Duare Sarkar: দুয়ারে সরকার শিবিরে হাজির হয়ে বাদকের ভূমিকায় বিজেপি নেতা
রাজ্য সরকারের উন্নয়নমুখী প্রকল্পগুলির প্রচারে বাউল গানের সঙ্গে করতালি বাজাতেও দেখা গেল জেলা বিজেপির শীর্ষ স্থানীয় এই নেতাকে।
বহরমপুর: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনমুখী প্রকল্পগুলি জনগণের কাছে তুলে ধরতে ফের দুয়ারে সরকার কর্মসূচি শুরু করেছে রাজ্য সরকার। যা নিয়ে কটাক্ষ করেছেন বিরোধীরা। এটা পঞ্চায়েত ভোটের প্রচার বলেও তোপ দেগেছে কংগ্রেস থেকে বিজেপি। অথচ, মঙ্গলবার দুয়ারে সরকার শিবিরে উপস্থিত জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি। শুধু উপস্থিত থাকা নয়, রাজ্য সরকারের উন্নয়নমুখী প্রকল্পগুলির প্রচারে বাউল গানের সঙ্গে খোল বাজাতেও দেখা গেল জেলা বিজেপির শীর্ষ স্থানীয় এই নেতাকে। এখানেই শেষ নয়, স্থানীয় তৃণমূল বিধায়কের সঙ্গে করমর্দন করতেও দেখা গেল তাঁকে। শুনতে অবিশ্বাস্য লাগলেও মঙ্গলবার সকালে এমনই ঘটনার সাক্ষী হল মুর্শিদাবাদের বড়ঞা ব্লকের কুন্নরুন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা। যা নিয়ে জোর চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকারের দুয়ারে সরকার কর্মসূচিতে হাজির হওয়া ওই বিজেপি নেতার নাম সুখেন ভাণ্ডারী। তিনি মুর্শিদাবাদ দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি। এদিন মুর্শিদাবাদের বড়ঞা ব্লকের কুন্নরুন গ্রাম পঞ্চায়েতের মান্দ্রা হাই স্কুলে হয়েছিল দুয়ারে সরকার শিবির। সেই শিবিরেই উপস্থিত হয়ে খোল বাজাতে, করতালি দিতে দেখা গেল সুখেন ভাণ্ডারীকে। মূলত, রাজ্য সরকারের উন্নয়নমুখী প্রকল্পগুলির প্রচারে দুয়ারে সরকার শিবিরে বসেছিল বাউল শিল্পীদের আসর। সেই আসরেই বাউলদের গানের সঙ্গে তালে তাল মিলিয়ে খোল বাজান এবং করতালি দেন এই নেতা। তারপর বড়ঞার তৃণমূল বিধায়কের সঙ্গে করমর্দন করতেও দেখা যায় তাঁকে।
যদিও বিধানসভা নির্বাচনের সময় থেকে বহুবার রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরাতে দেখা গিয়েছিল সুখেন ভাণ্ডারীকে। তাহলে হঠাৎ কী এমন ঘটল যে, সেই নেতা-ই রাজ্য সরকারের দুয়ারে সরকার শিবিরে উপস্থিত হয়ে করতালি দিচ্ছেন?
যদিও সাংবাদিকের ক্যামেরা দেখে প্রথমে নিজেকে লুকানোর চেষ্টা করেন মুর্শিদাবাদ দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি সুখেন ভাণ্ডারী। অবশেষে নিজেকে ‘শিল্পী’ পরিচয় দিয়ে তিনি জানান, শিল্পী পরিচয়ই তাঁর প্রথম পরিচয়। রাজনৈতিক পরিচয়ের চেয়ে শিল্পী পরিচয়কে বেশি গুরুত্ব দিয়ে দেখেন তিনি। তাই তিনি এই শিবিরে শিল্পী হিসাবেই এসেছেন।
তবে বিজেপি নেতা যা-ই বলুন, দুয়ারে সরকার শিবিরে তাঁর উপস্থিতির সুযোগ হাতছাড়া করেননি বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক। তিনি নিজে সুখেন ভাণ্ডারীর কাছে গিয়ে তাঁর সঙ্গে করমর্দন করেন এবং তাঁকে জড়িয়ে ধরে ছবি তোলেন। সুখেন ভাণ্ডারী বাউলশিল্পী জানিয়ে বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা বলেন, “উনি একজন বাউলশিল্পী এবং রাজ্য সরকারের শিল্পী ভাতা পান। কিন্তু, যাঁকে রাজ্য সরকার ও শাসকদলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গায় প্রচার করতে দেখা গিয়েছে, তিনি কী ভাবে দুয়ারে সরকার শিবিরে! তৃণমূল বিধায়কের জবাব, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সবকিছুরই পরিবর্তন হয়।”
তাহলে কী সুখেন ভাণ্ডারীও দল বদল করছেন! এমন প্রশ্ন উঠেছে রাজনৈতিক মহলে। যদিও এব্যাপারে সুখেন ভাণ্ডারী বা বিধায়কের তরফে কোনও স্পষ্ট জবাব মেলেনি।