Child Death: চাই ১২০০ টাকা! দু’ঘণ্টা ধরে সদ্যোজাতকে কোলে চেপে রাখলেন বৃহন্নলা, ক্রমশ নেতিয়ে পড়ল ছোট্ট দেহটা…
Malda: আচমকা মাম্পির কোল থেকেই শিশুকে ছিনিয়ে নেন আওলাদ। কোলের মধ্যে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চেপে ধরে রেখে টাকার জন্য চাপ দিতে থাকেন বলে অভিযোগ।
সাধারণত কোনও পরিবারে নতুন শিশুর আগমন ঘটলে সেখানে ভিড় করেন বৃহন্নলারা। নবজাতকের সুস্বাস্থ্য় ও দীর্ঘায়ু কামনা করে বেশ কিছু অর্থও দাবি করেন তাঁরা। মনে করা হয়, ওঁদের আশীর্বাদেই নবজাতকের ‘শ্রীবৃদ্ধি’। সেই থেকেই চলে, টাকা দেওয়ার রেওয়াজ। বাংলার ঘরে ঘরে প্রায়ই এমন ছবির দেখা মেলে। কিন্তু মানিকচকের এই ঘটনা যেন ভয়াবহ।
অভিযোগ, টাকার জন্য মায়ের থেকে দীর্ঘ সময় সদ্যোজাতকে পৃথক রেখেছিলেন বৃহন্নলা। আর তাতেই খেতে না পেয়ে বেঘোরে প্রাণ গেল দুধের শিশুর। মাত্র ২০ দিন বয়স তার।
ঠিক কী হয়েছিল? জানা গিয়েছে, গত ২৯ অক্টোবর তিন সন্তানের জন্ম দেন মাম্পি মাঝি। দুটি পুত্র ও একটি কন্যা। মাম্পি ও তাঁর স্বামী অসিত দিনমজুরের কাজ করেন। খবর পেয়ে বাড়িতে হাজির হন আওলাদ নামের একজন বৃহন্নলা। বুধবার বিকেলে, আওলাদ ওই দম্পতির থেকে ১২০০ টাকা দাবি করেন। কিন্তু, মাম্পিরা জানান, তাঁরা দিনমজুরের কাজ করেন। এত টাকা দিতে পারবেন না। সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা দিতে পারবেন।
কিন্তু তাতে মন ভরেনি আওলাদের। টাকার জন্য ক্রমশ চাপ দিতে থাকেন তিনি। তারপর আচমকা মাম্পির কোল থেকেই শিশুকে ছিনিয়ে নেন আওলাদ। কোলের মধ্যে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চেপে ধরে রেখে টাকার জন্য চাপ দিতে থাকেন বলে অভিযোগ। এমনকী হুমকিও দেন, টাকা না দিলে ছেলেকেও ফেরত দেবেন না। শুধু তাই নয় তারপর জোরে জোরে ঢোল বাজাতে থাকেন বলে অভিযোগ। সেইসময়, মাম্পি তাঁর সন্তানকে খাওয়ানোর জন্য ফেরত চাইলেও তা দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।
এদিকে, প্রায় দুই ঘণ্টা টানা ওভাবে কোলে চেপে ধরে রাখায়, তারউপর আবার খেতে না পেয়ে কোলের মধ্যেই ধীরে ধীরে নেতিয়ে পড়ে শিশু। পরে মাম্পি যখন তাঁর সন্তানকে কোলে ফেরত পান, তখন আর ছোট্ট দেহটায় কোনও সাড় নেই। পুরোপুরি নিঃস্পন্দ! নিজের বুকের সন্তানকে এভাবে হারিয়ে কার্যত শোকে পাথর মাম্পি।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ইচ্ছে করেই আওলাদ নামের ওই বৃহন্নলা এই ঘটনা ঘটিয়েছেন। তাঁরা দ্রুত আওলাদের শাস্তির দাবিও করেছেন। এদিকে শিশু মৃত্যুর খবর পেয়ে ছুটে আসে মানিকচক থানার পুলিশ। কেন ওই শিশুর মৃত্যু হল তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ঘটনায়, শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী বলেন, “অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা। এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করা উচিত। শিশুটির কেন মৃত্যু হল, আগে থেকে কোনও অসুস্থতা ছিল কি না, সেসব খতিয়ে দেখা উচিত। যে বা যারা দোষী তাদের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত। যতক্ষণ এই মানুষদের সমাজের মূলস্রোতে আনা হচ্ছে ততক্ষণ এমনটা চলতেই থাকবে। তাই দ্রুত এই বিষয়ে নজর দেওয়া উচিত। আর যাতে এমন ঘটনা না ঘটে সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। ”
অভিনেতা সুজয়প্রসাদ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ঘটনাটি অত্যন্ত নিন্দার। এই ধরনের ঘটনা ঘটা উচিত নয়। তবে বাচ্চাটির শারীরিক অবস্থা জানা দরকার। পাশাপাশি এটাও জানা দরকার, ওই এলাকায় বৃহন্নলাদের সঙ্গে কী ব্যবহার করা হয়। অনেকসময় হয়ে থাকে যে খুব খারাপ ব্যবহার করা হয়। সেখান থেকে একটা তীব্র বিরূপ মনোভাব তৈরি হয়। তবে যেধরনের ঘটনা ঘটেছে তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এধরনের ঘটনা ঘটা উচিত নয়।”
দেখুন ভিডিয়ো:
আরও পড়ুন: Asansol: এক-দুই নয়, চার-চারবার শূন্যে চলল গুলি, জন্মদিনেই ভাইরাল যুবক!