Malda Murder: আসিফের বিরুদ্ধে ‘সাক্ষী গোপাল’ মামা! তড়িঘড়ি জাল গোটাতে গোয়েন্দাদের এই পদক্ষেপ?

মালদা: কালিয়াচক-কাণ্ডে নিজের পরিবারের চার সদস্যকে খুন করার ঘটনায় ধৃত আসিফ মহম্মদের বিরুদ্ধে প্রধান সাক্ষী হিসেবে দাদা আরিফের পাশাপাশি মামা শিস মহম্মদকেও সাক্ষী হিসেবে প্রস্তুত করল পুলিশ। এতদিন, আড়ালেই ছিলেন আসিফ-আরিফের মামা শিস মহম্মদ। আচমকা তাঁকে সাক্ষী করার প্রস্তাবে সংশয়ের সিঁদুরে মেঘ দেখছে ওয়াকিবহাল মহল।

পুলিশ সূত্রে খবর, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি নিজের মা-বাবা-বোন-ঠাকুমাকে খুন করে বাড়ির গুদামেই গর্ত করে পুঁতে রাখে আসিফ মহম্মদ। গত ১৭জুন কালিয়াচক থানায় নিজের ভাইয়ের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে আসিফের দাদা আরিফ মহম্মদ। তার অভিযোগ মোতাবেক আসিফকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তদন্তে নেমে কেবল খুন নয়, ‘টেকস্যাভি’ আসিফের একাধিক অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে থাকার সূত্র খুঁজে পান তদন্তকারীরা। এমনকী, খাগড়াগড় কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত জিয়াউল হকের সঙ্গে কোনও সংযোগসূত্র আছে কি না তাও খতিয়ে দেখতে খোঁজ চালাতে শুরু করে এনআইএ। এরপর, বৃহস্পতিবার, আসিফের মামা শিস মহম্মদকে আরিফের পাশাপাশি সাক্ষী হিসেবে প্রস্তুত করলেন তদন্তকারীরা।

গোয়েন্দাদের দাবি, ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা আসিফের মামা শিস মহম্মদ অভিযোগ করেছিলেন তাঁর থেকেও তিন লক্ষ টাকা হাতিয়েছিল আসিফ। পরে সেই টাকা ফেরত চাইতে গেলে তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে প্রাণে মারার হুমকি দেয় আসিফ। এরপরেই ১৭জুন মামার নির্দেশেই থানায় অভিযোগ দায়ের করে আরিফ। জেরায় আরিফ জানায়, খুনের দিন ভাইয়ের হাত থেকে পালিয়ে কলকাতাতেই মামার কাছে আশ্রয় নেয় সে। তখন থেকে মামার কাছেই ছিল। জিজ্ঞাসাবাদে সেই কথা স্বীকারও করেছেন শিস মহম্মদ। এ বার, ১৬৪ ধারায় আরিফ ও শিস মহম্মদ, উভয়েরই গোপন জবানবন্দি নিতে চলেছেন তদন্তকারীরা। পাশাপাশি, আরিফের সঙ্গে শিস মহম্মদকেও সাক্ষী হিসেবে প্রস্তুত করা হচ্ছে।

গোয়েন্দাদের এই পদক্ষপ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে ওয়াকিবহাল মহল। যে আসিফের বিরুদ্ধে সাইবার জালিয়াতির মতো এত বড় অভিযোগ উঠেছিল, এমনকী, খাগড়াগড় কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত জিয়াউল হকের সঙ্গে সংযোগসূত্র আছে কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছিল, সেখানে এইভাবে আচমকা মামা শিস মহম্মদকে সামনে আনায় তদন্ত গোটানোর পথেই এগোচ্ছে পুলিশ এমনটাই অনুমান বিশেষজ্ঞদের।

ওয়াকিবহাল মহলের আরও দাবি, কালিয়াচক কাণ্ডে প্রথম থেকেই শিস মহম্মদকে আড়ালে রেখেছিল পুলিশ। আচমকা, আসিফের বিরুদ্ধে তাঁকে মূল সাক্ষী করার নেপথ্যে তদন্তের জাল গুটিয়ে মূল অভিযুক্ত আসিফকেই দোষী সাব্যস্ত করে খুনের কিনারা করতে চাইছেন তদন্তকারীরা। এ যেন, ‘সাক্ষী গোপাল’ করে রাখা! যেহেতু গত ২৮ ফেব্রুয়ারির খুনের ঘটনায় মূল সাক্ষী আরিফ, তাই তার পাশে যেন খানিকটা সাক্ষ্য়প্রমাণে জোর আনতেই এই পদক্ষেপ গোয়েন্দাদের বলেই মনে করছেন অপরাধবিশেষজ্ঞরা।  যদিও, সাংবাদিক বৈঠকে মালদার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অনিল অধিকারী আগেই বলেছিলেন অস্ত্র উদ্ধার ও খুনের ঘটনাকে দুটি স্বতন্ত্র ঘটনা হিসেবেই দেখছেন তাঁরা।

আরও পড়ুন: Malda Murder:আসিফের সঙ্গে যোগ থাকতে পারে খাগড়াগড় কাণ্ডের মূল অভিযুক্তের! তদন্তে এনআইএ