Malda Murder: মাসোহারা পেত বন্ধুরা, মোটা অঙ্কের টাকা পেয়েছে দাদাও! কেন টাকা দিত ‘মৃত্যুপুরী’র নায়ক আসিফ?

দাদা আরিফকেই বা কেন টাকা দিত আসিফ? তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। এক্ষেত্রে দাদার ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, সাবির আলি নামে আসিফের এক বন্ধু সঙ্গীদের মাসোয়ারা দেওয়ার বিষয়টি দেখভাল করত।

Malda Murder: মাসোহারা পেত বন্ধুরা, মোটা অঙ্কের টাকা পেয়েছে দাদাও! কেন টাকা দিত 'মৃত্যুপুরী'র নায়ক আসিফ?
ছবির বাঁদিক থেকে, আসিফ ,সাবির ও মহফুজ, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Jun 21, 2021 | 1:10 PM

মালদা: কালিয়াচক কাণ্ডে নতুন তথ্য উঠে এসেছে পুলিশের হাতে (Maldah kalichak Murder Case)। পরিবারের সদস্যদের খুনে অভিযুক্ত মহম্মদ আসিফের কাছ থেকে এক কালীন টাকা পেয়েছে দাদা আরিফ। শুধু তাই নয়, মাসে মাসে বন্ধুদেরও টাকা দিত আসিফ। ঘটনাবিশেষে আসিফ বন্ধুদের এককালীন ৫০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত দিয়েছে। সঙ্গে মাসোহারা। অর্থাৎ প্রত্যেক মাইসে মোটা অঙ্কের ‘বেতন’! কী কারণে বন্ধুদের টাকা দেওয়া হত? এত টাকাই বা কোথা থেকে পেত আসিফ? তা খুঁজে দেখছেন গোয়েন্দারা।

দাদা আরিফকেই বা কেন টাকা দিত আসিফ? তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। জানা গিয়েছে, সাবির আলি নামে আসিফের এক বন্ধু সঙ্গীদের মাসোহারা দেওয়ার বিষয়টি দেখভাল করত। তবে আসিফের কুকীর্তির তালিকা দীর্ঘ। এর আগেও একাধিক অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। নিজেকে ‘অপহরণ’ করে বাবার কাছ থেকে বন্ধুদের মারফত  হাতিয়ে নিয়েছিল কয়েক লক্ষ টাকা আসিফ। অস্ত্র রাখার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। কলকাতায় এক আত্মীয়ের সঙ্গে প্রতারণাও করেছে সে। উল্লেখ্য আসিফের দাদা ও ওই আত্মীয়, সম্পর্কে মামার সূত্র ধরেই মৃত্যুপুরীর গোটা বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে।

আন্তর্জাতিক হ্যাকারদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল আসিফের। বাড়িটিকে সাইবার ল্যাব তৈরি করার পরিকল্পনা ছিল তার। এ তথ্য আগেই পেয়েছেন তদন্তকারীরা। বিশাল বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র। অস্ত্রের কারবারিদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল আসিফের। মনে করা হচ্ছে, বাংলাদেশ থেকে অস্ত্র আসত। ওই বাড়িতে বসেই একটি র্যাকেট তৈরি করেছিল আসিফ। হ্যাকারদের লিঙ্ক ছিল আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে।

আরও পড়ুন: Malda Murder: বাড়িতেই ‘সাইবার ল্যাব’ বানানোর পরিকল্পনা আসিফের, যোগ অস্ত্র পাচারেও! অনুমান পুলিশের

নিজের বিশাল বাড়িতেই অস্ত্র মজুত করত আসিফ। কিন্তু কেন এত অস্ত্রের মজুত, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। আসিফ সাইবার ক্রাইমের পাশাপাশি অস্ত্র পাচারেরও বড় ছক বুনেছিল ওই বাড়ির ড্রয়িং রুমে বসেই। আসিফকে জেরায় একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসছে। ইতিমধ্যে আসিফ ও তার সঙ্গীদের মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করেছেন তদন্তকারীরা। আদালত আসিফকে ১২ দিনের পুলিশি হেফাজত ও বাকি দুই সঙ্গীকে ৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। আসিফ ও তার সঙ্গীদের নিয়ে বাড়িতে যাবে পুলিশ। সেখানে খুনের ঘটনার পুনর্নির্মাণও করা হতে পারে।

একই বাড়িতে চার সদস্যের খুনের ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছিল। কিন্তু কালিয়াচকের সেই মৃত্যুপুরীর তদন্তের গতিপ্রকৃতি এখন এগোচ্ছে অন্য দিকে। নিজের বাবা-মা-বোন-দিদাকে ঠান্ডা মাথায় খুন করে পুঁতেই রাখাই নয়, জেরায় আসিফের থেকে পাওয়া আরও অনান্য তথ্যে চক্ষু চড়কগাছ তদন্তকারীদের।

আরও পড়ুন: ভুরি ভুরি অভিযোগের প্রমাণ মিললেও হানকে ‘গুপ্তচর’ বলা যাবে না! আসরে নামল চিন

এখনও তাকে গ্রেফতার করা হয়নি বটে, তবে সন্দেহের তালিকা থেকে বাদ নেই আসিফের দাদা আরিফও। আরিফ পুলিশকে জানিয়েছেন, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি যখন পরিবারের সদস্যদের খুন করে আসিফ, তখন হামলার মুখে পড়েছিলেন তিনিও। কিন্তু কোনওভাবে বেঁচে যান। কিন্তু তখনই ভয়ে কিছুই পুলিশকে জানাতে পারেননি তিনি। তাঁর মোবাইল ট্র্যাক করেছিল আসিফ, যাতে কোনওভাবে তিনি পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারেন। দেওয়া হয়েছিল প্রাণনাশের হুমকিও। মুখ বন্ধের জন্য আরিফকেও মোটা অঙ্কের টাকা দিয়েছিল আসিফ। তবুও কেন পুলিশকে জানাতে লেগে গেল চার মাস? পুলিশ আসিফের দাদাকে সন্দেহের বাইরে রাখে নি। তাঁকে এখনও প্রকাশ্যেও আনেনি। মৃত্যুপুরীতে বসে বিশাল জাল বুনেছিল আসিফ, তদন্তে নেমে হতচকিত তদন্তকারীরাই।