Maldah: ‘সমাজবিরোধীরাই তৃণমূলে জায়গা নিচ্ছে’, জালনোট পাচারকাণ্ডে ‘দলবিরুদ্ধ’ স্বর কৃষেন্দুর!
Krishnendu Narayan Chaudhury: মালদার দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতার এ হেন মন্তব্যে কার্যত বেশ অস্বস্তিতে শাসকদল। এমনিতেই মালদায় বরাবর প্রকাশ্যে এসেছে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল।
মালদা: জালনোট পাচারকাণ্ডে পুলিশের উপর আক্রমণের ঘটনায় কার্যত দলবিরুদ্ধ স্বর তৃণমূল পরাজ্য সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরীর (Krishnendu Narayan Chaudhury)। তাঁর সাফ দাবি, তৃণমূলে সমাজবিরোধীরা জায়গা করে নিচ্ছে বলেই এই বিপত্তি। বরাবরই বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য শিরোনামে থেকেছেন তৃণমূলের এই নেতা। এ বার ফের তাঁর মন্তব্যে শাসকশিবিরের (TMC) গোষ্ঠীকোন্দল প্রকাশ্যে আসতে পারে বলেই অনুমান সংশ্লিষ্ট মহলের।
কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী এদিন বলেন, “তৃণমূলে এখন যত সমাজবিরোধীরা জায়গা করে নিচ্ছে। পিঠ বাঁচাতে তাঁরা তৃণমূলে আসছেন। দলের ক্ষতি করছেন। এদের সমূলে উত্পাটন করা উচিত। কঠোর শাস্তির প্রয়োজন।” শনিবার, অর্থাত্ গতকালই ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে কুম্ভিরা দৌলতপুরের কাছে একটি বিরাট জালনোট পাচারচচক্র খুঁজে পেয়েছে বৈষ্ণবনগর থানার পুলিশ। গোপনে অভিযান চালাতে গিয়ে পাচারকারীদের হামলার মুখে পড়েন পুলিশ কর্মীরা। হাঁসুয়া দিয়ে কোপ মারা হয় বলে অভিযোগ। গুরুতর জখম হন ফাঁড়ি ইনচার্জ-সহ ২ পুলিশ (Police) কর্মী ও ২ সিভিক ভলেন্টিয়ার।
সূত্রের খবর, অভিযুক্তরা সকলেই তৃণমূল (TMC) কর্মী। ধৃত ৫ জনের মধ্যে রয়েছেন এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতা হবিবুর রহমান ও তাঁর স্ত্রী সীমা বিবি। সীমা বিবি বখরাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য। তবে ওই পাঁচজন বাদে বাকি অভিযুক্তরা সকলেই পলাতক। ঘটনায়, স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, জালকারবারিদের সঙ্গে শাসকদলের কোনও সম্পর্ক নেই। যদি, কেউ এইধরনের কোনও অসামাজিক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত থাকে তবে, দোষীর উপযুক্ত শাস্তি হবে।
কিন্তু, মালদার দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতার এ হেন মন্তব্যে কার্যত বেশ অস্বস্তিতে শাসকদল। এমনিতেই মালদায় বরাবর প্রকাশ্যে এসেছে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুর সঙ্গে একাধিকবার জড়িয়েছে নানা বিতর্ক। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে প্রচারে বেরিয়ে কৃষ্ণেন্দু দাবি করেন, মন্ত্রী হওয়ার পরে তাঁর কাছে অনেক মানুষ আসতে চাইতেন। কিন্তু, তাঁর কর্মীরাই সাধারণ মানুষকে আসতে দিতেন না। এমনকি, কৃষেন্দু বাবু অফিসে থাকা সত্বেও তিনি নেই এমনটা শুনেই ফিরে যেতে হয়েছে অনেককে। তাঁর কর্মীদের এই রূঢ় আচরণের জন্য তিনি অনুতপ্ত।
সেখানেই বিতর্কের শেষ নয়, গত ফেব্রুয়ারি নাগাদ, আচমকাই রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীর নিরাপত্তা প্রত্যাহার করে রাজ্য প্রশাসন। কেন সেই প্রত্যাহার? কারণ জানা নেই বলেই দাবি করেন তৃণমূল নেতা। সূত্রের খবর, দলের সঙ্গে দূরত্ব ছিলই কৃষ্ণেন্দুবাবুর। এরপর দলীয় বিধায়কের বাড়িতে হামলার ঘটনাতেই কাঠগড়ায় তোলা হয় তাঁকে। ফলে সেই ফাটল ক্রমশ বেড়েছে। পঁচানব্বই সাল থেকে নিরাপত্তারক্ষী ছিল কৃষ্ণেন্দুর। পরে, মন্ত্রী হলে তাঁর নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হয়। ২০১৬-তে নির্বাচনে পরাজিত হলেও তাঁর নিরাপত্তা বজায় ছিল। কিন্তু, আচমকা রাজ্য প্রশাসনের সিদ্ধান্তের জেরে এই বদলকে কেন্দ্র করে তুঙ্গে উঠেছিল জল্পনা। যদিও, কৃষ্ণেন্দু জানিয়েছিলেন তিনি অন্য কোথাও যাবেন না। এ বার ফের তাঁর মন্তব্য়ে অস্বস্তিতে শাসকদল।
আরও পড়ুন: Bankura: ১ লক্ষ টাকা দিলেই মিলবে রেলে চাকরি, নিয়োগপত্র জমা দিতেই মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল যুবকের!
আরও পড়ুন: CPM TMC Clash: মার্কসীয় বুকস্টলে ভাঙচুর, ‘হামলা’ শাসক শিবিরের!