোরে স্ত্রী উঠে চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর আমি উঠি। গিয়ে দেখি, কোনও রান্না হয়নি। স্ত্রীকে দেখতি পাইনি। তারপর একটু দূরে স্ত্রীকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পাই।”
কেন তাঁর স্ত্রী আত্মহত্যা করলেন? সুখু এক্কা দাবি করেন, তাঁর স্ত্রী বাংলা পড়তে-লিখতে না জানায় প্রতিদিনই সমস্যায় পড়তেন। চাপে ভেঙে পড়তেন। তিনি অভিযোগ করেন, কয়েকদিন আগে মালবাজার ব্লকের যুগ্ম বিডিও-র কাছে বিএলও-র পদ ছাড়ার আবেদন জানাতে গেলে তাঁর স্ত্রীকে কাজ চালিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়। সকাল ১১টা থেকে সন্ধে সাতটা পর্যন্ত কাজ করতে হত বলে তিনি জানান। মৃতার ছেলে কলেজ পড়ুয়া ডিসুজা এক্কাও বলেন, তাঁরা বাংলা পড়তে লিখতে পারেন না। তাই মাকে কোনও সাহায্য করতে পারেননি। চাপের কথা সবসময়ই বলতেন শান্তি মুনি।
বিএলও-র মৃত্যুর খবর পেয়ে তাঁর পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান রাজ্যের আদিবাসী কল্যাণমন্ত্রী ও মাল বিধানসভার বিধায়ক বুলুচিক বড়াইক। তিনি বলেন, “এসআইআর আতঙ্কে বহু ভোটার আত্মঘাতী হয়েছেন। এবার কাজের চাপে এক বিএলও-র মৃত্যু। ওরা হিন্দিভাষী। কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছিল। শান্তি মুনির এক ছেলে ও এক মেয়ে। মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। একটি সুখী পরিবার ভেঙে গেল। এর দায় নির্বাচন কমিশনকে নিতেই হবে।” এর আগে পূর্ব বর্ধমানের কালনায় অসুস্থ হয়ে এক বিএলও-র মৃত্যুতে কাজের চাপের অভিযোগ উঠেছিল।
মালবাজারে বিএলও-র মৃত্যুর ঘটনায় সরব হয়েছন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক্স হ্যান্ডলে তিনি লেখেন, “এই ঘটনায় আমি মর্মাহত। এসআইআরের কাজের চাপে একজন বিএলও আত্মঘাতী হলেন। এসআইআর শুরু হওয়ার পর এখনও পর্যন্ত ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।” তিনি আরও লেখেন, “যে কাজটা আগে শেষ করতে তিন বছর লাগত, এখন রাজনৈতিক প্রভুদের খুশি করতে ২ মাসে তারা করা হচ্ছে। বিএলও-দের উপর অমানবিক চাপ দেওয়া হচ্ছে।” ‘অপরিকল্পিত’ এই প্রক্রিয়া বন্ধের ফের দাবি জানান তিনি।
