‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের’ ফর্ম তুলতে গিয়ে বিপর্যয়! দরজা খুলতেই পদপিষ্ট শিশু-সহ ৯
আহতদের মালদা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে।
মালদা: ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ (Laskshmir Bhandar)-এর ফর্ম তুলতে ক্রমশ বাড়ছে ভিড়। লম্বা লাইন শুধু নয়, চোখে পড়ছে চরম বিশৃ্ঙ্খলা। সকাল থেকে বিভিন্ন জেলায় শিবিরগুলিতে সেই ছবি দেখা যাচ্ছে। আর এ বার সেই ফর্ম তোলার লাইনে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা ঘটল মালদায়। ফর্ম তুলতে গিয়ে প্রবল ভিড়ের চাপে আহত হলেন ৯ জন। আহতদের মধ্যে রয়েছে দুই শিশু ও চারজন মহিলা। আহতদের মালদা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে।মালদা সাহাপুর হাইস্কুলের ঘটনা। কেন এমন অব্যবস্থা, তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন।
গত কয়েকদিন ধরেই এমন ছবি চোখে পড়েছে বিভিন্ন জায়গায়। আজ, বুধবার জানানো হয়েছিল যে সকাল থেকেই ফর্ম দেওয়া শুরু হবে। সেই মতো সাহাপুর স্কুলের সামনে ভোর মানুষের লাইন পড়তে শুরু করে। কয়েক হাজার মানুষের লম্বা লাইন পড়ে যায় স্কুলের দরজার সামনে। অভিযোগ, সকাল থেকে ফর্ম দেওয়ার কথা থাকলেও ১১ টা বেজে যাওয়ার পরও দরজা খোলা হয়নি। এরপরই অপেক্ষারত মানুষের কাছে খবর আসে যে, ভিতরে তৃণমূলের তরফে কিছু লোককে ফর্ম দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই খবর শুনেই উত্তেজিত হয়ে পড়ে অপেক্ষারত মানুষ। তাঁরা দরজায় ধাক্কা দিতে শুরু করে। তখন দরজা খুলে দেওয়া হয়। দরজা খুলতেই স্রোতের মতো ভিতরে ঢুকে পড়ে জনতা।
ভিতর থেকে ফর্ম বিলি করার অভিযোগ তুলেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাঁরা। কর্তব্যরত পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়ে যায়। বিশৃ্ঙ্খলা চরমে পৌঁছলে পদপিষ্ট হয়ে আহত হন বেশ কয়েকজন। ৯ জন আহত হয়েছে বলে খবর, তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।
এই ঘটনায় বিজেপির জেলা সভাপতি গোবিন্দ চন্দ্র মন্ডল বলেন, ‘কার্যত যমের দুয়ারে সরকার। পুলিশ প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে। যদি সম্ভব হয় তাহলে পুলিশ দিয়ে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ফর্ম দেওয়ার ব্যবস্থা করুন। মৃত্যুর দিকে এ ভাবে মানুষকে ঠেলে দেওয়া বন্ধ করুক।’ তৃণমূলকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘কোভিড শুধু বিজেপির জন্য, এ ক্ষেত্রে কোনও কোভিড নেই।’ রাজ্য বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘এই নিদারূন ঘটনার দায় তৃনমূল সরকারের। অমানবিক, অপদার্থ সরকার লোভ দেখিয়ে পাইয়ে দেওয়ার রাজনীতি করছে। মানুষের পকেটে পয়সা নেই, খাবার নেই তাই তারা লাইন দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
মালদায় প্রথম নয়, এর আগে অন্যান্য জেলাতেও একই ছবি দেখা গিয়েছে। সোমবার দুয়ারে সরকারে দীর্ঘক্ষণ লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েন কামারপুকুরের তিন মহিলা। তাঁদের মধ্যে একজন কে তড়িঘড়ি স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অপরজনকে কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীরাই জল, হাওয়া দিতে শুরু করেন। একই ছবি দেখা গিয়েছে মুর্শিদাবাদে, দুই ২৪ পরগনা ও মেদিনীপুরেও। কোথাও কোথাও ফর্ম দেওয়ার নামে টাকা তোলার ছবিও ধরা পড়েছে। আরও পড়ুন: ‘মা অসুস্থ, আমাকে ধরতেছেন ক্যানে?’ চ্যাংদোলা করে গাড়িতে তুলল পুলিশ! নিশীথের কর্মসূচিতে তপ্ত শিলিগুড়ি