
সুতি: “বিজেপির কথা শুনে, মৌলবাদীদের কথা প্ররোচিত হবেন না। কোনও ভাগাভাগি করবেন না। মানুষে মানুষে ভাগ করবেন। ভাগ করলে আমার গলাটা হৃদয় থেকে বাদ দিয়ে দিন।” মুর্শিদাবাদে প্রশাসনিক সভা থেকে এদিন এ ভাষাতেই গর্জে উঠলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বারবার দিলেন সম্প্রীতির বার্তা। মমতার সাফ কথা, “মানুষ হিংসা করে না। হিংসাকারীদের বাইরে থেকে আনা হয়। আপনারা প্ররোচনায় কেউ কেউ পা দিয়ে দেন। দয়া করে পা দেবেন না। কারও কথায় হিংসা করবেন না– যদি কথা দিতে পারেন তাহলে দিদি আপনাদের সঙ্গে থাকবে। আর যদি হিংসা করেন তাহলে সবাই থাকলেও দিদি থাকবে না। আমি আলো দেখতে চাই। আমি অন্ধকার দেখতে চাই না। এটা আমার জীবনের স্বপ্ন।”
‘ভাগ করলে আমার গলাটা হৃদয় থেকে বাদ দিয়ে দিন’
প্রসঙ্গত, ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে চলা আন্দোলনে সম্প্রতি বেনজির হিংসার ছবি দেখেছে মুর্শিদাবাদ। জ্বলেছে সামশেরগঞ্জ থেকে জলঙ্গি, সুতি। ঝরেছে প্রাণ, গিয়েছে রক্ত। এবার সেই মুর্শিদাবাদে গিয়ে মমতা কী বার্তা দেন সেদিকে নজর ছিল গোটা রাজ্যেরই। এবার সেখান থেকেই মমতার মুখে বারবারই শোনা গেল সম্প্রীতির কথা। স্পষ্ট বললেন, “ভাগ করলে আমার গলাটা হৃদয় থেকে বাদ দিয়ে দিন।” এলাকার মহিলাদের উদ্দেশ্যে মমতার বার্তা, হিংসাকারীদের ঠেকাতে প্রয়োজনে হাতা-খুন্তি নিয়ে তৈরি থাকতে হবে।
‘মা-মাটি-মানুষ আমার গোত্র’
সুতির সভা থেকে সম্প্রীতির কথা বলতে গিয়ে মমতা বলেন, “যখন রক্তদান শিবির হয় তখন নামটা লিখে নেয়। লেখা হয় কী পদবি, কী ধর্ম, কত বয়স। কিন্তু সেই রক্ত যখন ব্লাড ব্যাঙ্কে চলে যায় তখন কোনও নামও লেখা থাকে না। ধর্মও লেখা থাকে না। হিন্দুর রক্ত মুসলমানের শরীরে চলে যায়, মুসলমানের রক্ত শিখের গায়ে চলে যায়, শিখের রক্ত খ্রিস্টানের দেহে চলে যায়। এই রক্ত মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য, মানুষের প্রাণ কেড়ে নেওয়ার জন্য নয়।” এরপরই তাঁর সংযোজন, “আমার ধর্ম একটাই। মা মাটি মানুষ আমার গোত্র। জগন্নাথ ধামেও আমায় জিজ্ঞেস করেছে আপনার গোত্র কী। আমি বলেছি, মা মাটি মানুষ।”