AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Higher Secondary Result: ছেলের থেকে ৪০ নম্বর বেশি পেয়ে আক্ষেপ মায়ের, নজির গড়লেন শান্তিপুরের লতিকা-সৌরভ

Higher Secondary Result: নদিয়ার শান্তিপুর থানার নৃসিংহপুর নতুন সর্দারপাড়া এলাকার বাসিন্দা লতিকা মণ্ডল। তাঁর তিন সন্তান, দুই মেয়ে ও এক ছেলে।

Higher Secondary Result: ছেলের থেকে ৪০ নম্বর বেশি পেয়ে আক্ষেপ মায়ের, নজির গড়লেন শান্তিপুরের লতিকা-সৌরভ
মা লতিকা ও ছেলে সৌরভ
| Edited By: | Updated on: May 25, 2023 | 1:54 PM
Share

নদিয়া: নারী ক্ষমতায়ন নিয়ে যতই চর্চা হোক, সংসার সামলে পড়াশোনা বা চাকরি আজও খুব একটা সহজসাধ্য নয়। সন্তানদের সামলে, বাড়ির সব কাজ করে একটা সময়ের পর নিজের ইচ্ছার কথাও ভুলে যেতে বসেন অনেকে। তবে ইচ্ছা আর অদম্য মনের জোর থাকলে যে কী সম্ভব, তা আরও একবার প্রমাণ করে দিলেন লতিকা। ছেলে সৌরভের সঙ্গে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হলেন শান্তিপুরের গৃহবধূ। উচ্চমাধ্যমিকে মায়ের প্রাপ্ত নম্বর ৩২৪ এবং ছেলে সৌরভের প্রাপ্ত নম্বর ২৮৪। ৪০ নম্বর বেশি পেয়ে মায়ের আক্ষেপ, ছেলে যদি আমার থেকে বেশি নম্বর পেত তাহলে ভাল হত।

নদিয়ার শান্তিপুর থানার নৃসিংহপুর নতুন সর্দারপাড়া এলাকার বাসিন্দা লতিকা মণ্ডল। তাঁর তিন সন্তান, দুই মেয়ে ও এক ছেলে। মেয়েরা কলেজ পড়ুয়া। লতিকার বয়স ৪০-এর কাছাকাছি। ছোট থেকেই পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল তাঁর। কিন্তু পরিস্থিতির চাপে সেটা সম্ভব হয়নি বেশি দিন। আর্থিক অনটন আর পারিবারিক পরিস্থিতির কারণে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেই পাট চোকাতে হয়। একরকম বাধ্য হয়েই পড়াশোনা ছাড়তে হয়েছিল বলে জানিয়েছেন লতিকা দেবী।

প্রায় ১৯ বছর আগে বিয়ে হয় লতিকার। তারপর তিন সন্তানকে নিয়ে সংসারেই আটকে যায় জীবন। বড় মেয়ে যখন কলেজের গণ্ডিতে পা দিয়েছে, তখন লতিকার নতুন করে পড়াশোনা করার ইচ্ছা হয়। এক প্রতিবেশীর সাহায্যে রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয়ে মাধ্যমিক স্তরে ভর্তি হন তিনি।

এরপর মাধ্যমিকে গণ্ডি পার হয়ে লতিকা ভর্তি হন নৃসিংহপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে। ছেলে সৌরভ ছিল কালনা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র। একই শ্রেণির পড়ুয়া মা ও ছেলে বাড়িতে একইসঙ্গে বসে পড়াশোনা করত। এত বয়সে ছেলের সঙ্গে লেখাপড়া! কটুক্তিও কম শুনতে হয়নি লতিকাকে। তার মধ্যেই সংসার সামলে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা।

বুধবার ফল প্রকাশের পরই লতিকা অনলাইনেই ফলাফল জানতে পারেন। তবে ছেলে বেশি নম্বর পেলেই খুশি হতেন লতিকা। তিনি বলেন, ‘আমরা দুজনেই পাস করেছি। আমি পেয়েছি ৩২৪ আর ছেলে ২৮৪। ছেলে আমার থেকে বেশি পেলেই হয়তো ভাল হত। আমি খুশি হতাম।’ তবে এখানেই থেমে যাওয়া নয়। আগামিদিনে আরও পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চান বলেই দাবি করেছেন লতিকা।

নিজে কম নম্বর পেয়েও মায়ের সাফল্যে যথেষ্ট খুশি সৌরভ। সে বলে, ‘মা এত ভাল ফলাফল করেছে, এতে আমার মোটেই খারাপ লাগছে না। আমরা একসঙ্গে পড়াশোনা করে আরও উচ্চশিক্ষিত হতে চাই।’