নদিয়া: তিন বছরের বিবাহিত জীবন। এর মধ্যে ফুটফুটে একটা মেয়েও হয়েছে। কিন্তু তাতে খুশি নন সরকারি চাকুরিজীবী স্বামী। স্ত্রীর অভিযোগ, আরও অনেক টাকা চাই বরের। সঙ্গে মেয়ের বাবা হিসাবে কিছুতেই নিজেকে মেনে নিতে পারেন না। তাই কথায় কথায় স্ত্রীর গায়ে হাত তোলেন, অকথ্য ভাষায় বলেন। অভিযোগ, বৃহস্পতিবার মেরে বাড়ি থেকে বেরও করে দেন ওই তরুণীকে। এরপরই শান্তিপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। তরুণীর কথায়, বিয়ের পর থেকে পণের টাকা চেয়ে চাপ দিতেন স্বামী। ইদানিং তা মাত্রা ছাড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার স্ত্রীকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন বলে অভিযোগ। এরপরই থানায় যান তিনি। যদিও অভিযুক্ত যুবকের তরফে কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
নদিয়ার শান্তিপুর থানা এলাকার এই ঘটনা। জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালে শান্তিপুর থানা এলাকার ওই যুবকের সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে করেন তরুণী। অভিযোগ, এর পর থেকেই পণের দাবিতে অত্যাচার শুরু করেন স্বামী ও শাশুড়ি। শারীরিক, মানসিক অত্যাচার রোজকার ঘটনা হয়ে যায়। অভিযোগ, বাড়ির বউকে একাধিকবার মেরে ফেলারও চেষ্টা করা হয়।
ওই তরুণী বলেন, অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বেশ কয়েকবার বাবার কাছে চলে যান। কিন্তু বাবা চেয়েছিলেন, মেয়ের সংসারটা যেন টিকে যায়। কিন্তু ঝামেলা বাড়তেই থাকে। ওই তরুণী বলেন, “তিন বছর হল বিয়ে হয়েছে। মেয়ে হয়েছে ২০২১ সালে। আমাকে পণের জন্য প্রথম থেকেই মারধর করে। আমি যখন মা হব, সে সময়ও মেরেছে। মেয়ে হয়েছে বলেও ওদের অনেক রাগ। বলে, ‘ছেলে আনতে পারিসনি, মেয়ে এনেছিস’! এরপর বাবার কাছ থেকে টাকা পয়সা নিতে আরও বেশি করে চাপ দিতে থাকে। আমার সব সোনার গয়না কেড়ে রেখে দিয়েছে। আমার শাশুড়ি এসবে উস্কানি দেয়।”
ওই তরুণীর বাবার কথায়, “টাকা পয়সার দাবিতে প্রায়ই মারধর করে। আমি মেয়েকে বলেছিলাম একটু মানিয়ে নিতে। সংসার তো করতেই হবে। এর আগেও অনেকবার মেরেছে। তাও আমরা থানায় অভিযোগ করিনি। মেয়েটা সংসারটা করুক এটুকু তো সব মা বাবাই চায়। কিন্তু এটাও তো সত্যি, কত অত্যাচার সহ্য করবে ও। দিনের পর দিন গায়ে হাত তোলে। বৃহস্পতিবার তো গলায় ওড়না দিয়ে টেনে ধরে জামাই। জামাইয়ের খালি টাকা চাই। আর নাতনিটা হওয়ার পর আরও বেড়েছে।” অভিযোগ, ওই তরুণীকে বের করে দিলেও মেয়েটিকে আটকে রেখেছে শ্বশুরবাড়ির লোক। মেয়েকে ফিরে পেতে মরিয়া মা। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে শান্তিপুর থানার পুলিশ।