Jalpaiguri News: এ কেমন দৃশ্য! সামনে ব্যান্ড-পার্টি, পিছনে ডিজে, মৃতদেহ ঘিরে চলল তুমুল আনন্দ-ফূর্তি
১১৩ বছর বয়সে মৃত্যু হয়েছে বৃদ্ধার। তাই তাঁর সৎকারে নাকি আনন্দ করা উচিত বলে মনে করছেন তাঁর আত্মীয়রা।

জলপাইগুড়ি: যে কোনও মৃত্যুই কষ্টের। বয়স যাই হোক না কেন! না ফেরার দেশে চলে যাওয়া মানে আর সেই মানুষটার সঙ্গে দেখা হবে না কোনও দিন। এটা মেনে নিতে পারেন না আত্মীয়-পরিজনেরা। তাই মৃত্যু মানেই বুক ফাটা কান্না। একসময় নাকি মৃত্যুর পর কাঁদার জন্য রুদালি ভাড়া নিয়ে আসা হত বলে জানা যায়। তাই বলে মৃত্যুর আবহে নাচ-গান, ডিজে- এ দৃশ্য শুধু বিরল নয়, অপ্রত্যাশিতও বটে। জলপাইগুড়িতে যে ছবি দেখা গেল, তা দেখে বোঝা মুস্কিল, অন্তিমযাত্রা নাকি আনন্দ অনুষ্ঠান। মৃতের বয়স ১১৩, তাই এ বিশ্বের অনেক কিছুই নাকি দেখে নিয়েছেন তিনি, সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিবার পরিজনেরা।
শতবর্ষ পেরনো বৃদ্ধার শ্মশান যাত্রায় ডিজে বাজিয়ে নাচ-গানে মেতে উঠলেন শ্মশান যাত্রীরা। অভিনব এই ছবি ধরা পড়ল জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জে। রাজগঞ্জ ব্লকের পানিকৌড়ি অঞ্চলের দুর্বা গছ এলাকায় সোমবার বিকেলে এই দৃশ্য দেখা যায়। ওই গ্রামেরই বাসিন্দা ছিলেন মালতী সরকার। কেউ বলছেন তাঁর বয়স ১১২, কেউ আবার বলছেন ১১৩। সাধারণভাবে মানুষের গড় আয়ু ৬০ বলেই ধরে নেওয়া হয়। তাই ১১২-তেও নট আউট থাকা বৃদ্ধার মৃত্যু নাকি শোকের নয়, আনন্দের। পরিবার- পরিজন ও প্রতিবেশীদের এমনটাই দাবি। ছেলে, মেয়ে, নাতি, পুতি নিয়ে এতদিন সুস্থ সবলভাবে সংসার করেছেন। রবিবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। বয়সজনিত কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
সোমবার তাঁর মৃতদেহ স্থানীয় শ্মশানে দাহ করতে নিয়ে যাওয়া হয়। সাধারণত মৃতদেহের সঙ্গে কীর্তন বা হরিনামের দল থাকে। আর এ ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা গেল, কীর্তনের বদলে সেখানে রয়েছে ডিজে এবং ব্যান্ড পার্টি। টোটোতে লাগানো লাউডস্পিকার। তাতে বাজছে হিন্দি গান। আর সেই তালে তালে নাচছেন শ্মশানযাত্রীরা। এমন অভিনব শ্মশান যাত্রা দেখতে গ্রামের বাসিন্দারা ভিড় জমান এ দিন।
জানা গিয়েছে, পরিবারের সম্মতি এবং বৃদ্ধার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী এই ব্যাবস্থার আয়োজন করা হয়েছে। এমন অভিনব ব্যাপার চাক্ষুষ করতে ঘর ছেড়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন মানুষজন।
নাতি পিন্টু সরকার জানান, ১১৩ বছর বয়স পর্যন্ত বেঁচে ছিলেন মালতী দেবী। বিশ্ব সংসারের অনেক কিছুই দেখে গিয়েছেন তিনি। নাতির ঘরে পুঁতি, সবই দেখেছেন। তাই এই মৃত্যু কষ্টের নয় বলেই মনে করেন তিনি। ভোলা সরকার নামে আর এক ব্যক্তি জানান, মালতী দেবী সম্পর্কে তাঁর জেঠিমা। এত বেশি বয়য়ে মৃত্যু তাই, তাঁর জেঠিমার নাকি শেষ ইচ্ছা ছিল, সৎকার হবে আনন্দের সঙ্গে। তাই ভালভাবে শেষযাত্রা করার জন্যই ডিজে আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
